ঈদের পরের ১০ দিনে কোন চামড়া জেলার বাইরে যাবে না: রাজশাহী ডিসি
প্রকাশ | ০৫ জুন ২০২৫, ১৪:০৯

কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে চামড়া সংরক্ষণে দুর্নীতি ও অপচয় ঠেকাতে রাজশাহী জেলায় ২৬৩.৩ মেট্রিক টন লবণ বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। এই লবণ মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিংগুলোর মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে চামড়া জেলার বাইরে নেওয়ার ওপর ঈদের পর প্রথম ১০ দিন নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার বলেন, এবারের ঈদ-উল-আযহাকে সামনে রেখে বড় একটি বিজনেস আছে সেটা হলো চামড়া নিয়ে। সরকার একটি বড় ও ভালো পদক্ষেপ নিয়েছে। আমাদের এলাকায় যেসব ইয়াতিমখানা, মাদ্রাসা-মসজিদ আছে যারা এই চামড়া গুলোকে সংগ্রহ করে তারা বিগত কয়েক বছরে বিষণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এই ব্যাবসাটি একদম ধ্বংস হওয়ার পথে। রুট লেভেলে এব্যবসাটিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য বিনামূল্যে বিতরণের জন্য বরাদ্দ চলে এসছে এবং লবণ ক্রয়ের প্রক্রিয়া শেষ করে বিতরনের কাজ শেষ করতে যাচ্ছি। তালিকাভূক্ত প্রতিষ্ঠান বা কতগুলো পশুর চামড়া ক্রয় করবেন সেই ভিত্তিকে এসব বিতরণ করা হবে।
তিনি চামড়া ব্যবসায়ীদের ক্ষতির মুখ হতে বাঁচতে আরো বলেন, কোরবানী ঈদের পরের ১০ দিন কোন কোন পশুর চামড়া জেলার বাইরে যাবে না। বাংলাদেশের ৬৪টি জেলায় একই সিদ্ধান্ত যে, ১০টি দিন চামড়াগুলো আমরা সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করে রাখবো। এরপর ধীরে ধীরে চামড়াগুলো আমরা বাজারজাত করবো। যাতে করে আমাদের যারা চামড়া ব্যবসায়ী আছেন তারা কোন ক্ষেত্রে লসের সম্মুখীন না হয়। রাজশাহী জেলা প্রশাসন এসব বিষয়ে সব সময় সহযোগিতায় আছেন বলেও জানান।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী লবণ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে এবং ঈদের আগেই তা বিতরণ কার্যক্রম প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মির্জা ইমাম উদ্দিন বলেন, “উপজেলাভিত্তিক তালিকা তৈরি করে নির্ধারিত প্রতিষ্ঠানগুলোর মাঝে এই লবণ পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় ইউএনওরা তদারকি করছেন এবং মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা পর্যবেক্ষণ করছেন।”
গোদাগাড়ী উপজেলার ইউএনও ফয়সাল আহমেদ জানান, “আমরা ১৫টি প্রতিষ্ঠানকে ইতোমধ্যে লবণ বিতরণ করেছি এবং তাদের চামড়া সংরক্ষণের বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছি। আশা করছি এ বছর ক্ষতির মুখে পড়তে হবে না।”
চামড়া শিল্পে এই সময়োপযোগী সরকারি উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন রাজশাহীর স্থানীয় চামড়া ব্যবসায়ী ও প্রতিষ্ঠানগুলো। তারা মনে করছেন, এটি একদিকে যেমন দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দেবে, অন্যদিকে চামড়া শিল্পে প্রাণ ফেরাবে। শিল্পেও নতুন প্রাণ ফিরিয়ে আনবে।