আড়াইহাজারে এক রাতে চার বাড়িতে ডাকাতি
প্রকাশ | ০৫ মে ২০২৫, ১৫:৩২

নতুন করে ডাকাতি আতঙ্কে ভুগছেন নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার বাসিন্দারা। রোববার দিবাগত রাতে চার বাড়িতে ডাকাতিসহ গত এক সপ্তাহের মধ্যে উপজেলাজুড়ে অন্তত ১০টি ডাকাতির ঘটনার তথ্য পাওয়া গেছে। সংঘবদ্ধ ডাকাতরা দরজা ভেঙে ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে টাকাপয়সা, স্বর্ণালংকার লুটে নিচ্ছে। কেউ বাধা দিলেই দুর্বৃত্তরা মারধর ও অস্ত্র দিয়ে আঘাত করছে।
রোববার রাতে সংঘটিত ডাকাতির ঘটনায় বৃষ্টি আক্তার (২৬) নামে এক গৃহবধূর কান ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে দিয়েছে ডাকাতদল।
সর্বশেষ রোববার রাত আড়াইটার দিকে ২০-২৫ জন মুখোশধারী ডাকাত হানা দেয় মাহমুদপুর ইউনিয়নের আগুয়ান্দী এলাকায়। ওই এলাকার মন্টুর ছেলে জুমন, রুস্তম আলীর ছেলে মামুন, অপর ব্যাক্তি বাবু এবং আ. মজিদের ছেলে ডাঃ মান্নানের ঘরে এক যোগে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ২০/২৫ জনের মুখোশ পরিহিত অস্ত্রধারী ডাকাত দল ওই বাড়ীর প্রতিটি ঘরের দরজা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে ঘরে থাকা লোকজনদেরকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি ও মারপিট করে এবং মান্নানের ছেলে মফিজুলের স্ত্রী বৃষ্টি আক্তার (২৬) এর কান ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে গুরুতর আহত করে নগদ ২ লাখ টাকা, আড়াই ভরি ওজনের স্বর্ণারংকার এবং আরো কিছু রৌপ্যালংকার, ৬টি মোবাইল ফোন লুটে নিয়ে চলে যায়।
এর আগে শনিবার রাতে উচিৎপুরা ইউনিয়নের টেগুরিয়াপাড়া এলাকায় আল আমিনের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে । ডাকাত দল ঘরের দরজা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে অস্ত্রের মুখে পরিবারের সবাইকে জিম্মি করে। পরে তাদের হাত-পা বেঁধে ঘর তছনছ শুরু করে। এক পর্যায়ে নগদ এক লাখ টাকা, সাড়ে চার ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার, চারটি মোবাইল ফোনসহ অন্যান্য মালপত্র লুটে নেয়। ডাকাতি শেষে চলে যাওয়ার সময় এলাকাবাসী আরমান মিয়া (২৬) নামের এক ডাকাতকে অটোরিকশাসহ আটক করে। তাকে পিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে জনতা।
বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে ডাকাতি হয় উপজেলার বিশনন্দী ইউনিয়নের দয়াকান্দা গ্রামের কান্দাপাড়ার বাসিন্দা আব্দুল হেকিম মিয়ার বাড়িতে। একই কায়দায় ১৫-২০ জনের মুখোশধারী ডাকাত দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে। হেকিম মিয়া বলেন, অস্ত্রের মুখে তাঁর পরিবারের সবাইকে জিম্মি করে ডাকাতরা লুটপাট চালায়। সব মিলিয়ে তাঁর বাড়ি থেকে নগদ ২৪ হাজার টাকা, এক ভরি স্বর্ণালংকার, দুটি মোবাইল ফোনসহ মূল্যবান জিনিসপত্র লুট হয়েছে।
২৭ এপ্রিল রাত আড়াইটার দিকে ডাকাতি হয়েছে ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের বড় বিনাইরচর এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা বি এম কামরুজ্জামানের বাড়িতে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ১৮-২০ জন মুখোশধারী ডাকাত তাঁর বাড়ির পাঁচটি ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকছে। পরে তারা দুই ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার, নগদ ২০ হাজার টাকা, আইফোনসহ পাঁচটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন লুটে নেয়। ডাকাতদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে একই বাড়ির কিশোর নুরুল ইসলাম (১৭) গুরুতর আহত হয়।
ওই ডাকাত দলের সদস্যরা বি এম কামরুজ্জামানের পরিত্যক্ত কারখানায়ও হামলা চালায়। বি এম কামরুজ্জামানের ভাই রফিকুল ইসলামের ধারণা, ডাকাতদের বেশির ভাগের বয়স ১৮ থেকে ২৬ বছরের মধ্যে। সবাই হাফপ্যান্ট পরে গামছা দিয়ে মুখ ঢেকে এসেছিল।
হঠাৎ করে এলাকায় চুরি ডাকাতি বৃদ্ধি পাওয়ায় জনমনে আতংকের সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে আড়াইহাজার থানার ওসি খন্দকার নাসিরউদ্দিন জানান, প্রতিটি ঘটনা পুলিশ তদন্ত করে দেখছে। ইতিমধ্যে আরমাননামে এক ডাকাতকে পাকড়াও করে জনতা গনপিটুনী দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে এবং একটি মামলাও হয়েছে। বাকী ঘটনা গুলোর বিষয়ে কোন লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
যাযাদি/ এসএম