নিয়ামতপুরে বিদ্যুতের অভাবে কিনে পান করতে হচ্ছে সুপেয় পানি
প্রকাশ | ১৮ মে ২০২৫, ১৫:৫৭ | আপডেট: ১৮ মে ২০২৫, ১৬:২৭

নওগাঁর নিয়ামতপুরে গেল শুক্রবার কালবৈশাখীর তাণ্ডবে গাছ উপড়ে পড়ে বিদ্যুৎ লাইন ছিড়ে ও বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে গেছে।
যার ফলে এখনো উপজেলার প্রায় ৩ লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছেন।
দুইদিন পরেও স্বাভাবিক হয়নি নিয়ামতপুর এলাকায় বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থা।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বিদ্যুৎ ও সুপেয় পানির জন্য হাহাকার দেখা দিয়েছে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়।
বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে ইন্টারনেট সংযোগ, দেখা দিয়েছে মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক বিলম্বনা। দূর-দূরান্ত থেকে ভ্যান যোগে, হেঁটে পানি নিয়ে এসে রান্নার কাজ করছেন বাড়ির নারীরা।
উপজেলার নন্দিগ্রাম গ্রামের নারীরা বলেন, শনিবার (১৭ মে) থেকে পানির অভাবে রান্নাবান্নাসহ গরু-বাছুরের পানি খাওয়া নিয়ে চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন। পানি ছাড়া কোনো কাজই করা সম্ভব না।
তাছাড়া এলাকায় প্রায় টিউবওয়েল অকেজো। আজ (রোববার) সকালে গ্রামের কিছু যুবক ডেকোরেটর থেকে জেনারেটর ভাড়া করে এনে পানির সমস্যা কিছুটা লাঘব করেছে।
নন্দিগ্রামের সমিন্দ্র বলেন, ‘আমার পরিবারে মা-চাচির পানির সমস্যার কারনে মনে হলো কিছু করা দরকার।
যেমন চিন্তা তেমন কাজ, চলে গেলাম কালিতলা বাজারে ডেকোরেটরের দোকানে।
সেখান থেকে জেনারেটর ভাড়া করে নিয়ে এসে আজ সকালে গ্রামের প্রত্যেক পরিবারকে ৫০ টাকা দিন চুক্তি হিসেবে পানি সরবরাহ করি।’
টাকা নেওয়ার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি জেনারেটর ভাড়া করেছি, তাছাড়া তেল কিনতে হয়। এসব খরচ তোলার জন্যই মূলত টাকা নেওয়া হয়েছে।’
পতকৈইল মোড়ের স্টল ব্যবসায়ী রায়হান বলেন, স্টল চালাতে অনেক পানি লাগে। দোকানের প্লেট-বাসন পরিস্কার, কাস্টমারসহ পথচারীদের পানি খাওয়ানো সব মিলিয়ে বিদ্যুত আর পানি নিয়ে রীতিমত হিমসিম খেতে হচ্ছে। বড় সমস্যা হলো আশেপাশে কোন টিউবওয়েল নেই।
হাজিনগর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য সুলতান আহমেদ হেলাল বলেন, তিনি এলাকার প্রায় সব গ্রাম পরিদর্শন করেছেন। প্রত্যেক গ্রামের একই সমস্যা।
গত দুইদিনে যতটুকু পানি সংরক্ষণ ছিল তা শেষ হয়ে গেছে। এলাকার কোন গ্রামে টিউবওয়েল না থাকায় এমন ভোগান্তিতে পড়েছে প্রত্যেক পরিবার।
তিনি সরকারের কাছে আবেদন করতে চান প্রত্যেক গ্রামে অন্তত একটি করে সোলার ডিপ টিউবওয়েল স্থাপন করা দরকার।
এটি এমন প্রকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় সহায়ক হবে।
ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মেশবাহুল হক বলেন, গত শুক্রবার রাতের ঝড়ে বিদ্যুতের অনক পোল, তার, মিটার ছিড়ে গেছে।
পল্লী বিদ্যুতের টিমসহ নওগাঁ, জয়পুর হাট থেকে আসা সব সদস্য বিভিন্ন এলাকায় দিনরাত নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে। শনিবার বিকালে মেন লাইন চালু করতে পেরেছেন। আজ (রোববার) সন্ধার মধ্যে হয়তো মোটামুটি উপজেলার সব বিদ্যুতের লাইন চালু করতে পারবেন।