২০ লাখ টাকা চাঁদা চাইলেন বিএনপি নেতা, ব্যবসায়ী দিলেন মামলা

ছবি: যায়যায়দিন

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ স্থানীয় বিএনপি'র নেতা কানন শিকদারসহ ৬ জনের নাম উল্লেখপূর্বক মামলা দায়ের করেছে এক ব্যবসায়ী। অভিযুক্ত কানন শিকদার শুভাঢ্যা ১নং ইউনিট বিএনপি'র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) কেরানীগঞ্জ গার্মেন্টস পল্লীর ব্যবসায়ী মো. সজিব বাদী হয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলাটি (মামলা নং-৪০) দায়ের করে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, কেরানীগঞ্জ গার্মেন্টস পল্লীর নুরুন্নাহার মার্কেটের আন্ডারগ্রাউন্ডের প্যান্ট ক্লাব নামক একটি তৈরি পোশাকের দোকানের স্বত্বাধিকারী মো. সজিব নতুন আরেকটি দোকান নিয়ে ডেকোরেশন করার সময় কানন শিকদার তার কাছে ২০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে।

বিষয়টি নিয়ে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী সজীব কেরানীগঞ্জ গার্মেন্টস ব্যবসায়ী দোকান মালিক সমবায় সমিতির নিকট অভিযোগ করলে কানন শিকদার ক্ষিপ্ত হয়ে দোকান ঘরটি দখল করে নিয়ে এবার ১ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে সাত দিনের সময় বেঁধে দিয়ে আসে। পরবর্তীতে চাঁদা না পেয়ে গত ১৭ই ফেব্রুয়ারি কানন শিকদার ও তার সহযোগী লিখন, আবু বক্কর, ফয়সাল, আলাউদ্দিন সহ ২০-২৫ জনের একটি বাহিনী নিয়ে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী সজীব ও তার বড় ভাই রাজীবকে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দোকানে ঢুকে মারধর করে।

এ সময় রাজিব ও সজিব দুই ভাইকে মারধর করে তাদের গলায় থাকা দুটি স্বর্ণের চেইন একটি ওয়ান প্লাস মোবাইল ও ক্যাশ বাক্সে থাকা দেড় লক্ষ নগদ টাকা নিয়ে যায়। হামলার ঘটনার একটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ তাৎক্ষণিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। হামলার সময় কিল-ঘুষিতে সজীবের সামনের দুটি দাঁত ভেঙে যায় ও তার বড় ভাই রাজিবকে হকিস্টিক ও রড দিয়ে পিটিয়ে মারাত্মক আহত হয়। পরবর্তীতে তাদেরকে উদ্ধার করে সজীবকে প্রাথমিক চিকিৎসা ও বড় ভাই রাজিবকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মো. সজিব জানান, কানন শিকদারের সাথে আমার কোন ব্যবসায়িক বা পারিবারিক বিরোধ নেই। কি কারনে সে হঠাৎ করে চাঁদা দাবি করে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা করলো তা বুঝতে পারছি না। হামলার ঘটনার পর থেকে জীবনের নিরাপত্তার ভয়ে আমি ও আমার বড় ভাই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারছি না।

হামলা ও চাঁদা দাবির বিষয় জানতে চাইলে অভিযুক্ত কানন শিকদার বলেন, আমি সজিবের বড় ভাই রাজীবের কাছে ব্যবসায়িকভাবে টাকা পাওনা সেই টাকা চেয়েছি, কোন চাঁদা চাইনি। পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে তাদের দোকানের সামনে একদিন ঝগড়াঝাটি হয়েছিল। তবে এ ঘটনায় চাঁদাবাজির মামলা করে থাকলে এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট।

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাজারুল ইসলাম জানান, কেরানীগঞ্জের গার্মেন্টস পল্লীতে চাঁদাবাজি ও দখল সংক্রান্ত একটি মামলা রেকর্ড করার পর আসামি গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।