৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ হাজারও মানুষ

পঞ্চগড়ে নির্মাণাধীন রাস্তা নিয়ে চরম ভোগান্তিতে মানুষ

প্রকাশ | ২১ মে ২০২৫, ১২:২৮

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
। ছবি: যায়যায়দিন

পঞ্চগড়ে এক বছরের কাজের ১১ মাস পেড়িয়ে গেলেও একটি রাস্তার অর্ধেক কাজও শেষ না হওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে চারটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ছাড়াও কয়েকটি গ্রামের হাজারও মানুষ।

রাস্তায় সামান্য বালু ও খোয়া বিছিয়ে রাখায় সামান্য বৃষ্টিতে জমে যাচ্ছে হাটু পানি। এতে করে মানুষ তো দুরের কথা; ছোট যানবাহনগুলোও স্বাভাভিকভাবে চলাচল  করতে পারছে না। আগামী বর্ষার আগেই এই রাস্তার কাজ শেষ করার দাবি জানিয়েছে ওই এলাকার মানুষরা। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় এক বছর আগে সদর উপজেলার কামাত কাজলদিঘী ইউনিয়নের গলেহা বাজার থেকে গলেহাপাড়া পর্যন্ত ৭৫০ মিটার রাস্তার পাকাকরণের কাজ শুরু করে ‘অনু ট্রেডার্স’ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

প্রকল্পের মেয়াদ ছিল এক বছর। কিন্তু ১১ মাসে অর্ধেক কাজও শেষ হয়নি। প্রথমে মাটি খুঁড়ে রেখে দেয়ার পর বর্ষায় রাস্তা প্লাবিত হয়ে আশপাশের বাড়িঘরেও পানি ঢুকে পড়ে।

এরপর কিছুটা মাটি ফেলে ও সামান্য খোয়া ছিটিয়ে চলাচলের ব্যবস্থা করা হলেও প্রায় চার মাস ধরে সম্পূর্ণভাবে কাজ বন্ধ রয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তায় হাঁটু সমান পানি জমে আছে। কোথাও কোথাও গর্ত হয়ে গেছে, খোয়া উঠে গেছে অনেক অংশে। এই অবস্থায় পথচারীরা তো বটেই, যানবাহন চলাচলও প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। স্থানীয় কৃষকেরা জানিয়েছেন, এই রাস্তা ব্যবহার করে কৃষিপণ্য বাজারজাত করা এখন দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে।

গলেহা উচ্চ বিদ্যালয় ও আশপাশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা জানায়, প্রতিদিন এই রাস্তায় হাঁটতে গিয়ে চরম ঝুঁকি নিতে হচ্ছে তাদের। কোনো বিকল্প রাস্তা না থাকায়, বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে সবাই।

শিক্ষার্থীদের দাবি, বর্ষা শুরু হওয়ার আগেই যেন রাস্তাটির কাজ সম্পন্ন করা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা শারমিন আক্তার, মুর্শিদা বেগম, শফিকুল ইসলাম বলেন, রাস্তা খুঁড়ে রেখে যাওয়ার ফলে বর্ষায় হাটু পানি জমে যায়। ছোট বাচ্চারা স্কুলে যেতে চায় না। চারটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও সেবাগ্রহীতারা চরম কষ্টে রয়েছেন।

স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক সাথিকুর রহমান বলেন, ‘রোগীদের বাড়িতে গিয়ে চিকিৎসা দিতে গেলে ভীষণ দুর্ভোগ পোহাতে হয়। আমরা দ্রুত রাস্তাটির কাজ শেষ করার দাবি জানাই।’

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আইআরআইডিপি-৩ প্রকল্পের অধীনে ৬২ লাখ ২৯ হাজার ৯৯০ টাকা ব্যয়ে এই রাস্তার কাজ শুরু হয়। কাজের দায়িত্বে ছিল ‘অনু ট্রেডার্স’, যা পরবর্তীতে তিনি বিক্রি করে দেন ‘মেসার্স ইমান এন্টারপ্রাইজ’র মালিক নুর মো. শাহীন ইবনে ইমান (ওরফে ভাটা শাহীন)’র কাছে।

তবে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাদের কারো সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। 

সদর উপজেলা প্রকৌশলী রমজান আলী বলেন, ‘কাজ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে একাধিকবার তাগিদ দিয়েছি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না করলে রি-টেন্ডার করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’