মহাসড়কের পাশে ময়লার ভাগাড়, অতিষ্ঠ মানুষ

প্রকাশ | ২২ জুন ২০২৫, ১৭:১২

কাশিয়ানী (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি
ছবি: যায়যায়দিন

ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক এবং ভাটিয়া পাড়া মাইজকান্দী আঞ্চলিক মহাসড়কের সংযোগ স্থলে ফেলা হয় গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলা'র সাম্পান হাইওয়ে রেস্টুরেন্টের এবং বিভিন্ন হোটেলের ময়লা সহ বিভিন্ন এলাকার ময়লা আবর্জনা। 

এলাকায় ডাম্বিং স্টেশন না থাকায় অপরিকল্পিত ভাবে দিনের পর দিন  উপজেলার বিভিন্ন স্থানের হোটেল রেস্টুরেন্ট এবং বাসাবাড়ি, কারখানা ও বাজারের এবং স্থানীয় কমিউনিটি সেন্টার, খাবার হোটেল,গরু-ছাগল মাংস বিক্রেতারা উচ্ছৃষ্ট ময়লা ফেলা হয় দেশের অন্যতম এবং ব্যস্ত এই আঞ্চলিক মহাসড়ক এবং মহাসড়কে। 

যেখানে একটি ছোট উড়াল সেতু রয়েছে। উড়াল সেতুর নিচে দিয়ে মানুষ এবং ছোট যানবাহন চলাচল করে।

 এটি কাশিয়ানী উপজেলার যাতায়াতের মুল প্রবেশ দ্বার। যে কারণে শতশত মানুষকে উড়াল সেতুর নিচ দিয়ে দুর্গন্ধের মধ্যে দিয়ে বাধ্যতামূলক যাতায়াত করতে হচ্ছে।

এর ফলে অএ এলাকায ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। ময়লার স্তূপ থেকে উৎকট দুর্গন্ধ ও ধোঁয়ায় চরম বিপাকে পড়ছেন পথচারীসহ উপজেলাবাসী। খোলাস্থান এবং জনবহুল স্থানে এসব ময়লা ফেলায় বাতাসে ছড়াচ্ছে রোগজীবাণু, বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। 

তা ছাড়া পাশেই রয়েছে বসতবাড়ি,কাশিয়ানী প্যারামেডিকেল হাসপাতাল এন্ড কলেজ, কাশিয়ানী সরকারী টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ, ভাটিয়াপাড়া র‍্যাব ক্যাম্প, এনার্জি পার্ক এবং হাফেজিয়া মাদ্রাসা এবং বেশ কয়েকটি মসজিদ। 

এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি পথচারীদের নাকে কাপড় চেপে চলাচল করতে হয়। ভাগাড়টি জনবসতি এলাকা থেকে অন্য স্থানে সরিয়ে নেওয়ার দাবি এ উপজেলাবাসী'র। উপজেলা কর্তৃপক্ষ বলছে, দ্রুত সমস্যার সমাধানের চেষ্টা চলছে।

জানা যায়, সাবেক উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান কতিপয় হোটেল রেস্টুরেন্টের মালিক পক্ষের স্বার্থ রক্ষায় এলাকাবাসীর প্রবল বাধা উপেক্ষা করে মহাসড়ক এবং আঞ্চলিক মহাসড়কের সংযোগ স্থলে ও উপজেলা সদরে যাতায়াতের মুল দ্বার সেই সাথে উড়াল সেতু নীচে দুই টি রাস্তায় সাথে এই ময়লা ফেলার ভাগাড় করেন। 

কাশিয়ানী উপজেলা প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ডাম্বিং স্টেশন না থাকায় অপরিকল্পিতভাবে দিনের পর দিন উপজেলা থেকে বাসা বাড়ি, কারখানা ও বাজারের এবং স্থানীয় কমিউনিটি সেন্টার, খাবার হোটেল, গরু-ছাগল মাংস বিক্রেতারা উচ্ছৃষ্ট ময়লা ফেলা হয় এই জায়গায়।

স্থানীয় বাসীন্দা মোঃ জামাল শেখ  জানান, ময়লার গন্ধে রাস্তা দিয়ে হাঁটতে পারি না। স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রীরা নাকে কাপড় চেপে চলাচল করতে হয়। জনবসতি এলাকা থেকে দূরে কোনো নির্জন স্থানে এই ময়লা-আবর্জনা ফেলার দাবি জানান তিনি।

পথচারী মো. কামরুল ইসলাম জানান, মহাসড়কের এই রাস্তা দিয়ে প্রতিনিয়ত যাতায়াত করি। পাশেই রয়েছে ভাটিয়াপাড়া গোল চত্বর ও কাশিয়ানী বাজার , যেখানে হাজার হাজার লোকের সমাগম ঘটে। এই ময়লার উৎকট দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ পথচারীরা।

কাশিয়ানী উপজেলা স্বাস্থ্য-কমপ্লেক্সে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আমিনুল ইসলাম বলেন, খোলা জায়গায় ময়লা ফেললে পরিবেশের যেমন ক্ষতি হয়, তেমনি মানুষেরও শারীরিকভাবে অনেক ক্ষতি হয়। 

ময়লা-আবর্জনার পঁচা দুর্গন্ধ নাক দিয়ে মানুষের পাকস্থলীতে গিয়ে নানা ধরনের সংক্রামক রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। এতে মানুষ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়তে পারে। বিশেষ করে বৃদ্ধ ও শিশুরা বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। খোলা জায়গা থেকে মশা-মাছিও জন্মায়। তাই খোলা জায়গায় ময়লা-আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত থাকতে হবে।

কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা জান্নাত বলেন, জনসাধারণের দুর্ভোগ লাঘবে উপজেলা'র এই ময়লা-আবর্জনা জনবসতি এলাকায় না ফেলে দূরে কোথাও সরকারি জমিতে ফেলার যায় সে বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে ডাম্বিং স্টেশন তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আপতত এসব ময়লায় যাতে দুর্গন্ধ না ছড়ায় সেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।