সীতাকুণ্ডে টানা বর্ষণে পৌরসভাসহ ৯টি ইউনিয়নে জলাবদ্ধতা
প্রকাশ | ০২ জুন ২০২৫, ১৫:৪০

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে টানা বর্ষণে পৌরসভা সহ ৯টি ইউনিয়নের সাগরের তীরবর্তীতে থাকা বেড়িবাঁধ এলাকার বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। সরেজমিনে পৌরসভাসহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে এই চিত্রগুলো চোখে পড়ে।
অন্যদিকে কৃষকের সদ্য রোপন করা বিভিন্ন প্রজাতির সবজি ঢলের পানিতে গোড়ায় পানি জমে জলাবদ্ধতায় নষ্ট হওয়ার পথে।
এদিকে সীতাকুণ্ড পৌরসভাধীন শেখ নগর এলাকার বাসিন্দা রিগান দাশ বলেন কয়েকদিনের টানা বর্ষণে এবং পাহাড় থেকে ধেয়ে আসা ঢলের পানিতে পুরো এলাকা পানিতে নিমজ্জিত হয়ে গেছে ।
এতে করে ঘর থেকে বের হওয়ার কোন উপায় নেই। বাড়ির চারদিকে যেন পানিতে থৈথৈ করছে অনেকটা। শুধু তাই নয় বাড়ির সড়কের ও হাঁটু পরিমাণ পানি।
অপরদিকে মুরাদপুর ইউনিয়নের এক প্রবীণ কৃষক মো. আইয়ুব আলী বলেন, বিভিন্ন ইউনিয়নে সেচের মাধ্যমে আউশ ধানের চারা লাগালেও আমি চলতি বছরে এখনো আউশ ধানের চারা পানির অভাবে লাগাতে পারিনি।
হয়তো রাতের মধ্যেই ভারী বর্ষণের আশঙ্কা করা হচ্ছে। ভারী বর্ষণ হলে খিরা ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বর্তমানে আমি ৭২ শতক জমিতে খিরা লাগিয়েছি। এতে খরচ হয়েছে আমার প্রায় ৮০ হাজার টাকার মত। তিনি বলেন ভাই ১৫ থেকে ২০ দিন আগেও আমরা বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করছিলাম।
তখন আর বৃষ্টি হয়নি। কারণ বৃষ্টি না হলে আউশ ধানের চারা লাগানো সম্ভব হয় না কৃষকের।
তাই এতদিন বৃষ্টির প্রহর গুনছিলাম মুরাদপুর এলাকার কৃষকরা সবাই। কিন্তু এখন যেভাবে ভারী বর্ষণ হচ্ছে তাতে করে সদ্য রোপন করা সবজির চারাগুলো নষ্ট হয়ে যাবে। একই এলাকার কৃষক মো. আজম জানান, বিশেষ করে মুরাদপুর ইউনিয়নের গুলিয়াখালি স্লুইচ গেটগুলো দীর্ঘকাল ধরে অকেজো হয়ে পড়ে আছে।
সাগরের জোয়ারের পানি ও পাহাড়ি ঢলের পানি এক হয়ে জমিগুলোতে জোয়ার ও পাহাড়ি ঢলের পানি ঢুকে পড়ে। পানি নিষ্কাশনের সু-ব্যবস্থা না থাকায় এ অবস্থা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এছাড়া পৌরসভা সহ বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষক পরিবারগুলো জানান, বর্তমানে কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও পাহাড় থেকে ধেয়ে আসা ঢোলের পানি জমিতে প্রবেশ করে সদ্য রোপন করা বিভিন্ন প্রজাতির সবজির চারা গাছ তলিয়ে গেছে। পানি নিষ্কাশনের কোন ব্যবস্থা না থাকার কারণে এই অবস্থা হয়েছে।
গ্রামে যেসব ছড়াও খাল রয়েছে ওসব খাল দিয়ে পানি চলাচল করতে পারছে না। কারণ সাগরের বেড়িবাঁধ এলাকার স্লুইচ গেট অকেজো।
এতে করে পানি নিষ্কাশনে বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে। এদিকে সীতাকুণ্ড আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মো. ইমরান জানিয়েছেন ২৪ ঘন্টায় ১৬০ মিলিমিটার অতি ভারী বর্ষণ হয়েছে। আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত নিম্নচাপের প্রভাব থাকবে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে সীতাকুন্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘দুর্যোগ মোকাবেলায়
আমরা সব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি । সীতাকুণ্ড কোথাও কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। তবে বড় ধরনের কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।’