সপ্তাহে দুইবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চুরির পর এবার কমিউনিটি ক্লিনিকেও চুরি

প্রকাশ | ২২ জুন ২০২৫, ১০:১৬

আলফাজ সরকার আকাশ, শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
শ্রীপুরের কমিউনিটি ক্লিনিক। ফাইল ছবি

এক সপ্তাহে পরপর দুই বার গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চুরির পর এবার সেখানকার একটি কমিউনিটি ক্লিনিকের তালা ভেঙে  চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় চোরের দল ক্লিনিকের সোলার ব্যাটারি, আসবাবপত্র ও নগদ টাকা চুরি করে নিয়ে যায়।

রোববার (২২ জুন) গভীর রাত থেকে ভোর রাতের কোনো এক সময়ের দিকে উপজেলার মাওনা দক্ষিণ পাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকে এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে  উদ্বেগ প্রকাশ করেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক কর্মকর্তারা। তবে দায়সারা বক্তব্য দেন জেলা সিভিল সার্জন। 

ওই ক্লিনিকে দায়িত্বরত হেলথকেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচপি) শরিফা আক্তার স্মৃতি জানান, শনিবার নিয়মিত কার্যক্রম শেষে দুপুরের পর ক্লিনিকে তালা দিয়ে সবাই বাড়িতে চলে যায়। রোববার সকালের দিকে স্থানীয়রা ফোনে জানান যে ক্লিনিকের তালা খোলা। এরপর আমিসহ স্থানীয় লিয়াকত ভাই ভেতরে গিয়ে দেখতে পাই, ক্লিনিকের বাইরের একটা ও ভেতরের ২ দরজার তালা ভেঙে সোলার ব্যাটারি,নগদ ৩০০ টাকা,টয়ারে রাখা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও অন্যান্য জিনিসপত্র নেই। পরে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাই।'

স্থানীয় লিয়াকত আলী বলেন, মাওনা দক্ষিণ পাড়া রিয়াজুল জান্নাত জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন মোখলেছুর রহমান নামাজের পর হাঁটতে গিয়ে ওই ক্লিনিকের দরজা খোলা অবস্থায় দেখতে পান। পরে আমাদেরকে জানালে আমি স্মৃতিতে ফোন দেই। রাতের কোনো এক সময় চোরের দল এ কাণ্ড ঘটিয়েছে। খবর পেয়ে সকালে এলাকার লোকজন ক্লিনিকে যায়।'

শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শফিকুল ইসলাম বলেন,' গত সপ্তাহে আমাদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সরকারি কোয়াটার থেকে বৈদ্যুতিক সংযোগ তার নিয়ে গেছে চোরেরা। যার আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ৩০ হাজার টাকা। এর ২দিন আগে হাসপাতালের পানি তোলার মটরের তার চুরি হয়েছে। এখন আবার ওই কমিউনিটি ক্লিনিকে চুরির ঘটনা ঘটেছে। আমরা চোরের জ্বালায়  অতিষ্ঠ। এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ দেওয়া হচ্ছে।' তিনি আরও বলেন, কোনো ক্লিনিকেই নিরাপত্তার জন্য পাহারাদারের ব্যবস্থা নেই। সবগুলো ক্লিনিকই অরক্ষিত। এমনকি এই উপজেলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও রাতে নিরাপত্তা জটিলতায় ভোগেন রোগী ও স্টাফরা। আমরা এসবের প্রতিকার চাই।'

এ বিষয়ে লোকাল থানা পুলিশের সাথে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স যোগাযোগ করবে জানিয়ে দায়সারা বক্তব্য দেন গাজীপুরের সিভিল সার্জন ডা: মামুনুর রহমান। তিনি বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কিংবা ক্লিনিকে এসব ঘটনা ঘটলে সেখানে দায়িত্বরত যারা আছেন উনারাই ওসির সাথে কথা বলবেন।'

আপনি বললে আরেকটু গুরুত্ব বাড়তো এমন প্রশ্নে সিভিল সার্জন বলেন, সেটাও ঠিক। 

এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহাম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, 'প্রতি রাতেই আমাদের পুলিশ টহল দিচ্ছে। এমনকি আমিও গতরাতে মাওনা এলাকায় টহলে ছিলাম। ছিঁচকে চুরি ঠেকাতে ইতোমধ্যে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। গতকালও নানা অপরাধে ২১জনকে আটক করা হয়েছে। এর ফাঁকে ওই ক্লিনিকে চুরি হয়েছে তবে এটা আমাদেরকে কেউ অবগত করেনি। এ ঘটনায় অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।'

প্রসঙ্গত, শনিবার গাজীপুরের  শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের টেপিরবাড়ি গ্রামের ডাক্তার দম্পতির বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এসময় তাদেরকে হাত-পা বেঁধে নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কারসহ ১৫ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে যায়। এছাড়াও গত বছরের ১০ জুন মাসে শ্রীপুর পৌরসভার লোহাগাছ কমিউনিটি ক্লিনিকে পরপর চার বার চুরির ঘটনা ঘটে। এ সময় চোরের দল ক্লিনিকের ফ্যান ও ওষুধ চুরি করে নিয়ে যায়।