থানায় নাতনীকে উত্যক্তের অভিযোগ করায় নানাকে পিটিয়ে হত্যা
প্রকাশ | ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১৭:৩৭

তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া নাতনীকে উত্ত্যক্তের ঘটনায় থানায় অভিযোগের পর নানাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে বখাটেরা। এই নির্মম হত্যাকাণ্ডর ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) রাতে মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার জয়মন্টপ ইউনিয়নের রায়দক্ষিণ গ্রামে। নিহত ব্যক্তির নাম আজগর খাঁন। তিনি ওই গ্রামের মৃত রশিদ খানের ছেলে। তিনি এলাকায় চায়ের দোকান করতেন। এঘটনায় বখাটে আলামিন প্রামানিক (৩৮) ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছে নিহতের ছেলে আয়ুব খান।
সিংগাইর থানা পুলিশ, নিহত ব্যক্তির স্বজনরা জানান, উপজেলার রায়দক্ষিন গ্রামের আজগর খানের নাতনি স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। স্কুলে যাওয়া আসার পথে ওই ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করতেন প্রতিবেশি মৃত কালু প্রামানিকের বখাটে ছেলে আলামিন। তাকে মেয়েটির পরিবারের পক্ষ থেকে একাধিকবার বুঝিয়ে বলার পরও কোনো কাজ হয়নি। উপায়ন্তর না পেয়ে গত সোমবার আলামিনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন মেয়েটির মা। গত মঙ্গলবার অভিযোগের তদন্ত করতে যান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফজলুর রহমান। তিনি তদন্ত শেষ করে চলে আসার পর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে আলামিন ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা চার থেকে পাঁচটি মোটরসাইকেলে করে আজগর খানের চায়ের দোকানে যান।
এসময় দোকান থেকে বের করে বাইরে এনে আজগর খানকে ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা দিয়ে পিটিয়ে পালিয়ে যান তারা। খবর পেয়ে তাঁকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান স্বজনরা। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে উন্নত হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার পরামর্শ দেন। রাত সাড়ে নয়টার দিকে তাঁকে ঢাকার সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। এসময় আজগর খানকে মৃত ঘোষণা করেন হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
নিহত আজগর খানের শ্যালক নজরুল ইসলাম বলেন, বখাটে আলামিন মাদক সেবন ও ব্যবসাসহ বিভিন্ন গুরুতর অপরাধের সঙ্গে জড়িত। নাতনিকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ ও থানায় অভিযোগ করায় আমার বোনের জামাইকে কুপিয়ে হত্যা করে আলামিন ও তাঁর সাঙ্গপাঙ্গরা। তিনি পুলিশের প্রতি দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ করে আরও বলেন, উত্ত্যক্তের ঘটনার তদন্ত করে থানার এসআই ফজলুর রহমান যাওয়ার পর আমার বোনের জামাইকে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়। ঘটনার পর থানার ওসিকে চারবার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সহযোগীতায় ওসিকে ঘটনাটি জানানো হয়। বোনের জামাইয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে।
এঘটনায় বখাটে আলামিন প্রামানিকসহ ৫ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও ৫-৬ জনকে আসামী করে থানায় মামলা করেছেন নিহত আজগর খানের ছেলে আয়ুব খান। মামলার অন্য আসামীরা হলো-উপজেলার ভাকুম গ্রামের মৃত কাশেম শিকদারের ছেলে শফি শিকদার (৪৭), একই গ্রামের সাগর, সাদ্দাম ও চাপরাইল গ্রামের রাতুল।
সিঙ্গাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জে, ও এম তৌফিক আজম বলেন, উত্ত্যক্ত ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আলামিন প্রামানিকসহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে আলামিন ও তাঁর সাঙ্গপাঙ্গরা পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেফতারের সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে।