রোহিঙ্গা নাগরিক ছলিম। কিন্তু বাংলাদেশে ভোটার হওয়ার জন্য ঘটিয়েছেন অবিশ্বাস্য জালিয়াতি। মৃত এক বাংলাদেশি যুবকের নাম ব্যবহার করে ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র ও জন্মনিবন্ধন সনদ বানিয়েছে এই রোহিঙ্গা যুবক। শুধু তাই নয়; জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে বাংলাদেশি পাসপোর্ট, ড্রাইভিং ও ট্রেড লাইসেন্সও তৈরি করেছে সে। জানা যায়, টেকনাফ সদরের ৭ নং ওর্য়াড কচুবনিয়া এলাকার বাসিন্দা আব্দু সালামের ছেলে মৃত হামিদ হোসেনের নাম- ঠিকানা ব্যবহার করে ছলিম নামের ওই রোহিঙ্গা যুবক জালিয়াতির মাধ্যমে বাংলাদেশী জন্ম নিবন্ধন ও পরিচয় তৈরি করেছে।
শনিবার (২ নভেম্বর) সকালে টেকনাফ সদরের ওই কচুবনিয়া এলাকায় সরজমিনে গিয়ে এলাকাবাসী ও পরিবারের সাথে কথা বলে জানা যায়, হামিদ হোসন সাগরে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়ে প্রায় ৮ বছর আগে তার মৃত্যু হয়।
এদিকে এক রোহিঙ্গা যুবক তার জন্মনিবন্ধন ও হুবহু নাম ঠিকানা ব্যবহার করে স্থানীয় প্রভাবশালীদের যোগসাজশে ভূয়া এনআইডি করেছেন। ওই রোহিঙ্গা যুবকের নাম ছলিম। সে বর্তমানে ওই এনআইডি দিয়ে গাড়ি-বাড়ি ড্রাইভিং ও ট্রেড লাইসেন্স ইত্যাদি একাধিক দোকানের মালিক বনে গেছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে ওই রোহিঙ্গা যুবকের সহযোগীদের সনাক্ত করে প্রতারণামূলকভাবে এনআইডি তৈরি অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশী এনআইডি বালিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানান স্থানীয়রা।
এ প্রসঙ্গে মৃত হামিদ হোসেন মা সোনা খাতু বলেন, আমার ছেলে হামিদ হোসেন দীর্ঘ ৮ বছর আগে সাগরে মাছ শিকার করতে গিয়ে মারা গেছে। প্রতারণার মাধ্যমে আমার মৃত ছেলের নাম পরিচয় ব্যবহার করে যে রোহিঙ্গা ছেলেটি জাতীয় পরিচয়পত্র ও জন্মনিবন্ধন তৈরি করে করেছেন সে আমাদের কেউ নয়। আমরা চাই তার এসকল ভুয়া কাগজপত্র বাতিল হোক।
স্থানীয় প্রবীণ জমির আলী বলেন, মোটা টাকার বিনিময়ে মৃত হামিদ হোসেনের নাম-ঠিকানা দিয়ে সুচতুর রোহিঙ্গা ছলিম বাংলাদেশী নাগরিকের জাতীয় পরিচয় পত্র তৈরি করেছে। যেখানে বাংলাদেশি নাগরিক হয়ে আমাদেরই জাতীয় পরিচয়পত্র তেরি করতে হিমসিম খেতে হয়, সেখানে এ রোহিঙ্গা কিভাবে এনআইডি কার্ড তৈরি করল সে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
এব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত রোহিঙ্গা ছলিম জালিয়াতির বিষয়টি স্বীকার করেন এবং এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য প্রতিবেদককে অনুরোধ করেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য রশিদ আলম জানান, ‘ঘটনাটি সবেমাত্র শুনেছি। মৃত ব্যক্তিকে জীবিত বানিয়ে ভোটার হওয়া খুবই দুঃখজনক। আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ভুক্তভোগী পরিবারকে সহযোগিতা করব’
টেকনাফ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মেহেদী হাসান জানান- মৃত ব্যক্তিকে জীবিত বানিয়ে রোহিঙ্গা কিভাবে ভোটার হবে? ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ বা মামলা দায়ের করলে তার এনআইডি কার্ড বাতিল করা হবে।
যাযাদি/ এস