বারহাট্টায় প্রয়োজনীয় প্লাটফর্ম না থাকায় যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ
প্রকাশ | ০৪ মে ২০২৫, ১৭:৩৬

তথ্যমতে জানা যায়, ১৯৩০-৩১ সালে ব্রিটিশ সরকার অত্র এলাকার রেললাইন স্থাপন করেন।
বারহাট্টা স্টেশনটি দীর্ঘদিন ধরে ঐতিহ্য বহন করে আসছে। আগে বারহাট্টা থানা বর্তমান উপজেলায় বিভিন্ন ইউনিয়নগুলোতে যখন কোন রাস্তাঘাট এবং যানবাহন ছিল না তখন পায়ে হেঁটে বারহাট্টা স্টেশনে এসে অনেক যাত্রী রেলগাড়িতে চলাচল করতো। ওই সময় এই এলাকার সকল শ্রেণীর লোকজনের একমাত্র চলাচলের বাহন ছিল রেলগাড়ি।
বারহাট্টা যদিও উপজেলা -কিন্তু উন্নয়নের অবস্থানে এটি একটি উন্নত গ্রাম। উন্নয়নের অবস্থানে মারাত্মক পিছিয়ে বারহাট্টা উপজেলা। বারহাট্টা শহরটি এক গলির শহর। শহরের উত্তর পাশে কংস নদী আর দক্ষিণে বাংলাদেশ রেলওয়ে রেললাইন অবস্থিত।
এ দুইয়ের মাঝে বারহাট্টা বাজার। বারহাট্টা উপজেলা পরিষদ বারহাট্টা রেলওয়ে স্টেশনের সংলগ্ন অবস্থিত।
বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনে নেত্রকোনা জেলার একমাত্র সদস্য কংস থিয়েটার বারহাট্টা। বারহাট্টা রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্নে অবস্থিত। এজন্য অত্র এলাকার মানুষ সময় কাটানোর মতো কোন জায়গা নাই। স্বভাবত কারণেই, সামাজিক, রাজনৈতিক ধর্মীয় অনুষ্ঠান শেষে কিছু মানুষ এখনোও বারহাট্টা স্টেশনে এসে চার স্টল গুলোতে সময় কাটায়।
কারণ অন্যান্য স্টেশনের তুলনায় পরিবেশগত দিক থেকে বারহাট্টা স্টেশন অনেক নিরাপদ। ব্রিটিশ সরকার রেল লাইন স্থাপনের পর আর রেললাইন এবং বারহাট্টা স্টেশনের সংস্কার হয়নি। ২০০৯-২০১০ সালের দিকে ব্রিটিশ সরকারের সেই পুরনো লাল ইটের নকশায় বানানো বারহাট্টা রেলওয় স্টেশনের ঘরটি ভেঙে নতুন নকশায় স্টেশান ও রেল লাইন সংস্কারের কাজ করে। স্টেশনের উপর পূর্ব পাশে একটি জাম গাছ
এবং পশ্চিমে একটি বিশাল বড় রেন্ট্রি গাছ থাকায় প্লাটফর্মে পুরোটা জুড়ে উপরের যাত্রী ছাউনি করা সম্ভব হয়নি। যার ফলে দুদিকেই প্রায় বর্তমান প্লাটফর্মের অর্ধেক অংশ যাত্রীবিহীন অবস্থায় থেকে যায়। তাই একটু বৃষ্টি এলেই স্টেশনে বিল্ডিং এবং অল্পযাত্রী ছাউনীর নিচে মানুষ গজাগুজি করে আশ্রয় নেয়।
একটু বৈরি আবহাওয়া যাত্রীরা নিরাপদে স্টেশনে অবস্থান করতে পারে না। বর্তমানে হাওয়ার এক্সপ্রেস ও মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস নামে দুইটি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করে। মালিকানাধীন কমিউটার নামে একটি মেইল ট্রেন চলাচল করে। দীর্ঘদিন যাবত ইঞ্জিন বিকল থাকার কারণে লোকাল ট্রেনগুলো বন্ধ আছে।
১৪বগীর আন্তঃনগর ট্রেনগুলো উপযুক্ত প্ল্যাটফর্ম না থাকায় ৬-৭বগীর পর সবগুলো বগীপ্ল্যাটফর্মের বাহিরে থাকে। এতে যাত্রী সাধারণের উঠা -নামার মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে মহিলা যাত্রীদের ক্ষেত্রে সমস্যা বেশি হয়। এর মধ্যে বৃষ্টি থাকলে উঠা-নামার ক্ষেত্রে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার সৃষ্টি হয়। বৃষ্টির সময় প্রায়ই যাত্রীদের পরে যেতে দেখা যায়। এবং যাত্রী ছাউনি না থাকায় একটু বৃষ্টি হলেই বৃষ্টিতে ভিজে রেল গাড়িতে উঠতে -নামতে হয়।
বারহাট্টা উপজেলা সহ পার্শ্ববর্তী আটপাড়া. মধ্যনগর ও কলমাকান্দা উপজেলার অনেক লোক বারহাট্টা রেলওয়ে স্টেশনকে চলাচলের জন্য ব্যবহার করে থাকে। রাতের বেলায় প্লাটফর্মের বাহিরে আলো না থাকায় অনেক সময় যাত্রীরা দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়।
এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় উল্লেখিত সমস্যাগুলো বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সমাধান করার পদক্ষেপ নিলে বারহাট্টা উপজেলা এবং দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে আগত রেলগাড়িতে চলাচলের যাত্রীদের দুর্ভোগ লাগব হবে।