সন্তানসহ ট্রেনের নিচে ঝাঁপ, মায়ের পর মারা গেল শিশুও

প্রকাশ | ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭:১৫ | আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭:১৭

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
ছবি: যায়যায়দিন

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার সাতখামাইর গ্ৰামে কোলে ১১ মাস বয়সী এক শিশুকে নিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপিয়ে আত্মহত্যা করেছেন নাসরিন আক্তার নামের এক নারী। এই ঘটনায় আহত শিশু রওজাতুল জান্নাত রাফসা (১১ মাস)  হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।

সোমবার ( ৯ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে দশটার টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথের বরমী ইউনিয়নের সাতখামাইর আমতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

নিহত নাসরিন আক্তার (৩৫) ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার টাঙাব গ্রামের রাসেল আহমেদের স্ত্রী। রাসেল একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। স্বামীর চাকরির সুবাদে তিনি শ্রীপুরের মুলাইদ গ্রামে স্বামীর সাথে একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। 

স্থানীয় লোকজন ও নিহতের স্বজনেরা জানান, সাতখামাইর রেল স্টেশনের কিছুটা উত্তরে আমতলা নামক স্থানে সকাল থেকেই একটি গাছের নিচে বসে মোবাইলে কথা বলতেছিলেন নাসরিন। এসময় উচ্চ স্বরে কারো সাথে ঝগড়াঝাটি করতেছিলেন ওই নারী। সাড়ে দশটার পর ময়মনসিংহগামী একটি ট্রেন আসলে হঠাৎ শিশুকে নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন নাসরিন। চলন্ত ট্রেনের ধাক্কায় তারা দুজন রেললাইনের পাশে ছিটকে পড়েন। এতে ঘটনাস্থলেই নাসরিনের মৃত্যু হয়। মায়ের কোলে থাকা শিশু জান্নাত রাফসাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেলের দিকে মারা যান রওজাতুল জান্নাত রাফসা। পারিবারিক কলহের কারণে শিশুসহ ওই নারী আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন বলে ধারণা স্থানীয়দের।

ঝগড়াঝাটির কথা অস্বীকার করে ওই নারীর স্বামী রাসেল আহমেদ বলেন, সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখতে পাই আমার স্ত্রী ও সন্তান ঘরে নেই। আশপাশে খুঁজেও তাদের পাওয়া যায়নি। বিষয়টি বাড়ির মালিক কে জানাই। এরপর স্ত্রীর সাথে থাকা মোবাইলে কল দিয়ে তার সঙ্গে কথা বলতে চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে স্ত্রী ফোন রিসিভ করে জানান তিনি তার সন্তান নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে গেছেন। কোথায় গেছেন জানতে চাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফোন কেটে দিয়ে সেটি বন্ধ করে রাখেন।'

তিনি আরও বলেন,' পরে ফোনের মাধ্যমে ঘটনা জানতে পেরে আহত সন্তানকে নিয়ে হাসপাতালে যাই। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক জান্নাত রাফসাকে মৃত ঘোষণা করে।'

শ্রীপুর রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার সাইদুর রহমান যায়যায়দিনকে বলেন, 'সাতখামাইর রেলস্টেশনের পাশে একটি দুর্ঘটনায় কোলে বাচ্চাসহ এক মহিলা আহত হয়েছেন বলে শুনেছি। আমি রেলওয়ে পুলিশকে খবর দিয়েছি।'

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মন্ডল যায়যায়দিনকে বলেন,' খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। সেখানে লাশ পাওয়া যায়নি। যদিও ঘটনা রেলওয়ে পুলিশের। তারপরও অভিযোগ পেলে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।'

যাযাদি / এআর