চাঁপাইনবাবগঞ্জে ইউনিয়ন পরিষদের চুরি হওয়া ১৭বস্তা চাল উদ্ধার
প্রকাশ | ০৪ জুন ২০২৫, ০৯:৩৪

চাঁপাইনবাবগঞ্জের চাটাইডুবি এলাকা থেকে ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের পাশের একটি বাড়ির ঘর থেকে ভিজিএফের ১৭ বস্তা চাল সরকারি বস্তার চাল চেঞ্জ করে নিজস্ব বস্তায় রূপান্তর করে রাখে(প্রতি বস্তার ওজন ৫০কেজি) উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৩ জুন) বিকেলে চাটাইডুবি এলাকার শরিফ উদ্দিনের বাড়ি থেকে এসব চাল উদ্ধার করা হয়। তবে এ ঘটনায় কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
জানা যায়, স্থানীয় লোকজনের সন্দেহ হলে বিকেলে শরিফ উদ্দিনের বাড়িতে গিয়ে একটি ঘরে তল্লাশি চালায়৷ এসময় ১৭ বস্তা চাল দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা বাড়ি ঘেরাও করে রাখে এবং পুলিশকে খবর দেয়। পরে মো. শাহিনুর আলম সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার উপস্থিতিতে এসব চাল উদ্ধার করা হয়।
তরিকুল ইসলাম, বারিউল ইসলামসহ স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, মঙ্গলবার সকালে ভিজিএফের কার্ড নিয়ে গিয়েও চাল না পেয়ে ফিরে আসে। পরে ক্ষিপ্ত হয়ে বিকেলে শরিফের বাড়িতে তল্লাশি করে। তাদের দাবি, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন আওয়ামী লীগের দোসর (সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সদর উপজেলা শাখা) ও ইউপি সদস্য মনিরুল খোকা অজ্ঞাত ব্যক্তির কাছে চালগুলো বিক্রি করেছিলেন।
এর আগে এই বাড়ি থেকে আরও ৭৫ বস্তা(প্রতি বস্তার ওজন ৫০কেজি) হতদরিদ্রদের ইদ উপহারের চাল বিক্রি করা হয়েছে বলে জানান বাড়ির মালিক শরিফ উদ্দিনের মা ফাতেমা বেগম। তিনি আরও জানান,গত ইদুল ফিতরের সময়েও প্রায় ১০০ বস্তা চাল (প্রতি বস্তার ওজন ৫০কেজি) বাড়িতে রাখা হয়েছিল। তবে বাড়িতে চাল রেখে যাওয়া কয়েকজন ব্যক্তির মধ্যে মিলন নামের একজনকেই তিনি চিনেন বলে জানান তিনি।
স্থানীয় চায়ের দোকানদার মো. বাবু বলেন, বাইরের কিছু লোক শরিফের বাড়ি থেকে দুটি টিলারে করে গত কয়েকদিন আগে ৬০ থেকে ৭০ বস্তা চাল সরকারি বস্তার চাল চেঞ্জ করে নিজস্ব বস্তায় রূপান্তর করে রাখে (প্রতি বস্তার ওজন ৫০কেজি) নিয়ে যায়।
জানা যায়, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন আওয়ামী লীগের দোসর (সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সদর উপজেলা শাখা) ও মেম্বাররা মিলে এই চাল বিক্রি করেছে। হতদরিদ্রদের চাল মেরে দিয়ে তারা নিজেদের পকেটে ভরেছে।
এ নিয়ে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও ফোন রিসিভ করেননি ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন আওয়ামী লীগের দোসর (সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সদর উপজেলা শাখা) প্যানেল চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য মনিরুল ইসলাম খোকা মুঠোফোনে জানান, এই চালের সাথে আমাদের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। নিয়ম অনুযায়ী যার কাছে কার্ড পাওয়া গেছে, তাদেরকে চাল বিতরণ করা হয়েছে। চাল নেয়ার পর তারা কারো কাছে বিক্রি করে হয়ত মজুদ করেছিল। এর সাথে কে বা কারা জড়িত তা আমাদের জানা নেই।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. শাহিনুর আলম বলেন, স্থানীয় লোকজন ভিজিএফের চাল আটক করেছে এমন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশের উপস্থিতিতে ১৭ বস্তা চাল(প্রতি বস্তার ওজন ৫০কেজি) আরও উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এর আগে আরও প্রায় ৭৫ বস্তা চাল (প্রতি বস্তার ওজন ৫০কেজি) ভ্যানে করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। চালগুলো জব্দ করে থানায় হস্তান্তর করা হবে এবং অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মতিউর রহমান বলেন, মো. শাহিনুর আলম সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার উপস্থিতিতে ১৭ বস্তা চাল (প্রতি বস্তার ওজন ৫০কেজি) উদ্ধার করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে সদর মডেল থানা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ তদন্তপূর্বক আইন অনুগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।