পাংশায় যুবদল কর্মীকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা
প্রকাশ | ০৪ মে ২০২৫, ১১:২২

রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার পাট্টা ইউনিয়নে যুবদল কর্মী রাশিদুল ইসলামকে (৩৩) কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষ। নিহত রাশিদুল ইসলাম পাট্টা ইউনিয়নের উত্তর পাট্টা গ্রামের রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার পাট্টা ইউনিয়নে যুবদল কর্মী রাশিদুল ইসলামকে (৩৩) কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষ। নিহত রাশিদুল ইসলাম পাট্টা ইউনিয়নের উত্তর পাট্টা গ্রামের কিয়ামউদ্দিন মণ্ডলের ছেলে এবং তিনি একজন কৃষি শ্রমিক ছিলেন।
নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাজনৈতিকভাবে তিনি পাট্টা ইউনিয়ন যুবদলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ধান কাটার কাজে এক মাস আগে বরিশাল যান রাশিদুল। সেখান থেকে শুক্রবার রাতে ট্রাকে ধান নিয়ে বাড়ি ফেরেন। পরদিন শনিবার সকালে ধান ভাগ করার জন্য বাড়ি থেকে বের হলে সকাল ১০টার দিকে নিভা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় প্রতিপক্ষের লোকজন তার ওপর হামলা চালায়। তাকে কুপিয়ে এবং পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়।
স্থানীয়রা দ্রুত উদ্ধার করে রাশিদুলকে পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে অবস্থার অবনতি হলে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে দুপুর ১টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
শনিবার বিকেলে নিহতের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিবেশী নারীদের ভিড়। স্ত্রী জরিনা বেগম দুই সন্তানকে নিয়ে বাড়িতে ছিলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, “আমার স্বামী ধান কেটে একমাস পর বাড়ি ফিরেছিল। সকালে ধান ভাগ করতে যাচ্ছিল, তখনই ওদের হামলা। আওয়ামী লীগের সময়ও আমাদের বাড়িতে হামলা হয়েছিল। এখন আমি দুই সন্তান নিয়ে কী করবো?”
নিহতের ঘরের টিনের বেড়ায় কুপানোর চিহ্ন দেখা গেছে, এবং বেড়ার একাংশ কাটা অবস্থায় রয়েছে। পরিবার জানিয়েছে, এক বছর আগেও হামলাকারীরা তাদের বাড়িতে হামলা করে রাশিদুলের বাবা-মাকে মারধর করেছিল।
পাট্টা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি জহিরুল আলম মুরাদ বিশ্বাস জানান, স্থানীয় বিএনপির রাজনীতি দুই ভাগে বিভক্ত—সাবেক এমপি নাসিরুল হক সাবু ও জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হরুন অর রশিদের অনুসারী। রাশিদুল সাবু গ্রুপের কর্মী ছিলেন, আর হামলাকারীরা হরুন গ্রুপের অনুসারী। তাকে যারা মেরেছে তারা আগেও ওর বাড়িতে হামলা করে। রাশিদু্লকে না পেয়ে ওর বাবা মাকে পিটিয়ে আহত করে। এ ঘটনার জের ধরে পাট্টা ইউনিয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সুমনের বাড়িতে আগুন দিয়ে জালিয়ে দিয়েছে বিক্ষুদ্ধ জনতা। এ দিকে পাট্টাতে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা অবস্থান করছে।
এ বিষয়ে পাংশা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার দেব্রত সরকার বলেন, “পূর্ব শত্রুতার জেরে রাশিদুলের উপর হামলা হয়েছে। পুলিশ সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে গেলে আসামিরা পালিয়ে যায়। ফরিদপুর মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাশিদুল মারা যান। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।”
এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে এবং হামলাকারীদের শনাক্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।
যাযাদি/ এসএম