পাহাড়ে চার দিনে অপহরণ ৪, চলছে বন্ধুক যুদ্ধ: দুই উপদেষ্টাসহ বিজিবির মহাপরিচালক সাজেকে
প্রকাশ | ০৩ এপ্রিল ২০২৫, ১৭:৫৬

হারুবিল ইউপিডিএফ এর কেন্দ্রীয় নেতার ভাই, ধুধুকছড়ায় গত ২ মার্চ ইউপিডিএফ নেতার পিতা এবং জেলা মাটিরাঙার তাইন্দং ইউপিডিএফ কর্তৃক জেএসএস সোর্স সন্দেহে দুই গ্রামবাসীসহ অন্তত চারজনকে অপহরণ করেছে এই দুই সশস্ত্র গ্রুপ।
এছাড়া আজ বৃহস্পতিবার বাঘাইছড়িতে বন্ধুক যুদ্ধে পাহাড়ের নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অবঃ) পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা, মহাপরিচালক বিজিবি ও মহাপরিচালক ফায়ার সার্ভিস সাজেক পরিদর্শন করেছেন।
অনুসন্ধানে জানাযায়, খাগড়াছড়ির পানছড়িতে ইউপিডিএফ (প্রসীত মূল) সন্ত্রাসী গ্রুপের কেন্দ্রীয় নেতা নূতন কুমার চাকমার ছোট ভাই উত্তম কুমার চাকমাকে (৫৫) অস্ত্রের মুখে অপহরণ করেছে জেএসএস (সন্তু গ্রুপ) সন্ত্রাসীরা।
একই দিনে রাঙামাটির বাঘাইছড়ির উত্তর বঙ্গলতলী এলাকায় ইউপিডিএফ ও জেএসএসের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে।
আজ বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল/২৫) সকাল ৭টার দিকে পানছড়ির ধুধুকছড়া বাজার থেকে তাকে অপহরণ করা হয়। অপহৃত উত্তম কুমার চাকমা, পিতা: করপ চন্দ্র, হারুবিল পানছড়ির বাসিন্দা এবং ধুধুকছড়া বাজারে তার একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিনের মতো তিনি আজ সকালেও দোকানে যান। সে সময় জেএসএস সন্তু গ্রুপের সন্ত্রাসী বিপ্লব চাকমা ও তুংলো চাকমার নেতৃত্বে ২০-২৫ জনের একটি সশস্ত্র দল সেখানে হামলা চালিয়ে তাকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। অপহরণের পর তাকে পানছড়ির রূপসেন পাড়ার দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
অপহৃতের ভাই নূতন কুমার চাকমা ইউপিডিএফ এর কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি, যিনি ২০১৮ সালে খাগড়াছড়ি সংসদীয় আসন থেকে ইউপিডিএফ সমর্থন নিয়ে নির্বাচন করেছিলেন।
এদিকে, একই দিনে সকালে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার উত্তর বঙ্গলতলী এলাকায় ইউপিডিএফ ও জেএসএসের মধ্যে ভয়াবহ গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের তথ্য পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় সূত্র জানায়, এলাকা অত্যন্ত দুর্গম হওয়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এখনো ঘটনাস্থলে যায়নি। ফলে সংঘর্ষের প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটির বিভিন্ন এলাকায় ইউপিডিএফ ও জেএসএসের মধ্যে সংঘাত বেড়েছে। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে একের পর এক হত্যা, অপহরণ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটছে।
গত চার দিনে মাটিরাঙার তাইন্দং ইউপিডিএফ কর্তৃক জেএসএস সোর্স সন্দেহে দুই গ্রামবাসী অপহরণের শিকার হয় এবং পানছড়ির ধুধুকছড়ায় গত দুই মার্চ ইউপিডিএফ নেতার পিতা এবং হারুবিল ইউপিডিএফ কেন্দ্রীয় নেতার ভাইসহ অন্তত চারজনকে অপহরণ করেছে এই দুই সশস্ত্র গ্রুপ। এছাড়া, আজকের বাঘাইছড়ির সংঘর্ষ পাহাড়ের নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
এদিকে, অপহরণের ঘটনায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। চার অপহরণের ঘটনায় পাহাড়ে অস্থিরতা বিরাজ করছে। সামাজিক উৎসব বৈসাবি-র আগমুহূর্তে পার্বত্য চট্টগ্রাম ক্রমশ অশান্ত হয়ে উঠছে।
উল্লেখ যে, উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অবঃ) পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা, মহাপরিচালক বিজিবি ও মহাপরিচালক ফায়ার সার্ভিস সাজেক পরিদর্শন করেছেন।
যাযাদি/ এমএস