অভিযোগ নিতে নারাজ পুলিশ
ভাঙ্গুড়ায় দুর্বৃত্তদের আগুনে নিঃস্ব ৭ পরিবার
প্রকাশ | ১৭ জুন ২০২৫, ১৪:৫৮

পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার খানমরিচ ইউনিয়নের বৃদ্ধমরিচ গ্রামের কাজিপাড়ার মৃত বদিউজ্জামানের ছেলে শাহাদত হোসেনের বাড়িতে একদল দুর্বৃত্তদের দেয়া আগুনে ৭টি পরিবারের ঘর-দরজা, আসবাবপত্র সহ সকল প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র পুড়ে ভষ্ম হয়ে গেছে।
পরিবারগুলি বর্তমান মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিতে গেলে পুলিশ তা নিতে অস্বীকৃতি জানায় বলে দাবি ভুক্তভোগী পরিবারের।
জানা গেছে, গত ৯ জুন দিবাগত রাতে খানমরিচ ইউনিয়নের চন্ডিপুর সিকেবি রোস্তমিয়া আলিম মাদ্রাসার নৈশপ্রহরী ও মসজিদের মোয়াজ্জেন আব্দুল গণিকে ছুরিকাঘাতে নৃশংস ভাবে হত্যা করা হয়। পরদিন ১০ জুন সকালে এই ঘটনায় ভুক্তভোগী শাহাদতকে হত্যাকারী সন্দেহ করে পুলিশে সোপর্দ করে গ্রামবাসি।
পরে গ্রামের কিছু উশৃঙ্খলন জতনা দলবদ্ধ হয়ে শাহাদতের বাড়ির সদস্যদের হামলা করে মারধর করে ঘর থেকে বের করে দেয়। এরপর শাহাদতসহ তার ছয় ভাই ও বোনের ঘরে একযোগে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট শেষে অগ্নিসংযোগ করে।
দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে আগুন। আগুনের শিখায় মুহূর্তেই ছাই হয়ে যায় এক পরিবারের সাতটি শাখার শত বছরের জীবনের অর্জন। আজ তারা খোলা আকাশের নিচে, খাবার ও নিরাপত্তাহীন অবস্থায় মানবেতর দিন কাটাচ্ছে।
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য মো. রবিউল ইসলাম জানান, “আমরা মোট সাত ভাইবোন। আমাদের ঘরের নগদ টাকা-পয়সা, স্বর্ণ, আসবাবপত্র, গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগিসহ প্রায় কোটি টাকার সম্পদ দুর্বৃত্তরা দলবদ্ধ হয়ে লুটপাট করে নিয়ে গেছে। এরপর আগুনে সব জ্বালিয়ে দিয়েছে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিশ অভিযোগ না নিয়ে দুইদিন ঘুরায়। পরে বলে, আদালতে যান। আমরা এখন রাস্তায় পড়ে আছি, খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছি। সরকারের কাছে অনুরোধ, যেন সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিচার হয়।”
তবে ভুক্তভোগীদের আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে ভাঙ্গুড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, “হত্যার ঘটনায় মূল দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তবে আগুন দেওয়ার ঘটনায় এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
জীবন ও সম্পদের এমন ভয়ানক ক্ষতির পরেও পুলিশি সহায়তা না পাওয়ায় পরিবারগুলো চরম হতাশ। প্রশাসনের নীরবতায় তাদের মধ্যে ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। ভুক্তভোগী পরিবার এবং এলাকাবাসীর দাবি, দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হোক এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হোক।’