‘আমি নিরপেক্ষ, আপনারাও আমার পছন্দের মানুষ―জামায়াত আমিরকে প্রধান উপদেষ্টা’

প্রকাশ | ২০ জুন ২০২৫, ১৬:৩৬

দেবিদ্বার ও বুড়িচং (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
জামায়াতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের | 

জামায়াতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, একটি দলের চেয়ারম্যানের সঙ্গে একটি রাষ্ট্রের প্রধানের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক, প্রেসব্রিফিং এবং স্টেটমেন এটা নজিরবিহীন এবং সমচীন হয়নি এটা হতে পারে না প্রধান উপদেষ্টা সকল দলের সঙ্গে বসে জয়েন করতে পারতেন এখানে আমাদের আপত্তি ছিল এবং সেটাকে আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে স্টেটমেন্ট দিয়ে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনেছি এবং দ্বিতীয় ধাপের যে আলোচনার কথা ছিল সেটা আমরা বয়কট করেছি। 

শুক্রবার (২০ জুন) দেবিদ্বার উপজেলা পরিষদ হলরুমে জামায়াতে ইসলাম আয়োজিত  নির্বাচনী দায়িত্বশীল সমাবেশে  শেষে সাংবাদিদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে এসব কথা বলেন তিনি। 

জামায়াতের নায়েবে আমীর বলেন, প্রধান উপদেষ্টা টেলিফোনে আমীরে জামায়াতের সঙ্গে কথা বলেছেন, তিনি আমীরে জামায়াতকে আশ্বস্থ করেছেন যে,  আমরা বা আমি কোনভাবে কোন দলের প্রতি অনুরাগী নেই, আমি পরিপূর্ণ একজন নিরপেক্ষ মানুষ আপনারাও আমাদের পছন্দের মানুষ, আমাকে সময় দিন, আমি প্রমাণ করব যে আমি নিরপেক্ষ এবং একটি সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচনের জন্য যা-ই করা দরকার আমি সেটাই করব। আপনারা আমাকে একটু সুযোগ দেন।

জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে ডা. তাহের বলেন, জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের বৈঠক হয়েছে।  সেখানে জামায়াত কিছু কিছু বিষয়ে একমত হয়েছে আবার কিছু কিছু বিষয়ে দ্বিমত প্রকাশ করেছে। সেগুলোকেও বুঝিয়ে যাতে ঐক্যমত করা যায় সে প্রচেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বর্তমান সময়ে যে নিয়ম রয়েছে তা হচ্ছে সংসদ সদস্যদের মাধ্যমে এটা নির্বাচিত হবে, আমরা বলেছি শুধু পার্লামেন্ট সদস্যদের মাধ্যমে নির্বাচিত হলে যারা মেজরিটি হয়ে সরকার গঠন করবে প্রেসিডেন্টরা তাদেরই হয়ে কাজ করবে কারণ তাদের ভোট বেশি। এজন্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যে সিস্টেম সেটাকে আমরা আরও বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য প্রস্তাব করেছি।  যেমন সংসদ সদস্য, জেলা পরিষদ সদস্য, পৌরসভার মেয়র, কাউন্সিলর এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে একটা ইলেক্টোরাল সিস্টেমের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবে। তাতে যে সুবিধা হবে, একজন উপযুক্ত, জাতীয়ভাবে সম্মানিত, দল কানা নহে এমন ব্যক্তি প্রেসিডেন্ট হওয়ার সুযোগ পাবেন। বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী এই নীতিতে বিশ্বাস করে। আরেকটি বিষয় নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি, যে কোন প্রধানমন্ত্রী জীবনের দুইবারের বেশি একাধারে প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেনা। এ বিষয়ে বিএনপি ছাড়া অধিকাংশ দল একমত হয়েছেন। কিন্তু এটা এখনও ফাইনাল হয়নি, আগামী রোববার এই প্রস্তাবের মধ্য দিয়েই আবার আলোচনা শুরুর কথা রয়েছে। 

ডা. তাহের আরও বলেন, আমরা একটি নতুন প্রস্তাব এনেছি তা হলো,  সংবিধান সংশোধন, অনাস্থা বিল এবং বাজেট। এই তিন প্রস্তাবের বাইরে আর যেকোন বিষয়ে একই দলের এমপি সে দলের মতের বিরুদ্ধে ভোট দিতে পারবেন। এই ব্যাপারেও আমরা সকলেই একমত হতে পেরেছি। তিনি আরও বলেন, লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বৈঠক হয়েছে আমরা বলেছি এই বৈঠকটি অত্যন্ত স্বাভাবিক বিষয়। কারণ প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশ ও সকল দলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। নির্বাচনের তারিখের বিষয়ে আমরা চেয়েছিলাম ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত। সেই হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা এপ্রিলেই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছেন, আমরা বলেছি যদি ফেব্রুয়ারিতে হয় তাহলেও আমাদের কোন আপত্তি নেই। কারণ এটা আমাদের পূর্বের ঘোষিত তারিখের মধ্যেই পড়েছে। 

তিনি আরও বলেন, জামায়াতে ইসলাম প্রথম থেকেই বলে আসছে, আগে স্থানীয় নির্বাচন, আমরা মনে করি ডিসেম্বরে স্থানীয় নির্বাচন হতে পারে এরপরে  যে  কয়েক মাস থাকবে সে সময়ে জাতীয় নির্বাচন হতে পারে। জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির দূরত্ব বাড়ছে না। তারা তাদের দলীয় স্ট্যান্ডে কথা বলছে আমরা আমাদের দলীয় স্ট্যান্ডে কথা বলছি। সুতরাং বিএনপিরসহ সকল দলের সঙ্গে আমাদের ভালো সুসম্পর্ক রয়েছে।