প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি জৈব সার ও বালাইনাশক ব্যবহার

এমদাদুল হক মানিক একজন সফল কৃষক

প্রকাশ | ০৩ মে ২০২৫, ১৭:১০

ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
ছবি: যায়যায়দিন

কৃষি কাজকে জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে গ্রহণ করে সফলতা অর্জন করেছেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এমদাদুল হক মানিক। পরিশ্রম, কর্মদক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে কৃষি কাজে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি।

 

একসময় ছিলেন ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার হরিরামপুর ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রিয় চেয়ারম্যান। নানা কারণে মাত্র এক মেয়াদে চেয়ারম্যান হওয়ার পর আর আগ্রহ দেখাননি নির্বাচনে। তবে এই সময়ের মধ্যেই নিজেকে প্রমাণ করেছেন একজন পুরোদস্তুর সফল কৃষক হিসেবে।

 

ছোটবেলা থেকেই কৃষি কাজে আগ্রহ থাকার ফলে চেয়ারম্যান থাকাকালীন তিনি কৃষিকাজ চালিয়ে গেছেন এবং বিষমুক্ত নিরাপদ আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করার চেষ্টা করেছেন। 


চেয়ারম্যানের দায়িত্ব শেষ করে পুরোপুরি কৃষি কাজে জড়িয়ে পড়েন এবং বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদনে মনোনিবেশ করেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে প্রায় ৫০ শতাংশ জমিতে চাষাবাদ করেছেন। শুধু প্রচলিত কৃষি পদ্ধতির বাহিরে গিয়ে আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি, প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি জৈব সার ও বালাইনাশক ব্যবহার এবং সেচ ব্যবস্থার উন্নয়ন করে উৎপাদন বাড়িয়েছেন। খামারে বিভিন্ন ধরনের মৌসুমী শাক-সবজি, ফলমূলসহ নানা ফসল চাষাবাদ করছেন তিনি।

 

প্রথমে কৃষিকাজে নানা বাধার সম্মুখীন হলেও নিজের পরিশ্রম ও দক্ষতার ফলে ধীরে ধীরে তিনি সফলতার দিকে এগিয়ে যান। তার উৎপাদিত কৃষিপণ্য স্থানীয় বাজার ছাড়িয়ে বিভিন্ন স্থানে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে নিয়মিত কৃষি সম্পর্কিত বিভিন্ন উপদেশমূলক ভিডিও শেয়ার করেন। এতে কৃষিকাজে মানুষ উদ্বুদ্ধ হচ্ছে এবং আধুনিক ও নিরাপদ কৃষি পণ্য উৎপাদনে তার দেখানো পথ অনুসরণে এগিয়ে আসছে অনেক কৃষক।

 

সাবেক চেয়ারম্যান এমদাদুল হক মানিক বলেন, ‘জনগণ আমাকে ভালোবেসে একমেয়াদে চেয়ারম্যান বানিয়েছিল। পরবর্তী প্রেক্ষাপটে নির্বাচনে টাকার ছড়াছড়ি ও পেশিশক্তির ব্যবহার বাড়ায় আর নির্বাচনমূখী হইনি। কৃষি কাজ করতে আমার অনেক ভালো লাগে। তাই বর্তমানে কৃষি নিয়েই আছি। আমার জমিতে বালাইনাশক হিসেবে ক্ষতিকর কীটপতঙ্গের জন্য শ্যাম্পু, সাবানের গুড়া, গুল, কেরোসিন তেল ও হলুদের গুড়া ব্যবহার করি যা খুবই সহজলভ্য। ছত্রাকের জন্য বোর্দো মিক্সার হিসাবে তুতে ও চুন এবং ভাইরাসের জন্য পিয়াজের রস, রসুনের রস, ইত্যাদি ব্যবহার করি। এছাড়া নিমপাতা, বিষকাটালীর পাতা, মেহগনির বীজের রস ব্যবহার করি। যখন অতিরিক্ত ছত্রাক ও ভাইরাস ধরে তখন জৈব বালাই নাশক ব্যবহার করি। যেমন বায়ো-এনভির, বায়ো-এলিন ইত্যাদি ব্যবহার করি।

 

তবে তিনি স্থানীয় কৃষি অফিসের মাঠকর্মীকে নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অনেকক্ষেত্রে জরুরি প্রয়োজনে কৃষি অফিসের মাঠকর্মীকে কল করলে পাওয়া যায়না। কোন সময় খোঁজ নিতেও আসে না। তাই নিজে নিজেই বিভিন্ন মাধ্যম থেকে জেনে-বুঝে কৃষি কাজ করে যাচ্ছি।

 

স্থানীয় কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. শাহানূর আলম অপু অভিযোগ অস্বীকার করলেও মুঠোফোনে তার সাথে কথা হলে তার বক্তব্যে মেলে অসঙ্গতি।