বিয়ের ৯ বছর পর একসঙ্গে তিন সন্তানের জন্ম
প্রকাশ | ২৭ জুন ২০২৫, ২০:৫০

বিয়ের দীর্ঘ ৯ বছর পর একসঙ্গে তিন সন্তানের জন্ম দিয়েছেন রেবেকা সুলতানা (২৬) নামে এক গৃহবধূ। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাত ২টার দিকে সদর উপজেলার নিউ এভারকেয়ার স্পেশালাইজড হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তাদের জন্ম হয়।
রেবেকা সুলতানা নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার পুটিমারী ইউনিয়নের সাদুরার পুল বাজার এলাকার বাসিন্দা সাজু ইসলাম স্বপনের স্ত্রী। সাজু ঢাকায় রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। এ ঘটনা শোনার পরে তিনি ঢাকা থেকে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন।
রেবেকা সুলতানার পরিবার সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন বন্ধ্যাত্ব সমস্যায় ভুগছিলেন রেবেকা সুলতানা। প্রায় ৯ মাস আগে তিনি চিকিৎসা গ্রহণ শুরু করেন। চিকিৎসা ও গর্ভকালীন পুরো সময়জুড়ে তাঁর তত্ত্বাবধানে ছিলেন নিউ এভারকেয়ার স্পেশালাইজড হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে প্রসূতি, স্ত্রীরোগ ও বন্ধ্যাত্ব রোগ বিশেষজ্ঞ ও সার্জন ডা. মোছা. সুলতানা রাজিয়া লাকী। রাতে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তিনটি সন্তানের জন্ম হয়েছে। আমরা অনেক খুশি, মা ও সন্তান সবাই সুস্থ আছে।
ডা. মোছা. সুলতানা রাজিয়া লাকী জানান, ‘অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ওই গৃহবধূ একটি মেয়ে ও দুটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেন। নবজাতক ও তাদের মা সুস্থ্য রয়েছেন। তারপরও তারা হাসপাতালে পর্যবেক্ষণে রয়েছেন।’
গৃহবধূ রেবেকা সুলতানার মা আরজিনা বেগম বলেন, ‘আল্লাহর অশেষ রহমতে আমার মেয়ে আজ একসঙ্গে তিনটি সন্তানের মা হয়েছে। এটা আমাদের জন্য অনেক আনন্দের। এখন আমার মেয়ে আর নাতি-নাতনিরা সুস্থ্য আছে। চিকিৎসকদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।’
গৃহবধূ রেবেকা সুলতানার বাবা এনামুল হক বলেন, আমার মেয়ে অনেক কষ্ট করেছে এই দীর্ঘ সময়। মেয়ের মুখে আজ হাসি ফিরে এসেছে। সবাই সুস্থ্য আছে, সবার দোয়া চাই।’
নিউ এভারকেয়ার স্পেশালাইজড হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চেয়ারম্যান শিশু চিকিৎসক ও সনোলজিস্ট ডা. এস এম হাসান ইমাম জানান, ‘দীর্ঘ ৯ বছর চিকিৎসার পর আলহামদুলিল্লাহ রেবেকা সুলতানার গর্ভে সন্তান আসে। এটি আমাদের জন্যও একটি আনন্দের বিষয়। তবে একাধিক (এক বা দুইয়ের বেশি) সন্তান ধারণ করলে মায়ের অবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। শুরুতে আমরা নরমাল ডেলিভারির চেষ্টা করি। কিন্তু কিছু জটিলতা দেখা দেওয়ায় তাকে অপারেশন থিয়েটারে নিতে হয়।'
ডা. এসএম হাসান ইমাম আরও বলেন, ‘অপারেশন থিয়েটারে নেওয়ার পর দেখা যায়, রোগীর অবস্থার অবনতি হচ্ছে পেসার বেড়ে যাচ্ছে এবং শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তখন আমরা আর সময় না নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিই এবং তাৎক্ষণিক অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করানো হয়। গৃহবধূ তিনটি সন্তানের জন্ম দেন একটি মেয়ে ও দুটি ছেলে। বর্তমানে মা ও নবজাতকরা সুস্থ্য আছেন এবং হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন।’