এনপিসিবিএল কর্মকর্তাদের সংবাদ সম্মেলন
রূপপুর প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের অপসারণ দাবি
প্রকাশ | ০৮ মে ২০২৫, ১৬:২৭

রূপপুর প্রকল্পের প্রতিটি স্তরে সার্বক্ষণিক ও কার্যকর নজরদারি নিশ্চিত করে একটি সুশাসনভিত্তিক, নিরাপদ ও কর্মবান্ধব পরিবেশ গড়ে তোলা, বাংলাদেশের পাওয়ার প্লান্টে কাজের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন যোগ্য, দক্ষ ব্যক্তিকে স্থায়ীভাবে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নিয়োগ দেয়ার দাবি তোলা হয়।
দুর্নীতির বরপুত্র বর্তমান এমডি ড. জাহেদুল হাছানকে অবিলম্বে ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদ থেকে অপসারনের দাবিতে মানববন্ধন, বিক্ষোভ সমাবেশ ও সংবাদ সম্মেলন করেছে রূপপুর প্রকল্পের এনপিসিবিএল কর্মচারী এবং কর্মকর্তা বৃন্দ।
মঙ্গলবার ৬ই এপ্রিল বিকেলে ঈশ্বরদী পৌরশহরের উপজেলা রোডস্থ একটি রেস্টুরেন্টে এ সংবাদ সম্মেলন করেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এনপিসিবিএল এর সিনিয়র সহকারী ব্যবস্থাপক ফাহিম শাহরিয়ার তুহিন বলেন, নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (এনপিসিবিএল) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালকের চরম অদক্ষতা, প্রশাসনিক স্বেচ্ছাচারিতা, প্রাতিষ্ঠানিক স্বৈরতন্ত্র, দুর্নীতি এবং অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা এখন তুঙ্গে।
তিনি বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের বর্তমান প্রকল্প পরিচালক এবং নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড এনপিসিবিএলএর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. জাহেদুল হাছানের বিরুদ্ধে গুরুতর অনিয়ম, চরম অযোগ্যতা, দুর্নীতি, প্রশাসনিক স্বোচ্ছাচারিতা এবং প্রাতিষ্ঠানিক ফ্যাসিবাদের অভিযোগে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
তার বিরুদ্ধে কর্মকর্তাদের বিভিন্ন অযৌক্তিক, অমানবিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থার অভিযোগও রয়েছে । তন্মেধ্যে রাশিয়া থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত অনেকেই শুধুমাত্র তার এই সকল অব্যবস্থাপনার কারণেই চাকরি ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি এনপিসিবিএল থেকে ১০০০ সহকর্মী চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন। চাকরি ছেড়ে গেলেও সিপিএফ, গ্রাচুইটি, অভিজ্ঞতা সনদ, এনওসি কিছুই দেওয়া হয় নাই সেই কর্মকর্তা কর্মচারীদেরকে।
এনপিসিবিএল এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক হওয়ায় নিজের একক ক্ষমতা বলে ড. জাহেদুল হাছান গত আগস্ট থেকেই দফায় দফায় ২৫ কর্মকর্তা এবং সর্বশেষ গত ২৯ এপ্রিল ৯জন কর্মকর্তার প্রকল্পে প্রবেশাধিকার কেড়ে নিয়েছেন।
শুধু তাই নয় ওয়ার্ক প্লেস সেফটি বা কর্মীদের কর্মরত অবস্থায় মারা গেলে বা আহত হলে তার সুরক্ষা অথবা ইন্সুরেন্স, শিফট এলাওয়েন্স এর ব্যাপারে জানতে চেয়েও অবৈধভাবে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান ও পরবর্তীতে প্রকল্প থেকে সংযুক্তি বাতিল করা হয়েছে।
শুধু তাইনয় প্রশ্ন উঠেছে তার বিরুদ্ধে কথা বলায় হাসমত আলীসহ ৩০০ কর্মকর্তাকে পুরোপুরি মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন কারণ দেখিয়ে ক্রমাগত স্ট্যান্ড রিলিজ, সর্তকর্তা প্রদান এমনকি কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদানও করেছেন তিনি।
রূপপুর প্রকল্পের সফল অপারেশন ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আইএ ই এ এর নির্দেশনা অনুসরণ করে সরকারি খরচে ১৪০০ জন দক্ষ জনবলকে রাশিয়ায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। কিন্তু ড. জাহেদুল হাছান এই দক্ষ জনবলকে অদক্ষ ও অযোগ্য দেখিয়ে রাশিয়ার সাথে দীর্ঘমেয়াদী অপারেশন এন্ড মেইন্টেন্যান্স চুক্তি করার মত হীন চক্রান্ত করে যাচ্ছেন বলেও সম্মেলনে জানানো হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে, এনপিসিবিএল এর সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জোর দাবি ড. জাহেদুল হাছানকে অবিলম্বে ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদ থেকে অপসারণ করতে হবে। তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগসমূহ তদন্তের মাধ্যমে প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ বিভাগীয় ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
একইসাথে, এনপিসিবিএল কে একটি কার্যকর, স্বাধীন, স্বচ্ছ এবং অংশগ্রহণমূলক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কাঠামোগত সংস্কার গ্রহণ করার জোর দাবি জানিয়েছেন বক্তারা।