রাজশাহীতে মব সৃষ্টি করে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর, অভিযোগ চেয়ারম্যানের
প্রকাশ | ১৯ জুন ২০২৫, ১৫:৪৮

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার ৮ নম্বর বাসুদেবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম অভিযোগ করেছেন, তাকে জোর করে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) বেলা ১১টায় রাজশাহীতে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ তোলেন তিনি ও ইউনিয়ন পরিষদের ৮ জন সদস্য।
লিখিত বক্তব্যে চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নৌকার বিরুদ্ধে বিজয়ী হয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন এবং দায়িত্ব পালনে জনগণের সেবা করে আসছিলেন।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত শফিকুল ইসলাম ও বিএনপি মনোনীত মাহফুজুর রহমান ডালিম পরাজিত হন। পরে ৫ আগস্টের ঘটনার পর মাহফুজুর রহমান ডালিম ও তার অনুসারীরা ইউনিয়নে সন্ত্রাসী কার্যক্রম শুরু করেন।
নজরুল ইসলামের অভিযোগ, গত ১৮ জুন দুপুরে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে কর্মরত অবস্থায় ডালিমের নির্দেশে তার ভাই ও সমর্থকদের নিয়ে একটি সশস্ত্র দল কার্যালয়ে ঢুকে পড়ে।
তারা এলজিইডির রাস্তা পাকাকরণে অনিয়মের অভিযোগ তুলে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে টাইপকৃত পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষরের জন্য চাপ দেয়। তিনি অস্বীকৃতি জানালে তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। পরে দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে জোর করে স্বাক্ষর নেয় এ সব সন্ত্রাসীরা।
তিনি বলেন, অন্তত ৪০-৫০ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে উপস্থিত ছিল। স্বাক্ষরের পর তারা ঘোষণা করে, আজ থেকে চেয়ারম্যান হলেন মোস্তাফিজুর রহমান ডালিম। এরপর স্থানীয়রা গোদাগাড়ী থানা, সেনাবাহিনী ও উপজেলা প্রশাসনকে খবর দেন। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে তাকে উদ্ধার করে এবং অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্ত করে বাড়িতে পৌঁছে দেয়।
চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম তার পদত্যাগের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, এ পদত্যাগপত্র তিনি প্রাণনাশের ভয়ে স্বাক্ষর করেছেন এবং তা আইনত বৈধ নয়। তিনি বিষয়টি তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আলফাজ উদ্দিন, গোলাম আরিফ, কামরুজ্জামান, ওহাব আলী, লিটন, নারী সদস্য সাইদা খাতুন হীরা, সাবিনা ইয়াসমিন, সুখ জাহান বেগম প্রমুখ।
অন্যদিকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাহফুজুর রহমান ডালিম বলেন, তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না, ঘটনার খবর পরে জানতে পেরেছেন। তিনি ও তার পরিবারের কেউ এতে জড়িত নয় বলেও দাবি করেন।
গোদাগাড়ী থানার ওসি রুহুল আমিন বলেন, পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে যেসব ব্যক্তি চেয়ারম্যানকে অবরুদ্ধ করেছিলেন তারা ইউএনও কার্যালয়ে গিয়ে চেয়ারম্যানের অনিয়মের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
তবে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও গোদাগাড়ীর ইউএনও ফয়সাল আহমেদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।