ফেনীতে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের কর্মবিরতি

প্রকাশ | ২৮ মে ২০২৫, ১৮:২৮

ফেনী প্রতিনিধি
ছবি : যায়যায়দিন

শিক্ষকদের উৎসব ভাতা বৃদ্ধি করে কর্মচারীদের উৎসব ভাতা বৃদ্ধি না করার প্রতিবাদে সারা দেশের ন্যায় ফেনীতেও তিন শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মবিরতি পালন করেছে বেসরকারি স্কুল কলেজ ও মাদ্রাসার তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীরা। 

বুধবার(২৮ মে) সকাল ১০ ঘটিকা থেকে বেলা ১২ ঘটিকা পর্যন্ত উক্ত কর্মবিরতি ও কালো ব্যাজ ধারন কর্মসূচী পালিত হয় । এ সময় কর্মচারীরা তাদের উৎসব ভাতা বৃদ্ধির করার জন্য সরকারের নিকট জোর দাবী জানান। 

জানা যায়,  অর্থ মন্ত্রনালয়ের প্রবিধি অনুবিভাগের উপসচিব মোসা: শরিফুন্নেছা স্বাক্ষরিত ২৬ মে প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনে শিক্ষকদের বিদ্যামান ২৫% থেকে উৎসব ভাতা ৫০% বৃদ্ধি করা হবে মর্মে জানানো হয়। এ ছাড়া কর্মচারীদের পূর্বের ন্যায় ৫০% বহাল থাকবে মর্মে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে কম বেতনস্কেল ভুক্ত তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারীরা ক্ষোভে ফুঁসে ওঠেন। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফেনী জেলা তৃতীয় শ্রেনী কর্মচারী পরিষদের সভাপতি ও ফেনী আলিয়া মাদ্রাসার অফিস সহকারী আনোয়ার হোসেন ভুঞা জানান, বেসরকারি শিক্ষকদের ২৫% থেকে ৫০% বৃদ্ধি করে দুইটি উৎসব ভাতা প্রদান করা হবে আর কর্মচারীদের কোন ভাতা বৃদ্ধি হবেনা,এটি হতে পারেনা। এটি একটি হটকারী সিদ্ধান্ত। আমরা সরকারে নিকট জোর দাবী জানাবো যাতে কর্মচারীদের উৎসব ভাতা বৃদ্ধি করা হয়। 
 
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৃতীয় কর্মচারী সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সেক্রেটারি ও ফেনীর করিম উল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী আদনান হাবিব জানান, আমরা এমপিও ভুক্ত (স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি) শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহে কর্মরত কর্মচারীবৃন্দরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে  নিরবিচ্ছিন্ন সেবা প্রদান করে আসছি। আমাদের কর্মচারীদের বেতন স্কেল কম হওয়াতে মানবেতর জীবন যাপন করে আসছি। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশে কর্মচারীরা নিম্ন বেতন স্কেল ভুক্ত হিসেবে কর্মরত। আমারা নানান বৈষম্যের শিকার। 

সেই দিক থেকে মানবিক বিবেচনা করে তৎকালিন ২০০১ থেকে ২০০৬ মেয়াদে বিএনপি জোট ভুক্ত চারদলীয় ঐক্য জোট সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন ২০০৩ সনের জুলাই মাসে তৎকালিন শিক্ষামন্ত্রী ড. ওসমান ফারুকের সভাপতিত্বে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের এক সভায় সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে বেসরকারী শিক্ষকদের বছরে দুই ভাগে মূল বেতনের ৫০% এবং কর্মচারীদের মূল বেতনের ১০০% উৎসব ভাতা প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়। 

তার প্রেক্ষিতে প্রতি বছর শিক্ষকগণ ২৫% করে দুইটি উৎসব ভাতা এবং কর্মচারীগণ ৫০% করে দুইটি উৎসব ভাতা পেয়ে আসছেন। কিন্তু সম্প্রতি শিক্ষকদের ভাতা বৃদ্ধি করে কর্মচারীদের ভাতা বৃদ্ধি না করা একটি গভীর ষড়যন্ত্র বলে প্রতিয়মান হয়। আমি অবিলম্বে কর্মচারীদের উৎসব ভাতা বৃদ্ধির জন্য সরকারের কাছে জোর দাবী জানাই।

ফেনীর রামপুর নাসির মেমোরিয়াল কলেজের চর্তুথ শ্রেনীর কর্মচারী নুরুল আলম জানান, এমনিতে শিক্ষকদের তুলনায় আমাদের বেতন স্কেল কম। তার উপর যদি এমন বৈষম্য মুলক উৎসব ভাতা প্রদান করে তাহলে আমাদের বেঁচে থাকার অধিকার সংকুচিত হবে। 

আমি সরকারের নিকট জোর দাবি জানাবো যাতে পূর্বের প্রজ্ঞাপন বাতিল পূর্বক আমাদের উৎসব ভাতা বৃদ্ধি করা হয়।