চট্টগ্রামে ৬ শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ: মাদ্রাসা শিক্ষকের আমৃত্যু কারাদণ্ড
প্রকাশ | ০৪ জুন ২০২৫, ১৯:৪৪ | আপডেট: ০৪ জুন ২০২৫, ১৯:৪৯

চট্টগ্রামে ছয় শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় নাজিম উদ্দিন (৪১) নামে এক মাদ্রাসা শিক্ষককে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। আমৃত্যু কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ডও দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (৪ জুন) চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক ফেরদৌস আরা আসামির উপস্থিতিতে এ রায় দিয়েছেন।
দণ্ডিত নাজিম উদ্দিন (৪১) চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশে মক্কা হোটেলের পাশের গলির রহমানিয়া তাহফিজুল কোরআন একাডেমির পরিচালক ও শিক্ষক ছিলেন। তার বাড়ি চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার পূর্ব ধুরং গ্রামে।
ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারী কফিল উদ্দিন জানান, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৯(১) ধারায় ছয় শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় আসামি নাজিম উদ্দিনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড করেছেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় আসামি নাজিম উদ্দিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আসামি তদন্তকালীন সময়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিল।
মামলার নথিতে থাকা তথ্য অনুযায়ী, নাজিম উদ্দিন ২০১৯ সালের ১৫ আগস্ট থেকে ২০২১ সালের ১ মার্চ পর্যন্ত বিভিন্নসময়ে মাদরাসার ছয় ছাত্রকে জোরপূর্বক ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রত্যেককে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। ২০২১ সালের ৪ মার্চ আক্রান্ত এক ছাত্রের বড় ভাইয়ের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে পুলিশ মাদরাসায় অভিযান চালায়। তখন আরও পাঁচ ছাত্র পুলিশের কাছে একই অভিযোগ করেন।
এরপর ওই ছাত্রের বড় ভাই বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় নাজিম উদ্দিনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ নাজিমকে গ্রেফতার করে। নাজিম আদালতে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।
এ ঘটনায় তদন্ত শেষে পুলিশের দাখিল করা অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ১২ বছর বয়সী এক ছাত্রকে এবং ২০২০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি রাতে ১৩ বছর বয়সী আরেক ছাত্রকে ধর্ষণ করেন নাজিম। ২০২০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে এক ছাত্রকে এবং ওই বছরের ১৮ মে আরেক ছাত্রকে তিনি ধর্ষণ করেন। এরপর ২০১৯ সালের ১৫ আগস্ট রাতে মামলার বাদীর ছোট ভাই ১১ বছর বয়সী শিশুটিকে মাদরাসার অফিস কক্ষে নিয়ে ধর্ষণ করেন নাজিম। একই বছরের ১৬ ডিসেম্বর ১৬ বছর বয়সী আরেক শিশুকে ধর্ষণ করেন।
শিক্ষার্থীরা যাতে তাদের বাবা-মায়ের কাছে ধর্ষণের বিষয়ে মুখ না খোলে এজন্য তাদেরকে ভয়ভীতি দেখিয়ে নাজিম মারধর করতেন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।