সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময়কৃষ্ণ ব্রহ্মচারীসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলা হয়েছে চট্টগ্রামে।
এই মামলার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিকালে চট্টগ্রাম নগরীর জামালখানের চেরাগী পাহাড় মোড়ে সমাবেশ ডেকেছে সংগঠনটি। তবে তার আগেই স্থানটি ঘিরে ফেলে পুলিশ, র্যাব ও সেনা সদস্যরা।
দুপুর ১টা থেকেই সংগঠনের নেতা-কর্মীরা সেখানে জড়ো হতে শুরু করেন। সাড়ে ৩টা পর্যন্ত সমাবেশ ঘিরে মূল সড়ক-অলিগলিতে জড়ো হন সবাই। বেলা ৩টা ৪০ মিনিটের কিছু সময় পর বিক্ষোভ শুরু করে সংগঠনটি।
রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে বুধবার রাতে কোতোয়ালি থানায় মামলাটি করেন ফিরোজ খান নামের এক ব্যক্তি। তিনি নগরীর ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক, চকবাজার মতি টায়ার ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি।
গত ২৫ অক্টোবর লালদীঘির মাঠে সনাতন জাগরণ মঞ্চের সমাবেশকে কেন্দ্র করে এই মামলাটি হয়েছে।
বাদীর অভিযোগ, সেদিন নিউ মার্কেট মোড়ে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার উপরে গেরুয়া রঙের আরেকটি পতাকা টানিয়ে জাতীয় পতাকার অবমাননা করা হয়, যা রাষ্ট্রদ্রোহের সামিল।
মামলায় মোট ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয়ের আরও ২০ জনকে আসামি করা হয়েছে। চট্টগ্রামের পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময়কৃষ্ণ ব্রহ্মচারী ছাড়াও ইসকন প্রবর্ত্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের অধ্যক্ষ লীলারাজ দাশ ব্রহ্মচারীর নাম রয়েছে আসামির তালিকায়।
দেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর হিন্দুসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের আক্রান্ত হওয়ার প্রেক্ষাপটে গত ২৫ অক্টোবরের ওই সমাবেশ থেকে ৮ দফা দাবি তুলে তার সমর্থনে দেশের বিভিন্ন বিভাগ ও জেলায় সমাবেশ এবং ঢাকামুখে লং মার্চের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল।
সেই সমাবেশে চিন্ময়কৃষ্ণ ব্রহ্মচারী বলেছিলেন, “এ বঙ্গের উত্তরাধিকার আমরা। আমরা এ ভূমির ভূমিপুত্র, উড়ে আসিনি। আমরা মোগল-ব্রিটিশ পর্তুগিজ নয়, আমরা এ ভূমির সন্তান। আমাদের উচ্ছেদের চেষ্টা করবেন না। কেউ যদি আমাদের উৎখাত করে শান্তিতে থাকার চেষ্টা করেন, তাহলে এ ভূমি সাম্প্রদায়িকতার অভয়ারণ্য হবে। এ ভূমি আফগানিস্তান, সিরিয়া হবে। বাংলাদেশের কোনও গণতান্ত্রিক শক্তি রাজনীতি করার সুযোগ পাবে না।”
সেই হুঁশিয়ারির পাঁচ দিন পরই পতাকা টানানোর ঘটনায় তাকে আসামি করে মামলা হলো।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, লালদীঘি মাঠের সমাবেশের দিন ২৫ অক্টোবর নিউ মার্কেটে জাতীয় পতাকার ওপর ‘সাম্প্রদায়িক ধর্মীয় গোষ্ঠী ইসকনের’ গেরুয়া রঙের ধর্মীয় পতাকা স্থাপন করে দেওয়া হয়, যা রাষ্ট্রের ‘অখণ্ডতাকে অস্বীকার করার শামিল’।
“জাতীয় পতাকার ওপরে ধর্মীয় পাতাকা উত্তোলন করে আসামিরা দেশের ভেতর অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে দেশকে অকার্যকর করার রাষ্ট্রদ্রোহমূলক কাজে লিপ্ত আছে।”
সেই মামলায় বুধবারই দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান চট্টগ্রাম নগরীর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (জনসংযোগ) কাজী মো. তারেক আজিজ। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন রাজেশ চৌধুরী ও হৃদয় দাশ।
যাযাদি/ এম