ফটিকছড়িতে ময়লা ও মল বর্জ্য ফেলতে খালে দেয়া হল পাইপ লাইন

প্রকাশ | ২৯ মে ২০২৫, ১৩:৪১

ফটিকছড়ি ( চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
ময়লা ও মল বর্জসহ টয়লেটের সেফটি টাংকির পানি ফেলার জন্য দেয়া হয়েছে পাইপ লাইন -যায়যায়দিন

ধুরুং খাল। খালের দুই পাশে অসংখ্য ঘরবাড়ি, দোকানপাট, মসজিদ মাদ্রাসা ও হাট-বাজার। 

খালটি দিন দিন ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হচ্ছে। এ খালে ময়লা ও মল বর্জসহ টয়লেটের সেফটি টাংকির পানি ফেলার জন্য দেয়া হয়েছে পাইপ লাইন।

জানা যায়-ফটিকছড়ি পৌরসভা, নাজিরহাট পৌরসভা, রোসাংগিরি ইউনিয়নসহ গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি ইউনিয়ন এর পানি নিষ্কাশনের গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখছে মরা ধুরুং খালটি।

 কিন্তু এ খালে দালানের ময়লা বর্জসহ টয়লেটের সেফটি টাংকির পানি পড়ায় পরিবেশের চরম বিপর্যয় ঘটছে। সম্প্রতি ফটিকছড়ি পৌরসভার, নাজিরহাট পৌরসভা ও সুন্দরপুর ইউনিয়নের সংযোগস্থল বারৈয়ারহাট বাজারের সামনে ধুরুং খালের উপর একটি ব্রীজ নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। 

এ কাজের সুযোগ নিয়ে ব্রীজ থেকে ৫০-৭০ফুট পশ্চিমে একটি বহুতল ভবনের সেফটি টাংকির পানি খালে পেলার জন্য কৌশলে মাটির গভীর দেয়া হয়েছে পাইপ লাইন।

স্থানীয়রা জানান- ব্রীজের পাশে ৫তলা একটি ভবন রয়েছে। ভবনের যে মল বর্জ্য তা পেলার জন্য প্রায় ৮-১০ ফিট মাটির গভীর দিয়ে বড় আকারের পাইপ দেয়া হয়েছে। এ পাইপ দিয়ে বহুতল এ ভবনের মলবর্জ্য গিয়ে পড়বে। শুধু ময়লা-আবর্জনাতে খালটি ধ্বংস হচ্ছে তা নয়, দখলদারদের দখলদারিত্বেও খালের সর্বনাশ হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে বারৈয়ারহাট বাজারের প্রবীণ ব্যাবসায়ী মোঃ আলতাফ বলেন, খালের পাশে আমরা দোকান নিয়ে বসে থাকি। টয়লেটের এসব ময়লা খালে পড়লে দুর্গন্ধ ছড়াবে, এতে স্বাস্থ্য ঝুঁকির পাশাপাশি ব্যবসাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

নাম প্রকাশে অঅনিচ্ছুক প্রবীণ এক ব্যবসায়ী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, একটি ভবনের জন্য পুরো বাজার এলাকার পরিবেশ আজ নষ্ট হতে যাচ্ছে। এটা যদি এখনই বন্ধ না করা হয়, ভবিষ্যতে আরও অনেকেই রাতের আঁধারে এ ধরনের অনৈতিক কাজ করবে। এখনো সময় আছে, অবিলম্বে ওই বর্জ্য নিষ্কাশন পাইপটি উচ্ছেদ করতে হবে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দা কায়ছার মাহমুদ বিজয় বলেন,
“নিষ্কাশনের এ ধরণের ব্যবস্থা পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। পানির মধ্যে মলবর্জ্য মিশে গেলে এতে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের সৃষ্টি হয় যা বিভিন্ন রোগের কারণ হতে পারে। এটি জনস্বাস্থ্যের জন্য সরাসরি হুমকি । বহুতল যে ভবনটি থেকে মলবর্জ্য পেলার পাইপটি দেয়া হয়েছে এটি দ্রুত বন্ধ করার ব্যবস্থা করা হোক”।

এ ব্যাপারে মুঠোফোনে একাধিকবার দালানের সামনে দেয়া নাম্বারে যোগাযোগ করলেও কল ধরেনি।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন- খালে ময়লা আবর্জনা পেলার কোন সুযোগ নেই। এমন কিছু যদি হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।