হত্যাচেষ্টা মামলা

বাউফলে যুবলীগ সভাপতি ও আ’লীগ নেতার ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড

প্রকাশ | ০৪ জুন ২০২৫, ১৭:৫৪

বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি

হত্যাচেষ্টা মামলায় পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মো. শাহজাহান সিরাজ (৫২) ও মদনপুরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মাহবুবুর রহমানসহ (৫০) চার ব্যক্তিকে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। 

এ ছাড়াও ১০ ব্যক্তিকে বিভিন্ন মেয়াদে (৯ ও ৬ বছর) সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আর চার ব্যক্তিকে বেকসুর খালাস দেন আদালত। 

তাদের বিরুদ্ধে চাঁদা না দেওয়ায় মো. মনিরুল ইসলাম শাহিন (৪০) নামের এক যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ ছিল। এ মামলায় পটুয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক একেএম এনামুল করিম গতকাল মঙ্গলবার (৩ জুন) দুপুর দুইটার দিকে ওই রায় ঘোষণা করেন। 

রায় ঘেষণার সময় আসামিদের মধ্যে ১০ বছর দণ্ডপ্রাপ্ত অভিযুক্ত ১ নম্বর আসামি আওয়ামী লীগ নেতা ও ছোট ডালিমা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমান ও ২ নম্বর আসামি যুবলীগ নেতা শাহজাহান সিরাজ এবং ৩ নম্বর আসামি মো. রফিজ মৃধা (৪০) আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন। 
তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্ত অন্য অভিযুক্ত ১১ ব্যক্তিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ওই আদালতের অতিরিক্ত পিপি আইনজীবী মো. ফরিদ হোসেন এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

তবে রায় ঘোষণার সময় বাদী মোসলেম উদ্দিন মৃধা অনুপস্থিত ছিলেন। তাকে ও তার ছেলে মনিরুল ইসলামকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ওইদিন বিকেলে ঘরে ঢুকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর আহত করে সন্ত্রাসীরা। তখন মোসলেম উদ্দিনের দুই হাত ও দুই পা ভেঙে যায়। 
তখন গুরুতর মনিরুল ইসলামকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান। মনিরুল ইসলাম ছিলেন মদনপুরা ইউনিয়ন যুবলীগের সহসভাপতি ও ওষুধ ব্যবসায়ী ছিলেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ১ মে বিকেল চারটার দিকে উপজেলার মদনপুরা গ্রামের চন্দ্রপাড়া এলাকায় মো. মোসলেম মৃধার ছেলে শাহিনকে প্রকাশ্যে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে সন্ত্রাসীরা। ওই ঘটনায় ৪ মে পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আমলি আদালতে ৩২ জনের নাম উল্লেখ করে আরও অজ্ঞাতনামা ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন মোসলেম উদ্দিন মৃধা।

মামলাটি বাউফল থানা পুলিশ তদন্ত করে ১১ জনের নাম বাদ দিয়ে ২১ জনের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ওই অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে বাদী মোসলেম উদ্দিন আপত্তি জানালে মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেষ্টিকেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করার দায়িত্ব দেন। 
পিবিআই ২০১৬ সালের ১৬ এপ্রিল ৩২ জনের নামেই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। ওই অভিযোগপত্রের ওপর দুই পক্ষের আইনজীবীদের শুনানি শেষে আদালতের বিচারক ১৮ জনের নামে চার্জ গঠন করে বিচারকার্য শুরু করেন। গতকাল  মঙ্গলবার রায় ঘোষণা করা হয়।