মাদারীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনের শিক্ষার্থীরা দুই গ্রæপে বিভক্ত হয়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন জন আহত হয়েছে। আহতরা মাদারীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
জানা গেছে, ৫ আগস্ট স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালানোর পর অন্তবর্তী সরকার গঠনের এক মাস পূর্তি উপলক্ষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি গ্রæপ রোববার বিকেলে শিল্পকলা একাডেমীতে কাওয়ালী সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন করে। এ সময় কিছু সাধারণ শিক্ষার্থী অতর্কিতভাবে অনুষ্ঠানস্থলে এসে হামলা করে। এতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী নেয়ামত উল্লাহ ও আশিকুল তামিম আশিক আহত হয়। এ ঘটনায় সদর থানায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। পরে সেনাবাহিনী ও সদর থানা পুলিশের উপস্থিতিতে নিয়ন্ত্রনে আনে।
এদিকে রোববারের ঘটনায় হামলার দায় অস্বীকার করে সোমবার বেলা ১১টার দিকে শহরের শকুনী লেকের পাড়ে প্রেসব্রিফিংয়ের আয়োজন করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা জানান, মাদারীপুরে কোন সমন্বয়ক নেই। মাদারীপুরে সবাই সাধারণ ছাত্র। থানায় দায়ের করা মামলার প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে শিক্ষার্থীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে মাদারীপুর সরকারি কলেজে গিয়ে শেষ করে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেয়া সাধারন শিক্ষার্থী রাফি জানান, মাদারীপুরে কোন সমন্বয়ক নেই। বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনে বিভিন্ন স্কুল, কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা অংশ গ্রহন করেছে। এখানে আমরা সবাই সমান। এখানে কয়েকজন আছে যারা নিজেদের সমন্বয়ক দাবি করে। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা কখনো এ সব ভুয়া সমন্বয়কদের মেনে নিব না। রোববার বিকেলের ঘটনায় আমার নামে সাংবাদিকদের কাছে মিথ্যা ও বানোয়াট বক্ত প্রদান করা হয়েছে। আমি তার প্রতিবাদ জানাই। শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে থানায় যে মিথ্যা মামলা দায়েরের প্রস্ততি চলছে তা প্রত্যাহারের দাবি জানাই।
কাওয়ালী সংগীতানুষ্ঠানে আয়োজক আব্দুর রহিম বলেন, যারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকে সম্পৃক্ত রয়েছে, তাদের নিয়েই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কিন্তু কয়েকজন নিজেদের ছাত্র আন্দোলনের কর্মী দাবী করে অনুষ্ঠানে আমাদের উপর হামলা করে। এতে আমাদের তিনজনকে গুরুতর আহত করে। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগের কর্মী রয়েছে। আমরা এদের বিচার দাবী করছি।মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মনিরুজ্জামান ফকির বলেন, এক একজন ছাত্র মানে একজন সৈনিক। আপনাদের চোখে যে অনিয়ম ধরা পড়ে আপনারা আমাদের পুলিশকে জানাবেন, আমরা ব্যবস্থা নিব। আমরা ছাত্রজনতা, পুলিশ, প্রশাসন সভাই ভাই ভাই। সবাই মিলে মাদারীপুরকে একটি শান্তিপূর্ন জেলা হিসেবে গড়তে চাই। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে এ জেলায় যারা অংশ গ্রহণ করেছেন সবাই মিলে মিশে থাকবেন। আমরা আপনাদের পাশে আছি।
যাযাদি/ এস