ফকিরহাটে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে সূর্যমুখীর চাষ 

প্রকাশ | ০৩ মার্চ ২০২৫, ১১:৫৯

ফকিরহাট (বাগেরহাট) প্রতিনিধি
ছবি: যায়যায়দিন

বাগেরহাটের ফকিরহাটে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে সূর্যমুখীর চাষ। অধিক লাভজনক হওয়ায় কৃষকের মুখে হাঁসি ফুটেছে। আর স্বল্প খরচে অধিক লাভ হওয়ায় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে চাষবাদ। মাঠ জুড়ে হলুদ ফুলের সমারহ। কৃষকেরা ভাল ফলন আশা করছেন।

ফকিরহাট উপজেলা কৃষি বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৮টি ইউনিযনে ৪৫ হেক্টর জমিতে মোট ৩০০জন কৃষক চলতি মৌসুমে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন। এরমধ্যে প্রণোদনায় রয়েছে কয়েকজন কৃষক। তারা কৃষি বিভাগের প্রণোদনা পেয়ে এই চাষ শুরু করেছেন। 

মৌভোগ ব্লকের কৃষক তাজউদ্দিন বাবু জানান, তেল জাতীয় ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের আওতায় তিনি এ বছর প্রথমবারের মত বানিজ্যিকভাবে সূর্যমূখী ফুলের চাষ করেছেন। তিনি দইি বিঘা জমিতে সূর্যমূখী ফুলের চাষ করছেন। তিনি হাইসান-৩৬ জাতের সূর্যমূখী ফুলের চাষ করেছেন। ফলনও ভাল হয়েছে বলে জানান। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে বেশী লাভবান হবেন বলে জানান।  

কৃষক কালাম শেখ সহ অনেক কৃষক জানান, উপজেলা কৃষি বিভাগের সহযোগিতা ও পরামর্শে তারা হাইসান-৩৬ জাতের সূর্যমূখী ফুলের চাষ করেছেন। কৃষি কর্মকর্তারা সব সময় খোজ খবর নিয়ে থাকেন। 

কৃষক আজহার শেখ তিনি এবার ৫০শতক জমিতে হাইসান-৩৬ জাতের সূর্যমূখী ফুলের চাষ করেছেন। এছাড়া হাইসান-৩৩, হাইসান-৩৬ ও হাইসান-৩ হাইসান-জাতের সূর্যমূখী ফুলের চাষ করেছেন কৃষকরা।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বিপ্লব দাস তেল জাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের আওতায় এসব কৃষকদের প্রশিক্ষণ সহ বীজ, সার দেওয়া সহ সব ধরনের সহযোগিতা করা হয়েছে। প্রায় প্রতিটি জমিতে উৎপাদন ভাল হয়েছে। এটা অন্য ফসলের চেয়ে স্বল্প জীবন কাল ও লাভ জনক। সে কারণেই সূর্যমুখী ফুল চাষ করে কৃষকেরা লাভবান হবেন। উৎপাদিত সূর্যমুখী বীজ স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের চাহিদা পুরন করা যাবে বলে আশা করছেন কর্মকর্তারা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শেখ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ফকিরহাট উপজেলায় প্রায় সব ধরণের ফসল উৎপন্ন হয়ে থাকে। তেল জাতীয় ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের আওতায় কৃষকরা অধিক পুষ্টিগুন সম্পন্ন সূর্যমুখী ফুলের চাষ করছেন। সূর্যমুখীর তেল অন্যান্য সাধারণ তেলের তুলনায় একটু আলাদা। রান্নার জন্য সয়াবিন তেলের চেয়ে সূর্যমুখী তেল অনেক বেশী পুষ্টি সমৃদ্ধ। সূর্যমুখীর ফুল শুধু তেল উৎপাদনের জন্যই চাষ হয় না। অনেকে বাড়ির আঙ্গিনায় ও অফিসের সামনে সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য সূর্যমুখী ফুল চাষ করে থাকেন অনেকে। সূর্যমুখী তেল আমাদের শরীরের হাড় সুস্থ ও মজবুত করে। 

তিনি আরো বলেন, আমন ধান কাটার পরে এসব জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করা হয়। বিশেষ করে পতিত জমিতে কৃষকদের এর চাষ করার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়। অত্র অঞ্চলে সরিষা চাষের থেকে সূর্যমুখী আবাদ ভাল হয়। প্রতি বিঘা জমিতে আট থেকে নয় মন পর্যন্ত এর ফলন হয়ে থাকে। সূর্যমুখী ফুলের তেলের গুনগত মান ভাল। কৃষকদের এবার উচ্চ ফলনশীল জাতের বীজ প্রদান করা হয়েছে। কৃষি বিভাগ এসব কৃষকদের সব ধরনের পরামর্শসহ সহযোগিতা করে থাকেন বলে জানান এ কর্মকর্তা ।

যাযাদি/ এসএম