কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
পাইকগাছায় পাওনা টাকা আদায়ের দাবিতে গ্রাহকদের সড়ক অবরোধ
প্রকাশ | ১৮ মে ২০২৫, ১২:৪৪ | আপডেট: ১৮ মে ২০২৫, ১৩:০৯

পাইকগাছার বহুল আলোচিত জোনাকি গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ ।খুলনার পাইকগাছার বহুল আলোচিত জোনাকি গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতির কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এবার সড়ক অবরোধ করে পাওনা টাকা আদায়ের দাবি করেছেন সমিতির গ্রাহক /সদস্যরা।
শনিবার বিকাল ৫ টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টা পর্যন্ত শত শত নারী পুরুষ পৌরসভার সরল বাজার এলাকায় প্রধান সড়ক অবরোধ করে রাখে।
দুই হাজার গ্রাহকের প্রায় ৫ কোটি টাকা সমিতি কর্তৃপক্ষ আত্মসাৎ করেছে এমন অভিযোগে বিক্ষুব্ধ ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকরা বিগত ৩ বছর পাওনা টাকা আদায়ের দাবি জানিয়ে আসছে।
সর্বশেষ শনিবার বিকালে সমিতির বিক্ষুব্ধ গ্রাহকরা সমিতির সঞ্চয় / পাশ বই হাতে নিয়ে " টাকা চাই দিতে হবে, পাওনা টাকা না দিলে, ঘরে আর ফিরবো না, সমিতি কর্তৃপক্ষের অবৈধ সম্পদ অবিলম্বে জব্দ করে, গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতে হবে, কোন চক্রান্ত মেনে নেওয়া হবে না "।
এ ধরনের নানা স্লোগানের মাধ্যমে বিক্ষোভ করে জোরালো ভাবে তাদের পাওনা টাকা আদায়ের দাবি জানান ।
দেড় ঘন্টা সড়ক অবরোধ করে রাখায় এ সময় প্রধান সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে কয়েক কিলোমিটার জুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
পরে থানার দায়িত্ব প্রাপ্ত ওসি ইদ্রিসুর রহমান ও উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা হুমায়ূন কবির ঘটনাস্থলে এসে পাওনা টাকা আদায়ে সর্বাত্মক সহোযোগিতা এবং এব্যাপারে ক্ষতিগ্রস্ত কোন গ্রাহককে অহেতুক কেউ হয়রানি করতে পারবে না মর্মে এমন আশ্বস্ত করলে সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন অবরোধকারী গ্রাহকরা।
এ সময় বক্তব্য রাখেন পৌরসভা বিএনপির নেতা মোস্তফা মোড়ল, মৎস্য আড়ৎদারি সমবায় সমিতির সাবেক সভাপতি জাকির হোসেন, এফএম মাসুম বিল্লাহ, নাজমা বেগম, আমজেদ গাজী, আব্দুস সালাম, জাহিদুর রহমান, আজহারুল ইসলাম, মুন্নী, খুকুমণি, আব্দুল জলিল, শরিফা খাতুন, মতিয়ার রহমান, রওশানারা, জবেদা বেগম, ইমরান হোসেন, সাহেব গোলদার, ময়না বেগম, গফফার গাজী ও নুরজাহান বেগম।
উল্লেখ্য পৌর সদরের সরল বাজারের জোনাকি গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতির কার্যালয় রয়েছে। এখানে সমিতি কর্তৃপক্ষ সমবায় সমিতির নীতিমালা লঙ্ঘন করে সমিতির নামে বিভিন্ন ডিপোজিট কার্যক্রম চালু করে।
অধিক মুনাফা লাভের আশায় এলাকার হাজার হাজার গ্রাহক যুক্ত হয়ে যায় সমিতির বিভিন্ন ডিপোজিট কার্যক্রমের সাথে। এলাকার দিনমজুর থেকে শুরু করে সকল শ্রেণী পেশার মানুষ তাদের আয়ের সিংহভাগ টাকা জমা রাখে অত্র সমিতিতে।
প্রথম দিকে সমিতির লেনদেন স্বাভাবিক থাকলেও পরবর্তীতে গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতে ব্যর্থ হয় সমিতি কর্তৃপক্ষ। অনেকেই সারাজীবনের অর্জিত সব টাকা সমিতির অনূকূলে জমা করে সর্বসান্ত হয়ে পথে বসেছে।
বিগত ৩ বছর সাধারণ গ্রাহকরা তাদের পাওনা টাকা দাবি করে আসছে। সমিতির প্রধান নির্বাহী ও সাবেক কাউন্সিলর আলাউদ্দিন গাজী, সভাপতি মোহাম্মদ গাজী, সমিতির কর্মচারী সাবেক কাউন্সিলর কবিতা দাশ এবং সালমা খাতুন সমিতির টাকা আত্মসাৎ করেছেন এমন অভিযোগ করে আসছেন সমিতির সদস্য বা গ্রাহকরা।
এনিয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সাথে একাধিকবার আলোচনা এবং বৈঠক হয়েছে সমিতি কর্তৃপক্ষ ও গ্রাহকদের। গ্রাহকদের ইতোপূর্বে সমিতির কার্যালয় ঘেরাও সহ বিক্ষোভ সমাবেশ করতে ও দেখা গেছে।
শেষ পর্যায়ে এসে উপজেলা সমবায় কর্মকর্তার মাধ্যমে একটি কমিটি গঠন করে টাকা আদায়ের চেষ্টা চলছে। এদিকে শুক্রবার বিকেলে সমিতির বিক্ষুব্ধ গ্রাহকরা সাবেক কাউন্সিলর কবিতা দাশের বাড়িতে গিয়ে তাকে মারপিট করায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন এমনটাই জানিয়েছেন তিনি।
যদিও মারপিটের বিষয়টি ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন সমিতির গ্রাহকরা।