নবীগঞ্জে চুরির ঘটনায় মামলা করায় চোরদের হুংকার 

প্রকাশ | ২৩ জুন ২০২৫, ১২:৫০

নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি
ছবি: সংগৃহীত

নবীগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের হালিতলা বারৈকান্দি গ্রামে গৃহকর্তাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে এক দুঃসাহসিক চুরির ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। 

 চোরের দল ঘরে রক্ষিত গরু বিক্রির ৮০ হাজার টাকাসহ মুল্যমান মালামাল চুরি করে নিয়ে যাবার সময় এলাকাবাসী আওয়াল মিয়া ও কাছম আলীকে আটক করে। 

এ সময় তাদের সাথে থাকা কুখ্যাত চোর ও ছিনতাইকারী হুমায়ুনসহ অপরাপর চোররা পালিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পরই হুমায়ুন ও অন্যান্য চোররাসহ তাদের স্বজনরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে গৃহকর্তা আজির মিয়া, তার পরিবার ও গ্রামের লোকজনের উপর হামলা করে আটককৃত চোরদের জোর পুর্বক ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

 এতে গৃহকর্তার স্ত্রী মালা বেগম ও গ্রামের মোজাই মিয়া গুরুতর আহত হন। গুরুতর আহত মালা বেগমকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। 

অপর আহত কে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছে বিগত ০৮ মে দিবাগত গভীর রাতে। এ ঘটনায় গৃহকর্তা আজির মিয়া হবিগঞ্জের বিজ্ঞ আদালতে মামলা নং ৩৯২/২৫ ইং দায়ের করেছেন। 

এদিকে চোরের দল নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে গিয়ে চোর আওয়াল মিয়া সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার ঘটনাকে মারামারির ঘটনা সাজিয়ে তার বাবা আলা উদ্দীন বাদী হয়ে নবীগঞ্জ থানায় একটি দরখাস্ত দায়ের করেছেন।

 উক্ত দরখাস্তে আজির মিয়াসহ চোর আটকের সময় গ্রামের যে সকল মুরুব্বি উপস্থিত ছিলেন তাদেরকেও আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।

 গ্রামবাসী সুত্রে জানাযায়, উপজেলার সদর ইউনিয়নের হালিতলা বারৈকান্দি গ্রামের চিহ্নিত চোর আলা উদ্দীনের ছেলে আওয়াল মিয়া, সোনাফর আলীর ছেলে কাছম আলী ও গন্ধ্যা গ্রামের কুখ্যাত চোর ও ছিনতাইকারী জলফু মিয়ার ছেলে যুবলীগের ক্যাডার হুমায়ুন মিয়াগংরা জানতে পান একই গ্রামের আজির মিয়ার স্ত্রী মালা বেগম তার পালিত গরু বিক্রি করে বসত ঘরে নগদ ৮০ হাজার টাকা রক্ষিত রেখেছেন। 

খবর পেয়ে উল্লেখিত চোরের দল অপরাপর চোরদের নিয়ে বিগত ৮ মে দিবাগত গভীর রাত আড়াই থেকে ৩ টার দিকে সুকৌশলে ঘরের দরজা খুলে ভিতরে প্রবেশ করে। তাদের শব্দে গৃহকর্তা আজির মিয়া ও তার স্ত্রী মালা বেগম ঘুম থেকে উঠে টর্চ লাইটের আলোতে চোরদের চিনে পেলে।

 এ সময় আওয়াল তার সাথে থাকা রামদা দিয়ে আজির মিয়াকে জিম্মি করে প্রানে হত্যার ভয় দেখায়। এ সময় হুমায়ুন মালা বেগম এর কাছ থেকে জোরপূর্বক সু-কেসের চাবি নিয়ে ড্রয়ার থেকে ৮০ হাজার টাকা ও অন্যান্য মালামাল নিয়ে পালিয়ে যাবার সময় তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে আওয়াল ও কাছমকে আটক করলেও টাকাসহ পালিয়ে যায় হুমায়ুন, রায়েল, দিলিপ, ছাতির গংরা।

 কিছুক্ষন পরই পলাতক চোররা তাদের স্বজনদের নিয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রসহ আজির মিয়ার বাড়িতে হামলা করে আটককৃত চোরদের নিয়ে যায়। এ সময় তাদের হামলায় গুরুতর আহত হন মালা বেগম, মোজাই মিয়া। তাদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মালা বেগম কে সিলেট প্রেরণ  ও অপর আহতকে চিকিৎসা দেন। এ ঘটনায় আজির মিয়া বিজ্ঞ আদালতে আওয়াল, কাছম, হুমায়ুনসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছেন। 

এর কয়েক দিন পর চোরের দল নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে মাও আব্দুল আজিজ এর ট্রাক গাড়ি চালানোর সময় এক্সিডেন্ট করে আহত হন আওয়াল মিয়া। কিন্তু হাসপাতালে গিয়ে মারামারিতে আহত হয়েছেন মর্মে ভুল তথ্য দিয়ে চিকিৎসা নেন। ওই কাগজ দিয়ে গ্রামের মুরুব্বিয়ানসহ আজির মিয়ার বিরুদ্ধে থানায় একটি দরখাস্ত দায়ের করেছেন।

 এদিকে নিরীহ আজির মিয়ার দায়েরী মামলা তুলে নেয়ার জন্য চোরের দল বিভিন্ন হুমকি দিয়ে আসছেন। এমনকি রাস্তাঘাটে চলাচলের সময় প্রাণনাশের হুমকীও দেন। তাদের অনাগত হুমকীতে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন আজির মিয়া ও তার পরিবার।