খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার থানাধিন আনন্দনগর গ্রামে গরুতে তরমুজ গাছ খাওয়াকে কেন্দ্র করে আনোয়ার শেখ হত্যা মামলায় মেহেদী হাসান মোল্লা (৩৯) কে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা একই সাথে অর্থদন্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টম্বর) দুপুরে খুলনার জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জুয়েল রানা এ রায় ঘোষণা করেছেন।
এ মামলার অপর ১২ আসামিকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে। খালাসপ্রাপ্তরা হলেন মিসকাত হাসান মোল্লা, মেজবা হাসান মোল্লা, মো. শফিকুল মোল্লা, মো. আইয়ুব আলী মোল্লা, মো. আলমগীর মোল্লা, মো. সোলায়মান মোল্লা, মো. ইমরান মোল্লা, মো. ইউনুস মোল্লা, মো. আনিচুর রহমান মোল্লা, মো. জাকির গাজী, হাসান গাজী ও মো. বোরহান উদ্দিন খান। রায় ঘোষণাকালে সকল আসামি আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। সকল আসামি খুলনা জেলার কয়রা থানাধিন আনন্দনগর গ্রামের বাসিন্দা।
আদালতের উচ্চমান বেঞ্চ সহকারী মো. ছায়েদুল হক শাহিন নথীর বরাত দিয়ে জানান, ২০২০ সালের ২৯ মার্চ বেলা ১২টার দিকে খুলনা জেলার কয়রা থানাধিন আনন্দনগর গ্রামের মো. মুক্তার শেখের গরু বোরহান খানের তরমুজ ক্ষেতে ডুকে গাছ খায়। এ নিয়ে মুক্তার শেখের ভাই ইকতার ও বোরহানের কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। বোরহান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হলে তাকে দেখতে যায় মুক্তার ও ইকতারসহ অন্যান্যরা।
এসময় বোরহান তার লোকজনকে বলে সবাইকে শেষ করে দে। একথা শুনে মুক্তার ও ইকতারসহ অন্যান্যরা হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়। বিকেল ৫টার দিকে মেহেদী হাসান মোল্লার নেতৃত্বে সকল আসামিরা দা, শাবল, রড ও লাঠিসহ ইকতার শেখের বাড়িতে প্রবেশ করে ভাংচুর চালায় এবং আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুন নেভাতে এগিয়ে আসলে আনোয়ার শেখের মাথায় লোহার রড দিয়ে বাড়ি মারে মেহেদী হাসান এবং অন্যরা মারপিট করে।
তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে এঘটনা নিয়ে বেশী বাড়াবাড়ি করলে প্রাশনাশের হুমকি দিয়ে আসামিরা চলে যায়। মারাত্মক আহত অবস্থায় আনোয়ার শেখকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ঢাকায় নিয়ে গেলে চিকিৎসাধিন অবস্থায় আনোয়ার শেখ মারা যায়।
এঘটনায় নিহত আনোয়ার শেখের ভাই মো. মুক্তার শেখ বাদি হয়ে দাকোপ থানায় মামলা দায়ের করেন যার নং-১। ২০২১ সালের ৩১ মে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জয়ন্ত কুমার হোড় আদালতে ১৩জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। আদালত ২৪ স্বাক্ষীর মধ্যে ১৩জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করেন। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের কৌশুলী ছিলেন আরিফ মাহমুদ লিটন। আসামী পক্ষে ছিলেন এড এম এম মুজিবুর রহমান।
যাযাদি/ এম