সরকারি চালের বস্তায় এখনও শেখ হাসিনার নাম
প্রকাশ | ১৭ মার্চ ২০২৫, ২০:৩৪

সারাদেশে বিতরণ করা হচ্ছে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি ভিজিএফ’র চাল। প্রত্যেকটি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে অসহায় দরিদ্র মানুষদের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে সরকারি সহায়তার চাল।
কিন্তু সারাদেশে বিতরণকৃত এসব চালের বস্তার অধিকাংশতেই এখনও আগের মতোই লেখা রয়েছে দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যাওয়া বিগত সরকার প্রধান শেখ হাসিনার নাম।
গেল বছরের ৫ আগষ্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের মধ্যদিয়ে ভারতে চলে যান তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। শুধু তিনি নন, তার দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের বেশিরভাগই এখন অবস্থান করছেন ভারতে। আর জেলা উপজেলার নেতারাও চলে গেছেন আত্মগোপনে। ভেঙে পড়েছে দলটির সাংগঠনিক কাঠামো।
শেখ হাসিনা চলে যাওয়ার মধ্যদিয়ে রাজনীতি থেকে ছিঁটকে পড়েছে আওয়ামী লীগ, আর অর্ন্তবর্তীকালীণ সরকারের মাধ্যমে ৮ মাসে দেশের বিভিন্ন খাতে লেগেছে সংস্কারের ছোঁয়া।
অনেকেই যখন আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার নাম ভুলতে শুরু করেছে ঠিক তখনই খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির বস্তায় লেখা শেখ হাসিনার নাম আবারও ঘুরে ফিরে যাচ্ছে সুবিধাভোগীদের সামনে।
আগের মতো এখনও সরকারি চালের বস্তায় বড় বড় অক্ষরে লেখা ‘শেখ হাসিনার বাংলাদেশ, ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ’। দেশের বিভিন্ন সেক্টরে আমুল পরিবর্তনের জন্য অর্ন্তবর্তীকালীণ সরকারের সংস্কার কাজ চললেও খাদ্য অধিদপ্তরের কার্যক্রমে পরিবর্তন বা সংস্কারের ছিটেফোঁটাও পড়েনি।
সরকারি ভিজিএফ’র চাল বিতরণের জন্য গুদাম থেকে ইউনিয়ন পরিষদ গুলোতে পাঠানো প্রায় সবগুলো চালের বস্তার ওপরেই চোখে পড়ছে লেখাটি। অনেক যায়গায় এ নিয়ে সৃষ্ট বিব্রতকর পরিস্থিতি সামাল দিতে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বার বা গ্রামপুলিশদের কালো কালি দিয়ে চালের বস্তা থেকে মুছে দিতে দেখা গেছে শেখ হাসিনার নাম। ফলে বস্তার ওপরের লেখা দাঁড়িয়েছে,----বাংলাদেশ, ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ।
সোমবার (১৭ মার্চ) রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলা খাদ্য গুদাম থেকে বের হওয়া সরকারি খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির প্রত্যেকটি চালের বস্তার ওপরে লেখাটি দেখা যায়।
পরে কালি দিয়ে শেখ হাসিনার নাম মুছে দিয়ে চালগুলো বিতরণ করে স্ব-স্ব ইউনিয়ন পরিষদ।
এ ব্যাপারে খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) মো. মুরাদ আলী বলেন, প্রতিটি বস্তায় লেখা স্লোগান থেকে 'শেখ হাসিনা' শব্দটি কালো কালি দিয়ে মুছে তারপর যানবাহনে তুলে দিচ্ছি। বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক দেখা দেয়ায় উর্দ্ধত্তন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে
শেখ হাসিনা লেখাটি মুছে দেয়া হচ্ছে’।
সেসময় বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সচিব ও ডিলারদের সেখানে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়।
এ প্রসঙ্গে গোয়ালন্দ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নিয়াজ মাহমুদ জানান, গত শনিবার ও রোববার দুইদিন খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির আওতায় কার্ডধারী দুস্থদের মধ্যে ১৫ টাকা কেজি দরের ১৮২.৭৬০ মেট্রিক টন এবং জেলেদের মৎস্য ভিজিএফের ১০১.৬০০ টন চাল চেয়ারম্যান, প্রশাসক ও ডিলারদের ডিও লেটারের অনুকূলে বিতরণ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার থেকে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ১২৩. ৫৬০ টন সাধারণ ভিজিএফর (ত্রাণ) চাল।
যাযাদি/ এমএস