শ্রীমঙ্গলে নিজ দলের নেতার বিরুদ্ধে বিএনপি নেতার জিডি

প্রকাশ | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৪০

শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
ছবি: সংগৃহীত

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে মুঠোফোনে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ এনে নিজ দলের নেতা কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি ও মৌলভীবাজার জেলা যুবদলের সভাপতি জাকির হোসেন উজ্জলের নামে থানায় সাধারন ডায়রি করেছেন বাদশা মিয়া (কাজল) নামের এক বিএনপি নেতা। 

মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) শ্রীমঙ্গল থানায় তিনি এই সাধারন ডায়রি করেন। বাদশা মিয়া (কাজল) উপজেলার কালাপুর ইউনিয়নের সিরাজনগর এলাকার শেখ আব্দুল বারিক এর পুত্র ও শ্রীমঙ্গল উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি বলে জানা গেছে। 

জানা যায়, মার্কিন বহুজাতিক তেল গ্যাস কোম্পানি শেভরন বাংলাদেশ এর কালাপুর এলাকায় একটি কাজের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মীর আক্তার হোসেন লিমিটেডকে নিযুক্ত করেন। কাজ পাওয়ার পর গত ১৯ আগস্ট মীর আক্তার হোসেন লিমিটেড এর সাব ঠিকাদার হিসেবে বাদশা এন্টারপ্রাইজ নামের স্থানীয় একটি প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজের জন্য চুক্তি হয়। 

বাদশা এন্টারপ্রাইজ এর স্বত্তাধিকারী বাদশা মিয়া (কাজল) থানায় দাখিল করা ডায়রিতে উল্লেখ করেন, বিগত ১৯/০৮/২০২৪ ইং তারিখে মৌলভীবাজার গ্যাস ফিল্ড এমবি-৯ ও এমবি-৫ এর মীর আক্তার কোম্পানি লিমিটেডের সাথে সাব-ঠিকাদার হিসেবে বাদশা এন্টারপ্রাইজের কাজের চুক্তিনামায় স্বাক্ষর করি। উক্ত কাজ পাওয়ার পর বিগত ২২/০৮/২০২৪ ইং তারিখ বিকাল ৫:২০ ঘটিকায় হইতে ৫:২৫ ঘটিকার সময় আমার মোবাইল ফোনে মৌলভীবাজার জেলা যুবদলের সভাপতি জাকির হোসেন উজ্জ্বল আমাকে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করতে থাকেন। 

ডায়রিতে তিনি উল্লেখ করেন, জাকির হোসেন উজ্জ্বল আমাকে ধমকি দিয়ে কাজটি উনি করবেন বলে জানান। আমি উনাকে অনুরোধ করার জন্য কল করলে উনি আমার কল আর রিসিভ করেন নাই। পরবর্তীতে উনি আমার সাথে চুক্তিনামায় স্বাক্ষরকারী প্রতিষ্ঠান মীর আক্তার হোসেন লিমিটেড এর প্রজেক্ট ম্যানেজার (পিএম) মান্নান এর সাথে কথা বলেন, এবং আমাকে কাজ না দেওয়ার জন্য প্রস্তাব দেন। তিনি আরো উল্লেখ করেন, শ্রীমঙ্গল শহরের উনার নিজস্ব লোক দিয়ে আমাকে হুমকি ধমকি দেয়া হয়। জিডিতে তিনি উল্লেখ করেন, আমি বিষয়টি মৌলভীবাজার জেলা বিএনপি’র সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য এম নাসের রহমান ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আলহাজ্ব মোঃ মুজিবুর রহমান চৌধুরী (হাজী মুজিব)কে অবগত করি। 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মীর আক্তার হোসেন লিমিটেড এর পি.এম আব্দুল মান্নানের মুঠোফোনে বারবার কল দিলেও তিনি কল রিসিভ না করায় তাঁর বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি ও মৌলভীবাজার জেলা যুবদলের সভাপতি জাকির হোসেন উজ্জ্বল বলেন, আমার বিরুদ্ধে দায়ের করা  অভিযোগটি সম্পুর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। অভিযোগের বিষয়ে আমার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। কেউ হয়ত রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে আমার বিরুদ্ধে এটি করিয়েছে। 

তিনি আরো বলেন, এর আগে গত ৩১ আগস্ট জেলা বিএনপি’র সভাপতি নাসের রহমানের কাছে বাদশা এন্টারপ্রাইজ এর পেডে বাদশা মিয়া (কাজল) আমার বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন যে, কাজী এন্টারপ্রাইজ এর স্বত্বাধিকারী কমলগঞ্জের বিএনপি নেতা হারুন মিয়া ও তাহার সহযোগী কুতুব মিয়াকে নাকি আমি অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ ও হুমকি ধমকি প্রদান করেছি।

বিষয়টি জানার পর কাজী এন্টারপ্রাইজ এর স্বত্বাধিকারী মো. হারুন উর রশিদ বিএনপি’র মহাসচিব এর বরাবরে উল্লেখিত অভিযোগের বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবী করে এর জবাব দেন। এছাড়াও বাদশা মিয়া কাজলের দায়ের করা অভিযোগটি আমলে না নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। যুবদলের সভাপতি জাকির হোসেন উজ্জ্বল আমাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ ও হুমকি ধমকি প্রদান করেন বলে যে অভিযোগ করা হয়েছে সেটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।

মৌলভীবাজার জেলা বিএনপি’র সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য এম নাসের রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়েছি এবং সেন্ট্রালে পাঠিয়েছি।

জেলা বিএনপি’র সহ-সভাপতি মৌলভী আব্দুল ওয়ালী সিদ্দিকী বলেন, দলীয় কোন্দলের কারণে হয়ত কেউ তাকে ফাসানোর অপচেষ্টা করছে। সে দলের একজন ত্যাগী নেতা যে বিরোধী দলের আমলে অনেক মামলা ও হামলায় জর্জরিত হয়েছে।

শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ আলী মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, থানায় জিডি করা হয়েছে, বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি।


যাযাদি/ এসএম