সারিয়াকান্দিতে অফিস না করেই বেতন নেন সরকারী চাকুরীজীবি
প্রকাশ | ২৪ মার্চ ২০২৫, ১৫:৩৭

বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলা প্রানী সম্পদ দপ্তর ও ভেটেনারী হাসপাতালের অফিস সহায়ক আব্দুল আউয়াল মাসে অফিস করেন এক থেকে দুই দিন সারা মাস থাকেন অনুপস্থিত। এদিকে অনুপস্থিত থাকলেও বেতন তোলার দিন ঠিকই হাজিরা খাতায় মাসের সম্পূর্ণ সই করে বেতন তুলে নিচ্ছেন। এসব চলছে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রধানের সাথে যোগ-সাজছে বছরের পর বছর ধরে।
রোববার (২৩ মার্চ) সকাল সাড়ে ৯ টা থেকে ১২ পর্যন্ত প্রাণী সম্পদ ও ভেটোনারী হাসপাতালের অফিস কার্যালয়ে সরেজমিনে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। অফিস প্রধান প্রাণী সম্পদ অফিসার তখনও অফিসে আসেনি। সে আসে প্রায় অফিস টাইম পার হওয়ার ২ ঘন্টা পর। অফিস সহায়ক আউয়ালের অনুপস্তিতে হাছেন নামের এক জন কাজ করেন। সে অফিসের একজন অস্হায়ী নৈশ প্রহরী রাতে নৈশ প্রহরীর কাজ করে ও দিনে অফিস সহায়কের কাজ করে।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সুএে জানাযায়, আব্দুল আউয়াল ২০১৩ সালে উপজেলা প্রাণী সম্পদ ও ভেটোনারী হাসপাতালে অফিস সহায়ক হিসেবে যোগদান করে।যোগদানের পর থেকেই সে অফিসে বিভিন্ন অজুহাতে অনুপস্থিত থাকে। সব অফিসার কে ফ্যাসিবাদী সরকার আমলের কোন এক মন্ত্রীর আত্মীয় বলে তটস্থ করে রাখতো। তার ভয়ে অফিসে কেউ কথা বলতে সাহস পেতো না। সব অফিসার তাকে সমীহ করে চলতো।
অফিস সংশ্লিষ্ট একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অফিস সহায়ক আউয়ালতো সবসময় বেতন তোলার আগে আসে বেতন তুলে নিয়ে চলে যায়।আওয়ামী সরকারের কোন মন্ত্রীর আত্মীয় বলে পরিচয় দিতো। তখনতো ভয়ে কেউ কোন কথা বলতে পারনি। কিন্তু ৫ আগষ্টের পরের তার কোন পরিবর্তন আসেনি সে কাউকে কোন প্রকার পাওা দেয়না।
অস্হায়ী কর্মচারী হাছেনের সাথে কথা বললে সে বলেন,আমি রাতে পাহারা দেয় দিনে অফিসের সকল কাজ করি। একজন পিয়নের যত কাজ থাকে সেগুলো আরকি। এতে অফিস থেকে আমাকে ১২ শ টাকা মাসে দেয়। অফিস সহায়ক আউয়াল সম্পর্কে জানতে চাইলে বলে হ আউয়াল ভাই ঢাকা থেকে ভ্যাকসিন নিয়ে আসে। আর মাসে আমাকে ৫ শ টাকা করে দেয় তার কাজ করে দেওয়ার জন্য।
প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তার কাছে হাজিরা খাতা দেখতে চাইলে সে বলে ওটাতো এখানে নাই। আর আমি নিজেও আজ দেরিতে আসছি এখনও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করিনী। আচ্ছা এনে দিচ্ছি বলে অনেক সময় পার হওয়ার পর উনি বলেন হাজিরা খাতাতো অফিসে নাই। ওটা বাঁধাই করতে দেওয়া হয়েছে অফিসের কেউ আজ স্বাক্ষর করেনি। সংবাদটি সংগ্রহ করতে গেলে প্রতিনিধিকে ম্যানেজ করতে চেষ্টা করে এক কর্মকর্তা।
অফিস সহায়ক আউয়ালকে ফোনে অফিসে অনুপস্থিত থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে সে বলে আপনার সাথে পরে যোগাযোগ করবো।সারাদিন অপেক্ষা করার পরে আবার তার সাথে যোগাযোগের জন্য ফোন দিলে ফোন রিসিভ না করে কেটে দেন।
সারিয়াকান্দি উপজেলায় প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা মীর কাওসার আলী যোগদান করেন গত বছরের (১৭ সেপ্টেম্বর)। এর আগের প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তাদের কেউ বিভিন্নভাবে ম্যানেজ করে করে আউয়াল অফিসে আসত না।
সারিয়াকান্দি উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মীর কাওসার হোসেন বলেন,
অফিসের অনেক চিঠি পএ ভ্যাকসিন আনতে অফিস সহায়ক আউয়াল বাহিরে থাকে। এছাড়া সে অনেক ছুটি নেয় ও অনেক সময় ছুটি না নিয়েও অফিসে আসেনা। আমি যোগদানের পর থেকে তাকে অনেক বার ফোনে বলেছি অফিস নিয়মিত করতে। এখন অফিস নিয়মিত না করলে লিখিত জবাব চাওয়া হবে তার কাছে থেকে।
বগুড়া জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ড.মো.আনিসুর রহমান বলেন, সরকারী চাকরীর কর্মচারীদের বিধি মতে বছরে ২০ দিনের বেশি ছুটি নেওয়ার কোন সুযোগ নেই। এই বিষয়টি উপজেলার কর্মকর্তার দেখার কথা। ফ্যাসিষ্ট সরকারের সময়ের মতো এখন এসব করার কোন সুযোগ নেই। আমি খোজ নিয়ে ব্যবস্হা নিবো।
যাযাদি/ এমএস