ফুলবাড়ীতে তীব্র তাপদাহে অতিষ্ঠ জনজীবর

প্রকাশ | ১৩ জুন ২০২৫, ১৫:৫৩

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
মৃদু তাপপ্রবাহের জন্য দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌরশহরের রাস্তা ফাঁকা থাকছে, প্রয়োজন ছাড়া মানুষ বাড়ীর বাইরে বের হচ্ছেন না। ছবি: যায়যায়দিন

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে তীব্র তাপদাহ  আর ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন । তাপদাহের কারনে বিশেষ কাজ ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না মানুষ। এতেকরে বেশি বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া শ্রমজীবি মানুষ। অনেকে আখের রস, লেবু পানি ও শরবত খেয়ে তৃষ্ণা নিবারন করছেন। সকাল ১০টার পর থেকে বিকেল পর্যন্ত ফাঁকা হয়ে পড়ছে ফুলবাড়ী পৌরশহরের রাস্তাঘাট। তাপদাহ আর গরমে জন্য চাহিদা বেড়েছে দই, ঘোল, শরবত, তালেরশাসসহ কোমল পানীয় গুলোর।

তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রচন্ড গরম অনুভুত হচ্ছে, শ্রমিকসহ মাঠে কাজ করা শ্রমজীবী মানুষেরা তাপদাহে হাপিয়ে উঠছেন। ঘরের ফ্যানের বাতাসও যেন গরম হয়ে উঠছে। এরেই মধ্যে মরার উপর খাড়া ঘাঁ  হয়ে উঠেছে বিদ্যুৎ বিভ্রাট। বেলা বাড়ার সাথে বাড়ছে তাপপ্রবাহ। দুপুরের দিকে তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে ৩৭ গ্রিডি সেলসিয়াস ছুই ছুই অবস্থা।

কৃষকরা বলছেন, তাপদাহের কারণে মাঠে কাজ কারতে গিয়ে হাফিয়ে উঠছেন তারা। তীব্র তাপদাহে জন্য ক্ষেত খামারে বেশিক্ষণ টিকে থাকা যাচ্ছে না। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন নারী কৃষিশ্রমিক রাস্তার কাজ করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ারর খবর পাওয়া গেছে।

পৌর শহরের রিকশা চালক ফকির আলী বলেন, গত কয়েকদিন ধরে ভ্যাপশা গরমে রাস্তায় লোকজন পাওয়া যাচ্ছে না। সকালে রিকশা নিয়ে বের হলেও যাত্রীর অভাবে তেমন আয় রোজগার হচ্ছেনা। রাস্তা থাকছে ফাঁকা। আয় না হওয়ায় অনেকে বিকেলে রিকশা বের করছেন।

বাসচালকরা বলছেন গরম আর তাপদাহের জন্য রাস্তার পিচ গলে যাচ্ছে, এতে করে যানবাহন খুব সতর্কতার সঙ্গে চালাতে হচ্ছে। একটু এদিক ওদিক হলেই দুর্ঘটনার ঘটতে পারে।
দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবহাওয়া বিদ মো. তোফাজ্জর হোসেন বলেন, গত তিনদিন ধরে দিনাজপুর জেলার তাপমাত্রা ৩৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩৭ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস এর মধ্যে উঠানামা করছে।

শুক্রবার (১৩জুন) দুপুর ১২টায় জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৭ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা ৪৯ শতাংশ। একইভাবে গত মঙ্গলবার (১০জুন) তাপমাত্রা ছিল ৩৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং গত সোমবার (৯ জুন) দুপুর ১২টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৬ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস।

তিনি আরো বলেন, বর্তমানে জেলাজুড়ে মৃদ্যু তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকলেও এর তীব্রতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে তাপমাত্রা বৃদ্ধির পাশাপাশি বাতাসের আর্দ্রতা বা জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকার কারনে গরমের তীব্রতা বেশি অনভূত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় বাসাতের গড় আর্দ্রতার পরিমাণ ৬১ শতাংশ।

বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. একেএম রেজাউল আলম লাবু বলেন, বর্তমানে মাঝারী তাপপ্রবাহের জন্য মানুষ সর্দিজ্বর, গলাব্যথা, ডায়রিয়া, পাতলা পায়খানাসহ গরমজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তবে এ সময় রোদ ও গরম এড়িয়ে চলতে ও, বেশি বেশি পানি পান করার পরামর্শ দেন তিনি।