উপযুক্ত গরুর অভাবে ফুলবাড়ীতে ‘গরু বিতরণ’ স্থগিত

প্রকাশ | ১০ এপ্রিল ২০২৫, ১৯:২৪

ফুলবাড়ী দিনাজপুর প্রতিনিধি
ছবি: যায়যায়দিন

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে উপযুক্ত গরু সরবরাহ না করায় জনতার বাধার মুখে স্থগীত হয়েছে উপজেলায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ক্ষুদ্র নৃ‌ গোষ্ঠীর মানুষদের মাঝে বকনা গরু বিতরণের কার্যক্রম । বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বেলা ১২টায় উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার কার্যলয়ে এ ঘটনা ঘটে।

জানাগেছে প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের আওতায় সমতলে বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্টিদের মাঝে বকনা গরু বিতরণ প্রকল্পে ১০০ কেজি ওজনের গরু সরবরাহের কথা উল্লেখ থাকলেও ৬০ থেকে ৮০ কেজি ওজনের তুলুনা মুলক ছোট ও কম বয়সী গরু সরবরাহ করতে চাইলে স্থানীয় জনতা বাধা দেয়, এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইসাহাক আলী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে গরুর ওজন পরিক্ষা করে, সটিক ওজনের গরু না পাওয়ায়, গরু  বিতরণ কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়।

এদিকে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগসাজজ করে ছোট ও কম বয়সী গরু সরবরাহের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার সারোয়ার হোসেনর বিরুদ্ধে, তবে সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি, তিনি বলেছেন নির্দেশনা অনুযায়ী গরু সরবরাহ না পাওয়ায় বিতরণ কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।
বিভিন্ন সুত্রে জানা যায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কর্তৃক উত্তরাঞ্চলের সমতলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষদের জীবনমান উন্নয়নে বগনা গরু বিতরন প্রকল্পের আওতায় ফুলবাড়ী উপজেলায় ৭০টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্টি পরিবারের জন্য ৭০টি গরু বিতরনের বরাদ্ধ হয়, কিন্তু গরু বিতরনে জন্য ১০০ কেজি ওজনের গরু সরবরাহে কথা থাকলেও, গরু সরবরাহকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জেনটেক ইন্টারন্যাশনাল ৬০-৮০ কেজি ওজনের, তুলুনা মুলক কম বয়সী গরু সরবরা করে, বিষয়টি স্থানীয় জনতাসহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সাংবাদিকদের দৃষ্টি গেছর হলে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলে সেখানে জনারোষের সৃষ্টি হয়।

এরপর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ইসাহাক আলীর নির্দেশে গরু বিতরণ কার্যক্রম স্থগিত করে।

জানা গেছে জেনটেক ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানি বিগত সরকারের সময় এই প্রকল্পের গরু সরবরাহের দায়িত্ব পায়, প্রকল্পটির ম্যায়াদ আগামী ২০২৬ সাল পর্যন্ত রয়েছে এ কারণে এখন পর্যন্ত এই প্রকল্পের গরু সাপ্লাইয়ের দায়িত্বে রয়েছেন ওই কোম্পানিটির হাতে।
গরু নিতে আসা সুফলভোগী এমানয়েল টুডু, রিপন মুরমু,পুতুল মার্ডি ও স্বপ্না মুরমু বলেন, আমরা গরু নিতে এসে সুনি যেসব গরু আমাদের দেওয়ার কথা, সেগুলোর ওজন কম, গরু গুলো দেখতেও তেমন ভালো মনে হচ্ছে না। আমরা এমন গরু নিতে চাইনা।

এদিকে ১০০ কেজি ওজনের স্থলে  ৬০ থেকে ৮০ কেজি ওজনের গরু সরবরাহ করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন এলাকাবাসী। তরা বলেন গরু সরবরাহের নামে পুকুর চুরির ঘটনা ঘটছে। ফুলবাড়ী পৌর বিএনপির সভাপতি হাজি আবুল বাশার বলেন গরু বিতরণ কার্যক্রমে পুকুর চুরির পরিকল্পনা করা হঢ, প্রতিটি গরুর ওজন ৩০ থেকে ৪০ কেজি কম, এটা পুকুর চুরির কোন অংশে কম নয়।


গরু সরবরাহকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ওমর ফারুক বলেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নির্দেশ অনুযায়ী গরু সরবরাহ করা হয়েছে।

বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার মোঃ আব্দুর রহিম বললে, টেন্ডার অনুযায়ী গরু সরবরাহ করেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এখানে আমাদের কিছু করনিয় থাকেনা। ঠিকাদার যেসব গরু সরবারাহ করেছে সে গুলো যাচাই করে উপযুক্ত না হওয়ায় তা বিরতণ কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। বিতরণের দিনে কেনো যাচাই করা হচ্ছে, এর পূর্বে কেনা করা হয়নি ? এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, একদিন আগে গরু গুলো আনলে সেগুলোর খাবারের ব্যবস্থা নেই তাই আজকে করা হচ্ছে বলে জানান।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইসাহাক আলী বলেন প্রকল্পের দেয়া ১০০ কেজি ওজনের গরু সরবরাহ না থাকায় বিতরণ কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে, চাহিদা অনুযায়ী গরু সরবরাহ করা হলে বিতরণ করা হবে।

যাযাদি/ এমএস