রাজৈরে ঠুয়া দরে বিক্রি কোরবানির গোশত
প্রকাশ | ০৮ জুন ২০২৫, ১০:০৮

মাদারীপুরের রাজৈরে কোরবানি দেওয়া পশুর সংগ্রহকৃত মাংস বিক্রি করা হয়েছে। শনিবার (৭ জুন) রাতে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে উপজেলার টেকেরহাট বন্দর গোল চত্ত্বরে এ দৃশ্য দেখা যায়।
এসময় কয়েক মণ গরু ও ছাগলের মাংস বিক্রি করা হয়। কেউ কেজি দরে, আবার কেউ ঠুয়া দরে (গড় হিসাব) ক্রয় করে নিয়ে যায় স্থানীয়রা।
জানা যায়, আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় সাধ্যমতো গরু ও ছাগল কোরবানি দেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা। পশুর মাংসগুলো কাটার পর তিন ভাগ করেন। এর মধ্যে এক ভাগ নিজেদের পরিবারের জন্য, আরেক ভাগ আত্মীয়-স্বজনদের ও অপর ভাগ গরীব, এতিম-মিসকিন, অসহায়দের মধ্যে বিতরণ করা হয়।
তবে আত্মীয়-স্বজনের ভাগ বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিলেও গরীব-অসহায় পরিবারের সদস্যরা ঘুরে ঘুরে কোরবানির মাংসগুলো সংগ্রহ করেন। এদিকে সারাদিন সংগ্রহ করা মাংসগুলো রাতের বেলা বিক্রি করতে মেলা বসান বেদে সম্প্রদায়ের মানুষ।
তারা পরিবারসহ ঘুরে ঘুরে যত মাংস সংগ্রহ করেন সবই বিক্রি করে দেন এই মেলায়। আর এখান থেকে মাংসগুলো ক্রয় করেন ক্ষুদ্র খাবার হোটেল ব্যবসায়ীসহ স্থানীয়রা।
সরজমিনে দেখা গেছে, প্লাস্টিকের বস্তা ও বাজারের ব্যাগ ভর্তি মাংস নিয়ে মহাসড়কের পাশে বসে আছেন কয়েকজন নারী-পুরুষ। সেখানে ভিড় জমিয়েছেন শত শত মানুষ। কেউ দেখে চলে যাচ্ছেন, আবার কেউ দামাদামি করে ৫০০-৬০০ টাকা দরে মাংস ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন। অনেকেই আবার বস্তা ধরে ঠুয়া কিনে নিচ্ছেন।
স্থানীয়রা জানান, প্রতি বছর কোরবানি ঈদের দিন রাতে এই মাংস বিক্রির মেলা বসায় বেদে সম্প্রদায়ের মানুষ। সারাদিন বাড়ি বাড়ি গিয়ে সংগ্রহ করে যা পায় সবই এখানে এসে বিক্রি করে দেয়। আর এগুলো কিছু ব্যবসায়ীরা কম দামে কিনে নিয়ে তাদের হোটেলে বিক্রি করেন। এছাড়া কম দামে পেয়ে স্থানীয় অনেকেই কিনে নেন। এই টাকা দিয়ে তারা সংসার চালায়। তবে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের উপরে বসায় জীবনের ঝুঁকি থেকে যায়।
এ মেলায় মাংস বিক্রি করতে আসেন তাসকিন নামে বেদে সম্প্রদায়ের এক যুবক। এ সময় তার সাথে এই প্রতিবেদকের কথা হয়। তিনি বলেন, আমরা ৪ জন মিলে প্রায় ২০ কেজির মতো মাংস পেয়েছি। এগুলো ৫০০-৫৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে দেব। যা টাকা পাই তা দিয়ে বৌ-বাচ্চা নিয়ে কিছুদিন চলতে পারবো।
বেদে সম্প্রদায়ের আরেক শিশু লামিয়া জানায়, যা মাংস পেয়েছিল সেই সব মাংস ৮৫০ টাকায় বিক্রি করেছে।
সুলতানা নামে আরেকজন বলেন, মাত্র দুই কেজি মাংস পাইছি। কিন্তু বিক্রি করতে পারি নাই। ৬০০ টাকা করে দাম চাইছি।
মেলা থেকে মাংস ক্রেতা জসিম বলেন, ঠুয়া দরে ৪৮০০ টাকা দিয়ে মাংস কিনেছি। পরে পালায় মেপে দেখি ১২ কেজি ওজন হইছে।