পাংশায় দুই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ: আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন

প্রকাশ | ১৭ জুন ২০২৫, ১৪:২৩

পাংশা (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি
পাংশায় দুই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ব্যানারে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত -যায়যায়দিন

রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলায় প্রাইভেট পড়া শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুই স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে পৃথক দুটি মামলা হয়েছে।

 মামলার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই অভিযুক্ত সিহাব মণ্ডল ও হাসমত আলীকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পাংশা মডেল থানা পুলিশ।

এ ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার (১৭ জুন) দুপুরে আতারুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ব্যানারে হাটবনগ্রাম বাজার এলাকায় বিশাল মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

এতে স্থানীয় শত শত নারী-পুরুষ, শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং এলাকার সচেতন মহল অংশ নেন।

মানববন্ধনে বক্তারা দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত এবং এই ধরনের অপরাধীদের মদতদাতাদেরও আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। 

‘আমার সোনার বাংলায় ধর্ষকের ঠাঁই নাই’, ‘আমার বোনের কান্না আর না আর না’, ‘ধর্ষকের ফাঁসি চাই’ — এমন স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন হাটবনগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সরজিৎ বিশ্বাস, আতারুন্নেছা বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলাম ডাবলু, রাজবাড়ী জেলা ছাত্রদলের নেতা সজীব রাজা, বিদ্যালয়ের শিক্ষক মাওলানা আব্দুল মাজেদ, পল্লী রানী সরকার, কুঠিমালিয়াট গ্রামের রেজাউল ইসলাম, ছাত্রদল নেতা মাহবুব হোসেন প্রমুখ।

বক্তারা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আসামি গ্রেপ্তারে পাংশা থানা পুলিশের দক্ষ ভূমিকায় সন্তোষ প্রকাশ করে অভিযান অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।

এজাহার সূত্রে জানা গেছে, রোববার (১৫ জুন) সকাল ১১টার দিকে উপজেলার সরিষা ইউনিয়নের নওড়া বনগ্রামে এই ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী দুই শিক্ষার্থী আতারুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী।

ভুক্তভোগীদের ভাষ্য অনুযায়ী, প্রাইভেট পড়া শেষে বাড়ি ফেরার সময় অভিযুক্ত সিহাব ও হাসমত আলী পথরোধ করে, পকেট থেকে ব্লেড বের করে ভয় দেখায় এবং পাশের পানের বরজে নিয়ে গিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এ সময় ঘটনাটি জানালে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেয় তারা।

এক ভুক্তভোগীর পিতা বলেন, “প্রকাশ্যে দিবালোকে আমার মেয়েকে ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে। আমি এর দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।”

অপর শিক্ষার্থীর মা বলেন, “প্রাইভেট শেষে মেয়ে বাড়ি ফিরে কান্নাকাটি করতে থাকে। কারণ জানতে চাইলে সে সব ঘটনা খুলে বলে। এই বয়সে আমার মেয়ের সঙ্গে এমন নৃশংস ঘটনা ঘটেছে — এর বিচার চাই।”

স্থানীয়রা জানান, অভিযুক্ত দুইজন এলাকায় মাদক সেবনসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত। এর মধ্যে একজন ডাকাতি মামলায় জেল খেটে কিছুদিন আগেই মুক্তি পেয়েছে।

এ বিষয়ে পাংশা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, “ঘটনার পরপরই থানায় দুটি ধর্ষণ মামলা হয়েছে। আসামি দুজনকেই গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”