কেন্দুয়ায় দরিদ্র খামারীর ১২শ হাঁসের মৃত্যু

ছবি: যায়যায়দিন

নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার কান্দিউড়া ইউনিয়নের বেজগাতি, কুন্ডলী গ্রামে বিষক্রিয়ায় মারা গেছে দরিদ্র কৃষক সন্তোষ মিয়ার খামারের প্রায় ১২০০টি হাঁস। এতে প্রায় আড়াই লাখ টাকার ক্ষতির মুখে পড়েছেন তিনি।

সরেজমিনে সন্তোষ মিয়ার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির আঙিনা ও চারপাশে সারি সারি হাঁসের বাচ্চা মৃত অবস্থায় পড়ে আছে। চোখের পানি মুছতে মুছতে সন্তোষ মিয়া জানান, “বুধবার (৮ মে) ভোর ৬টায় প্রতিদিনের মতো হাঁসগুলো বিলে ছাড়ি। কিন্তু পানিতে নামার সঙ্গেসঙ্গেই হাঁসের বাচ্চাগুলো মারা যেতে শুরু করে। আমার ধারণা, কেউ বিলের পানিতে বিষ দিয়েছে।”

সন্তোষ মিয়া জানান, তিনি অন্যের জমিতে চাষাবাদ এবং হাঁস পালন করে জীবিকা নির্বাহ করেন। গত মাসে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ২১০০টি হাঁসের বাচ্চা কিনে খামার শুরু করেন। এর মধ্যে ১২০০টি হাঁস মারা যাওয়ায় প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। এছাড়া খাদ্যের দোকানে এখনো ৪০ হাজার টাকা বাকি রয়েছে। এ অবস্থায় তিনি সরকারের কাছে আর্থিক সহায়তার দাবি জানান।

বিলের জমির মালিক মুসলেম উদ্দিন জানান, “সন্তোষ দরিদ্র মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে আমার জমিতে হাঁস পালন করছে। আমরাও তাকে উৎসাহ দিয়ে থাকি। তবে আজকের এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার পেছনে কারা জড়িত, তা আমাদের জানা নেই।”

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান কেন্দুয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের ভেটেরিনারি সার্জন ডা.সাখাওত হোসেন তারিক । তিনি জানান, “প্রাথমিক পরীক্ষায় হাঁসগুলো ভাইরাসে নয়, বরং বিষক্রিয়ায় মারা গেছে বলে ধারণা করছি। আমরা মৃত হাঁসের নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে পাঠিয়েছি। রিপোর্ট এলে সঠিক কারণ জানা যাবে।”

এছাড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। আর্থিক অনুদান বিষয়ে তিনি বলেন, “উপজেলা পর্যায়ে সরাসরি অনুদান দেওয়ার ব্যবস্থা নেই। তবে জেলা পর্যায়ে আবেদন করলে তিনি সহযোগিতা পেতে পারেন।”

এ ঘটনায় সন্তোষ মিয়া অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে কেন্দুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। আমরা তদন্ত শুরু করেছি এবং সত্য উদঘাটনে বদ্ধপরিকর।”

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক সন্তোষ মিয়া দোষীদের দ্রুত শনাক্ত করে শাস্তি ও তার ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়ার জন্য সরকারের সহায়তা কামনা করেছেন।