শেষ মুহুর্তে ব্যস্ত সময় পার করছেন কামার শিল্পীরা
প্রকাশ | ০৫ জুন ২০২৫, ১৭:১৫

ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে শেষ মুহুর্তে ব্যস্ত সময় পার করছেন চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার কামার শিল্পীরা। সারা বছর তেমন কাজ না থাকলেও ঈদের কয়েক দিন কর্মব্যস্ত থাকেন তারা। আর সেই সঙ্গে তাদের আয়ও ভালো হয়।
আর মাত্র দুইদিন বাকি ঈদুল আজহার। উপজেলার সর্বত্র কয়েক হাজার পশু কোরবানি হবে। এসব পশু কাটতে দরকার হবে ছুরি, চাপাতিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম। তাই প্রতি বছরের মতো এবারও সরগরম হয়ে উঠেছে উপজেলার কামারপাড়াগুলো। এতে কর্মব্যস্ততা বেড়েছে কর্মকারদের। কেউ হাপর টানছেন, কেউ হাতুড়ি পিটিয়ে তৈরি করছেন দা, বটি, ছুরিসহ মাংস কাটার বিভিন্ন সরঞ্জাম। সারা বছর কাজ কম থাকলেও এ সময়টা ব্যস্ত সময় কাটান তারা। তাদের তৈরি দা, চাপাতি, ছুরিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম মান অনুযায়ী কেজি দরে আবার পিস হিসেবেও বিক্রি হচ্ছে। আকারভেদে পশুর চামড়া ছাড়ানোর ছুরি ১৫০ থেকে ২০০ টাকা, দা ২৫০ থেকে ৩৫০, বটি ৩৫০ থেকে ৫০০ এবং পশু জবাইয়ের ছুরি ৮০০ থেকে ১০০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
পশু কোরবানি দিতে ও মাংস কাটার সরঞ্জামের জন্য ক্রেতারা ভিড় করছেন স্থানীয় কামারদের কাছে। বানাচ্ছেন দা, চাপাতি, ছুরিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম। আবার অনেকে তাদের পুরোনো ছুরি, চাপাতি ধারালো করে নিচ্ছেন। উপজেলার বাজালিয়া ইউনিয়নের আবদুল মুবিন বলেন, প্রতিবছর নতুন সরঞ্জাম বানানোর পাশাপাশি পুরোনোগুলো ধার দিতে কামারপল্লিতে আসি। আমাদের গ্রামের পার্শ্ববর্তী খোলা মাঠে পশু কোরবানি দেওয়া হবে। এসব পশু কোরবানি দিতে সরঞ্জাম বানাতে এখানে এসেছি। মজুরি গত বছরের মতোই নিচ্ছে। একই এলাকার মোস্তাক আহমদ বলেন, দুইদিন পরই ঈদুল আজহা। গরু-ছাগল কোরবানি এবং মাংস কাটার জন্য চাকু, ছুরি ও চাপাতি কিনতে কামারপাড়ায় এসেছি।
উপজেলার বাজালিয়া বোমাংহাট বাজারের পুষ্প কর্মকার বলেন, এক সময় কামারদের কদর ছিল। বর্তমানে আধুনিক মেশিনে ছুরি, চাপাতি ও দা তৈরি হচ্ছে। ফলে আমাদের তৈরি সরঞ্জামের চাহিদা কমে গেছে। ঈদুল আজহার সময় কিছু কাজ হলেও সারা বছরই কষ্টে চলতে হয়। এ কারণে অনেকেই এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশা বেছে নিচ্ছেন।
একই বাজারের অন্তর কর্মকার বলেন, ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে, ক্রেতার চাপও বাড়ছে। কেউ চাপাতি, কেউ ছুরি আবার কেউ দা বানাতে ভিড় করছেন। কাজের চাপ থাকায় এক প্রকার খাওয়া-দাওয়া ও ঘুম ছেড়ে দিতে হয়েছে। সারা বছর টুকটাক কাজ করে কোনোভাবে সংসার চালিয়ে নিই। এবারের ঈদ অনেক আয় হবে বলে আশা করছি।