সাঘাটায় ভাঙা ব্রিজের ওপর কাঠের সাঁকো; যাতায়াত ঝুঁকিপূর্ণ

প্রকাশ | ২৬ জুন ২০২৫, ১৮:০৮

সাঘাটা (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি
সাঘাটায় ভাঙা ব্রিজের ওপর কাঠের সাঁকো: ছবি যায়যায়দিন

গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার হলদিয়া-জুমারবাড়ী রাস্তার ওপর নির্মিত পূর্বআমদিরপাড়া ব্রিজটি দেবে গিয়ে জনসাধারণের চলাচল বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লে, পরবর্তীতে স্থানীয়রা নিজেরাই চাল ও চাঁদা তুলে তৈরি করেছেন একটি অস্থায়ী বাঁশ-কাঠের সাঁকো। 
কিন্তু সেই সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন‌ ৮ থেকে ১০টি গ্রামের অর্ধলক্ষাধিক মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকার ব্রিজটি ভেঙে পড়ায় লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াতের জন্য ভয়াবহ মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৮ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উদ্যোগে প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে ১৯ মিটার দৈর্ঘ্যের এই ব্রিজটি নির্মিত হয়। এলজিইডির অর্থায়নে নির্মিত এ ব্রিজটির অবস্থা এতটাই করুণ যে, নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের ফলে মাত্র ৫ বছরের মধ্যেই ব্রিজটি নড়বড়ে হয়ে পড়ে। 
দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় এবং তদারকির অভাবে গত বছরের বন্যায় প্রবল পানির স্রোতে ব্রিজটি সম্পূর্ণ ধসে পড়ে। দুই পাশের মাটিও ধসে গিয়ে গভীর খাদে পরিণত হয়। 

বিকল্প কোনো রাস্তা না থাকায়,বাধ্য হয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা মুষ্ঠির চাল ও চাঁদা তুলে নিজেরাই তৈরি করেছেন বাঁশ ও কাঠের একটি অস্থায়ী সাঁকো। এই সাঁকো দিয়ে হেঁটে চলাচল করা গেলেও যানবাহন চলাচল অসম্ভব হয়ে উঠেছে। সাইকেল, বাইক কিংবা অটোরিকশা পার করতেও যাত্রী নামিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করতে হচ্ছে। ফলে প্রতিদিন ঘটছে ছোট খাটো দুর্ঘটনা।

স্থানীয় বাসিন্দা শিক্ষক আবুল কাশেম মাস্টার,শহিদুল ইসলামসহ এলাকার লোকজন জানান,“ওই ব্রিজ দিয়ে প্রায় ৮ থেকে ১০টি গ্রামের মানুষ যাতায়াত করেন। প্রতিদিন শিশুরা স্কুলে যেতে ভয় পায়,রোগী নিয়ে যেতে কষ্ট হয়। কখন যে সাঁকো ভেঙে পড়ে দুর্ঘটনা ঘটে! 

এ ব্যাপারে ৭ নং হলদিয়া স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম জানান, ‘এলাকাবাসীর জন্য এটি একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্রিজ। আমরা নিজেরা চেষ্টা করছি সমস্যা সাময়িকভাব সমাধান করতে। কিন্তু এটি সরকারের হস্তক্ষেপ ছাড়া সম্ভব নয়।’

এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রায় দুই বছর হয়ে গেলেও দৃশ্যমান কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ইতিপূর্বে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ব্রিজটি নিয়ে সংবাদপ্রকাশ হওয়া সত্বেও কর্তৃপক্ষের নজরে আসেনি।

জনগুরুত্বপূর্ণ এ রাস্তায় ভেঙে পড়া ব্রিজের ওপর যে কাঠের সাঁকো নির্মাণ করা হয়েছে তা গ্রামীণ যানবাহন চলাচলের জন্য যথেষ্ট নয়। যানবাহনের চাপে যে কোনো মুহুর্তে ভেঙে পড়তে পারে।
দ্রুত সময়ের মধ্যে এখানে একটি নতুন ব্রিজ নির্মাণ করা না হলে আরও জনদুর্ভোগ বাড়বে। অতি দ্রুত ব্রিজটি নির্মাণ করার জন্য সাঘাটা উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসী।