নাচোলে ভ্যানচালক রাজু হত্যায় জড়িত ৩ জন আটক

প্রকাশ | ২৮ জুন ২০২৫, ১৮:৫৫

নাচোল (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি
যায়যায়দিন

চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে ভ্যানচালক রাজু হত্যায় জড়িত ৩ জনকে আটক করেছে জেলা ডিবি পুলিশ। 

শুক্রবার (২৭ জুন) রাত ৯ টায়  এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ডিবি কর্যালয়ে প্রেস কনফারেন্স করা হয়। 

 ডিবি অফিসসূত্রে জানাগেছে, গত ২২ জুন নাচোল পৌর এলাকার শ্রীরামপুর গ্রামের  আব্দুল মোত্তালেবের ছেলে রাজু আহম্মেদ(২১) অটোভ্যান নিয়ে প্রতিদিনের ন্যায় ভাড়ায় চালানোর জন্য বের হয়। এদিন রাতে বাড়ী ফিরে না আসলে ভ্যানের প্রকৃত মালিক ছফর আলী যোগাযোগ করলে রাজু জানায়, সে কিছুক্ষণের মধ্যে বাড়ী চলে আসবে। কিন্তু সে বাড়ী ফিরে আসেনি।

পরদিন সকালের দিকে লোকমূখে শুনতে পায় নাচোল থানাধীন পারিলা গ্রামের জনৈক কুদ্দুস আলীর আম বাগানের পার্শ্বে হিয়ারিং রাস্তার উপরে একজন ব্যক্তির গলা কাটা মৃত দেহ পড়ে আছে। এমন সংবাদ পেয়ে রাজুর মা ও ভ্যানের মালিক ছফরকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তার ছেলে রাজুর মৃত দেহ শনাক্ত করেন। 

ওই ঘটনায় নাচোল থানায় একটি হত্যা মামলা হয়। মামলার অজ্ঞাতনামা আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে জেলা গোয়েন্দা শাখা,  ও নাচোল থানা পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালায়। 

গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ২৬ জুন সকালে  নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ থানা হতে উক্ত হত্যা মামলায় কিলিং মিশনে সরাসরি অংশগ্রহণকারী আসামী খাদেমুল ইসলাম ওরফে মধু (২৪), পিতা তরিকুল ইসলাম ওরফে ভ্যালেন, সাং-উত্তর সিংঙ্গেরগাড়ী (তেলমনপাড়া), থানা-কিশোরগঞ্জ, জেলা-নীলফামারীকে গ্রেফতার করে। 

গ্রেফতারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে জানায় সে প্রায় ৪  মাস আগে  নাচোল রেল স্টেশন এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে থাকে। একই এলাকায় মৃত রাজুও বসবাস করায় তার সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়। একসময় আসামী খাদেমুল মৃত রাজুর ভাড়ায় চালিত অটোভ্যানটি নেওয়ার জন্য রাজুকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পূর্ব পলিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দিন ২২ জুন বিকাল অনুমান ৪টায় রাজুকে  চুয়ানি খাওয়ার কথা বলে দুজনে একসাথে ভ্যান নিয়ে বের হয়। 

সন্ধ্যার পর চুয়ানি সংগ্রহ করে রাজুকে মাত্রাতিরিক্ত চুয়ানি খাওয়ায়, ফলে রাজু ভ্যানে শুয়ে পড়ে আর আসামী খাদেমুল নিজেই ভ্যান চালাতে থাকে। রাত সাড়ে ১০ টার দিকে ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে আসামী খাদেমুল সুযোগ বুঝে মধুর চাক কাটা ধারালো চাকু দিয়ে ভ্যানে শুয়ে থাকা রাজুর গলা কেটে এবং পিঠে ঐ চাকু দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে। 

রাজুর মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে লাশ রাস্তার পাশে ফেলে রেখ  ভ্যানটি নিয়ে চলে যায়। রাত শেষে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে আসামী খাদেমুল তার পূর্ব পরিচিত ভ্যানের মেকার ২নং আসামী আমিনুর রহমান (২২), আমানত আলী ও ৩নং আসামী আমানত আলী, পিতা রমজান আলী,  উভয় সাং-ফতেপুর মসজিদপাড়া, থানা-নাচোল, জেলা-চাঁপাইনবাবগঞ্জের নিকট ২০ হাজর টাকা দাম করে নগদ ১৪ হাজার টাকা নিয়ে ভ্যানটি বিক্রয় করে। বাকী ৬ হাজার টাকা বিকাশে নিবে বলে কথা হয়।

আসামি খাদেমুল পরের দিন সকালে বিআরটিসি বাসে নিজ বাড়ী নিলফামারীর উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। গ্রেফতারকৃত আসামী খাদেমুলের দেওয়া তথ্য মতে ২ ও ৩ নং আসামীর বসতবাড়ীর আঙ্গিনা হতে মৃত রাজু আহাম্মেদ এর ভাড়ায় চালিত অটো ভ্যানটি উদ্ধারপূর্বক জব্দ করা হয়।