কুমিরকে ভ্যানে চড়িয়ে থানায় নিল এলাকাবাসি

প্রকাশ | ১৩ মার্চ ২০২৫, ১৬:০১

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ছবি: যায়যায়দিন

ঝিনাইদহের শৈলকুপার গড়াই নদী পাড়ের লোকালয় থেকে ধরা পড়েছে একটি কুমির। বুধবার (১২ মার্চ) রাত ৯টার দিকে উপজেলার হাকিমপুর ইউনিয়নের গড়াই নদী পাড়ের সুবিদ্দা গোবিন্দপুর গ্রামের খিলাফত মেম্বারের বাড়িতে উঠে আসছিল। এসময় গ্রামবাসী দেখতে পেয়ে মাছ ধরা জাল দিয়ে কুমিরটিকে ধরে ফেলে। বুধবার গভীর রাতেই খুলনা বন বিভাগের কর্মকর্তা কুমিরটি উদ্ধার করে নিয়ে গেছে।

শিমুল খান নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, গড়াই নদী থেকে প্রায় ৪০০ ফুট উপরে ৬ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার খিলাফত মিয়ার বাড়ির দিকে যাচ্ছিল। এ সময় পাতার উপর দিয়ে যাওয়ার অবস্থায় খড়-মড় আওয়াজ শুনে এলাকাবাসী কুমিরটিকে দেখতে পায়। এরপর মাছ ধরা জাল দিয়ে কুমিরটিকে ধরে ফেলে। পরে আটক কুমিরটি নিয়ে আনন্দ মিছিল করে এলাকাবাসী।

তিনি আরো জানান, দীর্ঘ প্রায় দুই মাস ধরে আমরা গড়াই নদী পাড়ের মানুষ কুমির আতঙ্কে ছিলাম। কুমিরটা প্রায় ৮ থেকে ১০ ফুট লম্বা হবে। তবে আরও কমপক্ষে দুইটা কুমির  রয়েছে বলে যোগ করেন। 

শৈলকুপা বন বিভাগের কর্মকর্তা মোকলেসুর রহমান জানান, কুমিরটি এলাকাবাসী ধরে প্রথমে খুলমবাড়িয়া স্কুল মাঠে রাখে। তারপর ভ্যানে করে শৈলকুপা থানায় নিয়ে আসে। আমরা কুমিরটিকে জাল দিয়ে ও দড়ি দিয়ে বাধা অবস্থায় পায়। খবর পেয়ে বুধবার গভীর রাতেই খুলনা বন বিভাগের কর্মকর্তারা এসে কুমিরটি নিয়ে গেছে।

ঝিনাইদহ বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাকির হোসেন জানান, খবর পেয়েই কুমিরটিকে উদ্ধারের জন্য সেখানে লোক পাঠিয়ে কুমিরটি উদ্ধার করি এবং বুধবার গভীর রাতেই খুলনা বন বিভাগের কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। 

শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুম খান জানান, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ও কুমিরটিকে জনতার হাত থেকে জীবিত উদ্ধার করতে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছিলো। তাই আমরা কুমিরটি জীবিত উদ্ধার করে থানাতে রাখি। যা পরে খুলনা বন বিভাগের কর্মকর্তারা এসে নিয়ে যায়।

প্রসঙ্গত, গত কয়েক মাস আগে থেকে ঝিনাইদহের শৈলকুপার গড়াই নদীতে ছোট বড় ৪ টি কুমির ভেসে বেড়াতে দেখা যাচ্ছিল। কুমিরগুলো স্থানীয়দের নজরে আসার পর চরম আতঙ্ক দেখা দেয়। নদীপাড়ের বাসিন্দা ও জেলেরা সাবধানে চলাচল শুরু করে। বিশেষ করে নদীপাড়ের গ্রাম খুলুমবাড়িয়া, মাদলা শাহবাড়িয়া, গাংকুলা, চরপাড়া নলখোলাসহ এলাকার মানুষের মধ্যে চরম আতঙ্ক দেখা দেয়। দৈনন্দিন কাজে নদীর পানি ব্যবহার করলেও এখন কুমির আতংকে নিজেদের গোসল, গরু-ছাগলের গোসল করাতে ভয় পাচ্ছিলেন। কুমিরগুলো দেখতে প্রতিদিন নদী পাড়ে ভীড় করছিল স্কুল শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন এলাকা থেকে নারী পুরুষ।

যাযাদি/ এমএস