কাদের-চুন্নুসহ আড়াইশ জাপা নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা
প্রকাশ | ০১ জুন ২০২৫, ১৯:০৮

বরিশালে গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের হত্যা চেষ্টার অভিযোগে জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের, মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুসহ ২৮০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা
গণঅধিকার পরিষদের বরিশাল মহানগর কমিটির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট শফিকুল ইসলাম সাগর মামলাটি দায়ের করেন। কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, রোববার (১ জুন) মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।
মামলায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের, মহাসচিব মজিবুল হক চুন্নু, সাইদুল ইসলাম ট্যাপা, রুহুল আমিন, রত্মা আমিন, হাফিজ আহম্মেদ, ব্যারিস্টার আমিনুল ইসলাম মাহমুদ, অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মাসুতউদ্দীন চৌধুরি, একেএম সেলিম ওসমান, আশরাফুজ্জামান আশু, মোস্তাফিজুর রহমানসহ নামধারী ৩০ জন এবং অজ্ঞাতনামা আড়াইশজনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার বাদী শফিকুল ইসলাম সাগর বলেন, শনিবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে নগরীতে ছাত্র অধিকার পরিষদের হেল্প ডেস্ক খোলা হয়েছিল। বিকেলে সেখানে দায়িত্বপ্রাপ্ত ছাত্র অধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ নগরীর ফকিরবাড়ি রোডে চা পান করছিলেন।
এ সময় জাতীয় পার্টির জেলা ও মহানগর কার্যালয় থেকে নেতাকর্মীদের একটি মিছিল বের হয়। মিছিলে প্রধান উপদেষ্টাসহ গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের কটূক্তিমূলক এবং সরকারের সমালোচনা করে স্লোগান দেয়া হয়। তখন তাদের পক্ষ থেকে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের সরকারবিরোধী স্লোগান না দিতে বিনয়ের সাথে অনুরোধ করা হয়।
কিন্তু জাতীয় পার্টি এবং আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা যৌথভাবে বেআইনি জনতাবদ্ধে রামদা, দা, চাপাতি, পিস্তল, লোহার রড, বাঁশ, ইট নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে বরিশাল জেলা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি এইচএম শামীম রেজা, সাধারণ সম্পাদক এইচএম হাসান, মহানগর গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন তালুকদার ফয়সাল, যুব অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা মিরাজুল ইসলাম, মহানগর গণঅধিকার পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহাগ ফরাজী, সদর উপজেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি কে.এম মাইনুলসহ আরো ১৫-২০ জন নেতাকর্মী গুরুতর আহত হন। এছাড়াও আরো অনেকের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত লাগে।
পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে পুলিশের সহায়তায় আহতদের চিকিৎসার জন্য শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় রোববার এ মামলাটি দায়ের করা হয়েছে বলে বাদী শফিকুল ইসলাম সাগর জানান।
এদিকে জাতীয় পার্টি বরিশাল মহানগরের আহ্বায়ক মহসিন উল ইসলাম হাবুল জানান, রংপুরের হামলার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে শনিবার (৩১ মে) বিকেলে বরিশালে জাতীয় পার্টির একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি ফকিরবাড়ি থেকে সদর রোডের দিকে যাওয়ার পথে সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। এতে তিনি নিজেসহ জেলা সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট এম এ জলিল, যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম গফুর, আক্তার রহসান সফরু এবং তরুণ পার্টির আহ্বায়ক জুম্মান হায়দার আহত হন। তাদের মধ্যে জুম্মান হায়দারকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পরে রাতে সন্ত্রাসীরা জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টির দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, শনিবার রাত ৮ টার দিকে গণঅধিকার পরিষদের কিছু নেতাকর্মী নগরীর সদর রোডস্থ অশ্বিনী কুমার হলের সামনে থেকে মিছিল বের করে জাতীয় পার্টিকে ‘ফ্যাসিস্টের দোসর’ আখ্যা দিয়ে ও নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে স্লোগান দিতে থাকে। মিছিলটি কাকলীর মোড় হয়ে ফকিরবাড়ি রোডের মুখে আসে।
একপর্যায়ে তারা ফকিরবাড়ি রোডের সিহাব ভিলার দ্বিতীয় তলায় জাতীয় পার্টির অফিসে ভাঙচুর চালায়। কার্যালয়ের চেয়ার, টেবিল, আলমারি তছনছ করে ব্যানার ও সাইনবোর্ড ভেঙে ফেলে চলে যায় মিছিলকারীরা।