বরিশালে ৭ দফা দাবিতে অপসোনিন ফার্মা শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ 

প্রকাশ | ১৭ আগস্ট ২০২৪, ১৪:১০

বরিশাল অফিস
বরিশালে অপসোনিন ফার্মার শ্রমিকদের সড়ক আবরোধ।

বরিশালে ৭ দফা দাবীতে অপসোনিন ফার্মা লিমিটেডের শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। মাসিক বেতন ফিক্সড করা ও বোনাসসহ ৭ দফা দাবিতে শনিবার (১৭ আগস্ট) সকাল ৬ টা থেকে বরিশাল নগরীর গ্যাস্টারবাইন এলাকায় দপদপিয়া ফেরিঘাট সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করে তারা। পরে স্থানীয় কাউন্সিলর, বাম রাজনৈতিক নেতা ও অপসোনিন কর্মকর্তাদের আশ্বাসে আন্দোলন প্রত্যাহার করে কারখানায় ফিরে যায় শ্রমিকরা। 

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, শনিবার সকাল হতেই অপসোনিন ফার্মাার শ্রমিকরা রাস্তায় নেমে অবরোধ করে প্লাকেটে লিখে নানা দাবী জানান তারা। এসময় তারা কর্মকর্তাদের সেচ্ছাচারিতাসহ নানা বিষয় নিয়ে শ্লোগান দিতে থাকেন। এক পর্যায় অপসোনিনেন একজন ম্যানেজার তাদের সাথে কথা বলতে আসলে তারা ভুয়া ভুয়া বলে তাকে তারিয়ে দেন। বিক্ষোভের এক পর্যায় তারা দপদপিয়া সেতুর টোল প্লাজা আটকে দিলে সেনাবাহিনীন সদস্যরা তাদের সেখান থেকে সড়িয়ে দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদেরকে শান্ত করার চেষ্টা করেন।  কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, আন্দোলনকারীদের সাথে কথা বলতে সেখানে যান স্থানীয় কাউন্সিলর ফিরোজ হোসেন, বাসদ এর জেলা সদস্য সচিব ডা. মনিষা চক্রবর্তী ও অপসোনিনের কয়েক কর্মকর্তা। তারা দাবী পুরনের আশ্বাস দিলে দুপুর ১ টার দিকে শ্রমিকরা সড়ক ছেড়ে কারখানায় ফিরে যায়। 

এ সময় আে ন্দালনকারী শ্রমিক সোহাগ ও রোমান বলেন, অপসোনিন ফার্মা লিমিটেডের শ্রমিকদের মাসে ৫/৬ হাজার টাকা বেতন দেয়া হয়। আমরা সবাই বাসা ভাড়া নিয়ে থাকি। নিজেদের খরচ মিটিয়ে এই অল্প টাকা দিয়ে কোন শ্রমিকদের পরিবার পরিজন সহ চলা সম্ভব নয়। বিগত আওয়ামী লীগ সরকার থাকা কালীন সময় আমরা স্বাধীন ভাবে কথা বলতে পারিনি। নানা রকম ভয়ভীতি দেখিয়ে আমাদের দমিয়ে রাখা হয়েছে।তাদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে কোন শ্রমিক কথা বললে তাকে কারখানা থেকে বের করে দেয়া হতো। আজকে অন্যায়ের প্রতিবাদ করার সময় হয়েছে। তাই আমরা শ্রমিকরা আমাদের ন্যায্য দাবী আদায়ে সড়কে নেমেছি। আমাদের দাবী না মানলে পরবর্তীতে কারখানা অবরোধের মতো কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।

শ্রমিকদের ৭ দফা দাবীর মধ্যে রয়েছে শ্রমিকদের মাসিক বেতন ফিক্সড করে ১২ হাজার টাকা দিতে হবে এবং সরকারী ছুটির জন্য কোনো বেতন কাটা যাবেনা। প্রতিদিন ৮ ঘন্টা বা সপ্তাহে ৪৮ ঘন্টার অধিক কাজ করলে (ওভারটাইম) প্রতি ঘন্টায় শ্রমিকরে দিগুণ মজুরি প্রদান করতে হবে। ১২ ঘন্টা কাজ করলে নাস্তার ব্যবস্থা করতে হবে। ৬ মাস পর কাজ অনুযায়ী চাকুরীতে পার্মানেন্ট করতে হবে। পুরানো শ্রমিকদের যারা অনেক বছর ধরে চাকরি করে তাদের নতুন ইনক্রিমেন্ট স্কেল বেতনের সাথে যোগ করতে হবে। প্রতিবছর ইনক্রিমেন্ট স্কেল ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা করতে হবে। বছরে ২ বার বেতনের ৫০% বোনাস দিতে হবে। কাজ চলাকালীন সময়ে কোনো দুর্ঘটনায় আহত শ্রমিকের ক্ষতিপূরণ ও চিকিৎসার দায়িত্ব কোম্পানির বহন করতে হবে। শ্রমিকের চাকরিতে নিয়োগের পর নিয়োগপত্র এবং পরিচয়পত্র প্রদান করতে হবে। আন্দোলনে জড়িত কোনো শ্রমিককে হয়রানি, ভোগান্তি ও হেনস্থা বা চাকরিচ্যুত করা যাবে না। যদি ভুল ত্রুটি হয় সংশোধনের জন্য সময় দিতে হবেএবং  শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার দিতে হবে।

যাযাদি/ এসএম