টানা বর্ষণে উখিয়া গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত, পাহাড ধ্বসে নিহত ১

প্রকাশ | ০২ জুন ২০২৫, ২০:০২

উখিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
ছবি: যায়যায়দিন

কয়েকদিন ধরে টানা ভারী বৃষ্টি,দমকা হাওয়া,  পাহাড়ি ঢল ও সাগরের জোয়ারের পানিতে কক্সবাজারের উখিয়ায়  গ্রামের পর গ্রাম নিম্নাঞ্চলে প্লাবিত হয়েছে। পানি বন্ধি হয়ে পড়েছে  অন্তত ২০টি গ্রামের মানুষ।   রোহিঙ্গা ক্যাম্পে  দেয়াল ধ্বসে  মোঃ আয়াজ (২২) নামের এক রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে।

মৌসুমী বর্ষণে  গ্রামীণ সড়ক ও কালভার্ট বিধ্বংস হওয়ার পাশাপাশি সবজি ক্ষেত পানের বরজ ও কাঁচা ঘরবাড়ি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পানি বিপদ সীমানা অতিক্রম করায় পুকুর ও  মৎস্য ঘের ডুবে গিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকার মাছ ভেসে গেছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হোসেন চৌধুরী সহ সরকারি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা পানিবন্দি এলাকা পরিদর্শন করেছেন। গতকাল রাতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে জালিয়া পালংয়ের  ডেইল পাড়া সহ উপকূলী এলাকায় এবং হলদিয়া পালং ইউনিয়নের রুমখা চৌধুরী পাড়া সহ বিভিন্ন ইউনিয়নে  পানি বন্দী মানুষকে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

এছাড়াও  গতকাল রাত থেকেই ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসরত মানুষকে নিরাপদ আশ্রয় স্থলে নিয়ে আসার জন্য সিপিপি সদস্যরা কাজ করছে। খোলা রাখা হয়েছে সাইক্লোন সেন্টার।

সরজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, হলদিয়া পালং ইউনিয়নের রুমখা চৌধুরী পাড়া, মনি মার্কেট, কোলাল পাড়া, চর পাড়া, বৌ বাজার, সাবেক রুমখা,  পাতাবাড়ি, পাগলির বিল,  রাজা পালং ইউনিয়নের  তুতুরবিল, হিজলিয়া, পিনজিরকুল, মাছকারিয়া, চাকবৈটা, কুতুপালং, দরগাহ বিল, হরিনমারা, ডিগলিয়া পালং,  জালিয়া পাল ইউনিয়নের লম্বরী পাড়া,সোনার পাড়া, মনখালী, রেজুর মোহনা,  রত্না পালং ইউনিয়ন সাদৃকাটা, গয়াল মারা, পূর্ব রত্না, পশ্চিম রত্না,  ও পালংখালী ইউনিয়নের বালুখালী, থাইংখালী আনজুমান পাড়া, রহমতের বিল  অন্তত ৩০ টি গ্রামে নিম্নাঞ্চলে প্লাবিত হয়েছে। 

পানি বিপদ সীমানা উপরে ওঠায় অসংখ্য  মৎস্য ঘেরের মাছ ভেসে গেছে।  হলদিয়া পালং ইউনিয়ন পরিষদ  চেয়াম্যান  ইমরুল কায়েস চৌধুরী  সারাদিন পানিপন্দি মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে মানবিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। রান্না করে খাবার বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে দিচ্ছেন তিনি।

পালং খালী   ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী  জানান, টানা বর্ষণে মানুষের জীবনযাত্রা চরমভাবে ব্যাহত হয়েছে। রাজা পালং ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান  মীর সাহেদুল ইসলাম রোমান, বেশ কয়েকটি পানিবন্দি এলাকায় শুকনো খাবার বিতরণ করেছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা  এটিএম কাউছার আহমেদ জানান, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে পানিবন্দী পরিবারগুলোকে শুকনে খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও হলদিয়া পালং ইউনিয়ন সহ অন্যান্য ইউনিয়নের বেশ একটি গ্রামে রাত্রে খাবার সরবরাহ করার   উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

এদিকে   উখিয়ার ২ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি ৩ ইস্ট ব্লকে মাটির দেয়াল ধ্বসে  রোহিঙ্গা মোহাম্মদ আয়াস (২২) নিহত হয়েছে।  তিনি ওই ক্যাম্পের আবুল ফয়েজের ছেলে এবং আহত কামাল উদ্দিন (১২) একই ক্যাম্পের বাসিন্দা।

সিআইসি জানান, গতকাল সোমবার ভোরে ২ নম্বর ক্যাম্পের পাশের একটি দেয়াল ধসে পড়লে দুই রোহিঙ্গা আহত হন। সেখান থেকে মোহাম্মদ আয়াজ কে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

জানা গেছে  ওই দুই রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে নতুন এসেছেন। দুইজনেই মোহাম্মদ আয়াসের বোনের বাড়িতে অস্থায়ীভাবে অবস্থান করছিলেন । তারা এখনও নিবন্ধন ইউনিট থেকে বায়োমেট্রিক নিবন্ধন কার্ড পায়নি।