ঈশ্বরগঞ্জে একরাতে চার কৃষকের ১১ গরু চুরি
প্রকাশ | ২০ মে ২০২৫, ১০:১১

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে একরাতে ৪ কৃষকের পাশাপাশি গোয়ালঘর থেকে ১১ টি গরু চুরি করেছে সংঘবদ্ধ চোরচক্র। গত রোববার রাতে উপজেলার আঠারবাড়ী ইউনিয়নের দশাশিয়া গ্রামে দুর্ধর্ষ এ চুরির ঘটনা ঘটে।
এর আগে সম্প্রতি মাইজবাগ ইউনিয়নের কুল্লাপাড়া গ্রামে এক রাতে তিন ভাইয়ের ৮ টি গরু চুরির ঘটনাও ঘটেছে।
চুরি যাওয়া এসব গরুর আনুমানিক মূল্য ২০ লাখ টাকার মতো হবে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
এসব ভুক্তভোগী কৃষকের মধ্যে- আঠারবাড়ী ইউনিয়নের দশাশিয়া গ্রামের মো. আবু বকর সিদ্দিকের ৬ টি তার ভাই মো . সুলতানের ১ টি ও একই এলাকার আবুল বাশারের ২ টি ও মো. ইসরাফিলের ২ টি গরু চুরি হয়েছে। এসব গরুর আনুমানিক মূল্য প্রায় ১২ লাখ টাকার মতো।
গত সপ্তাহেও মাইজবাগ ইউনিয়নের কুল্লাপাড়া গ্রামের আবু সাঈদ ভূঁইয়া, আব্দুল লতিফ ভূঁইয়া ও আবুল কাশেম ভূঁইয়া নামে ৩ ভাইয়ের ৮ টি গরু নিয়ে যায় চোর চক্র। যার মূল্য আনুমানিক ৭ লাখ টাকার মতো হবে।
কুল্লাপাড়া গ্রামের গরুর চুরির ঘটনায় ভুক্তভোগীরা থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। এ ঘটনার ৬ দিন পার হলেও চোর শনাক্ত কিংবা গরু উদ্ধারে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি পুলিশ। ফলে দিনদিনই সাধারণ মানুষের মাঝে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা বেড়েই চলেছে।
ভুক্তভোগী আবু বকর সিদ্দিক কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘এই গরুগুলোই আমার শেষ সম্বল ছিল। এরমধ্যে একটা ষাঁড় গরু কোরবানি ঈদে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেছিলাম। ভেবেছিলাম গরুটা বিক্রিকরে কিছু ঋণ আছে ওইগুলো পরিশোধ করতাম আর বাকিটা দিয়ে কিছু জমি বর্গা ছাড়াতাম। আমি একদম নিঃস্ব হয়ে গেলাম ‘
ভুক্তভোগী মো. সুলতান বলেন, ‘আমার গাভিটি অন্তঃসত্ত্বা ছিল। গরীব মানুষ সারাবছর ছোটখাট গৃহস্থালী কাজ করে নিজেরা খেয়ে না খেয়ে গাভিটি লালন করছিলাম। ভেবেছিলাম গাভিটা বাচ্চা দেওয়ার পর দুধ বিক্রি করে সন্তানদের পড়াশোনার খরচ চালাব আর নিজেরা কোনমতে চলবো৷।
আক্ষেপ করে তিনি বলেন, ‘চোরচক্র শুধু গাভিটিই নেয়নি, নিয়ে গেছে আমার সন্তানদের ভবিষ্যৎ।’
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, আঠারবাড়ী দশাশিয়া এলাকাটি পুলিশ ফাঁড়ির অধীনে।
গরু চুরির খবরটি শোনার সঙ্গে সঙ্গে ফাঁড়ির দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া সম্প্রতি মাইজবাগের চুরির বিষয়ে ভুক্তভোগীরা থানায় লিখিত দিয়েছে। চুরি যাওয়া গরু উদ্ধারে পুলিশ সর্বোচ্চ তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে।