নিজে কোনো দিন কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করেননি, ছিলেন না শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কোনো দায়িত্বে! এরপরও উপাচার্যের আস্থাভাজন হওয়ায় কোনো ধরনের বিজ্ঞাপন ছাড়াই নিয়োগ পেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার হিসেবে। পাশাপাশি অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন পরিচালক অর্থ ও হিসাবের। তিনি চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মেজর মো. আবদুল হাই (অব.)।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগ পেতে প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা পদে অন্তত ১৫ বছরের অভিজ্ঞতার প্রয়োজন, এরমধ্যে ন্যূনতম পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতার প্রয়োজন ডেপুটি রেজিস্টার অথবা সম মর্যাদার কোনো পদে। আর এই ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হয় একাডেমিক কিংবা শিক্ষা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক কাজের।
কিন্তু চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মেজর মো. আবদুল হইয়ের (অব.) এসব অভিজ্ঞতার কোনোটিই নেই। এরপরও ভিসির পূর্ব পরিচিত এবং আস্থাভাজন হওয়ায় তিনি বাগিয়ে নিয়েছেন এই পদ।
জানা যায়, কোনো ধরনের বিজ্ঞাপন ছাড়া এই পদে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে চুক্তিভিত্তিতে ছয় মাসের জন্য নিয়োগ দেয়া হয় তাকে। পরবর্তীতে দেয়া হয় পরিচালক অর্থ ও হিসাব পদের অতিরিক্ত দায়িত্ব। এরপর ধাপে ধাপে চুক্তির মেয়াদ বাড়িয়ে এখন পর্যন্ত এই পদে বহাল তিনি।
এই পদে স্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়ার জন্য ২০২২ সালের ডিসেম্বরে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হলেও সেই কার্যক্রম এখনো শেষ হয়নি। একই সঙ্গে প্রকাশিত বিজ্ঞাপনের পরিচালক, অর্থ ও হিসাব, পদটির নিয়োগ কার্যক্রমও সম্পন্ন করা হয়নি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. নাছিম আখতার ও রেজিস্ট্রার আবদুল হাইয়ের বিতর্কিত ভূমিকার জন্য তাদের পদত্যাগ দাবি করছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। এরপর থেকে আর চাঁদপুর যাননি কেউই। তবে পদত্যাগও করেননি কেউ। এ অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
তার এমন বিতর্কিত নিয়োগের বিষয়ে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরী কমিশনের সচিব ড. মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে ১৫ বছরের অভিজ্ঞতার প্রয়োজন। অভিজ্ঞতা ছাড়া এই পদে কেউ নিয়োগ পেতে পারেন না। অন্যদিকে পরিচালক, অর্থ ও হিসাব পদের দায়িত্ব পালন করতে হলে তার অবশ্যই অর্থ ও হিসাব সংশ্লিষ্ট কাজে অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এছাড়া অতিরিক্ত দায়িত্ব তিন থেকে ছয় মাস পালন করা যায়।
তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
বিষয়টি নিয়ে রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মেজর মেজর মো. আবদুল হাইকে (অব.) কল দেয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি।
যাযাদি/ এসএম