কমপ্লিট শাটডাউনে অচল ভোমরা স্থলবন্দর
ভারত -বাংলাদেশে আটকা পড়েছে কয়েকশ’ পণ্যবাহী ট্রাক
প্রকাশ | ২৯ জুন ২০২৫, ১৮:৫৬ | আপডেট: ২৯ জুন ২০২৫, ১৮:৫৯

কমপ্লিট শাটডাউনে অচল হয়ে পড়েছে ভোমরা স্থলবন্দর।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খানের অপসারণ এবং রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তাদের বদলির আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ডাকে দেশজুড়ে চলছে বন্দর এবং শুল্ক ও কর কার্যালয়গুলোতে কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি।
একই সঙ্গে চালু আছে ‘মার্চ টু এনবিআর’ আন্দোলনও। গত বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটার পর থেকে রবিবার (২৯ জুন) পর্যন্ত সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরের আমদানি রপ্তানি কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। অচল হয়ে পড়েছে স্থলবন্দরের সকল কার্যক্রম।
এতে শুল্কায়ন, পরীক্ষণ ও আমদানি রপ্তানিকৃত পণ্যবাহী ট্রাকের লোড আনলোড বন্ধ রয়েছে। কর্মহীন হয়ে পড়েছেন এখানকার চার থেকে পাঁচ হাজার শ্রমিক।
এছাড়া, প্রতিদিন ভোমরা স্থলবন্দর থেকে সরকার ২০ থেকে ৩০ কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে । ভোমরা বন্দরের সব ধরণের আমদানি রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ থাকায় কার্যত অচল হয়ে পড়েছে বন্দরটি।
ভোমরা স্থলবন্দরের আমদানি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ফারহাদ ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী ও ভোমরা সিএন্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওহিদুল ইসলাম জানান, কাস্টমস স্টেশনের কর্মকর্তারা শাটডাউন কর্মসূচি পালন করায় কোন কাজ হচ্ছে না। বন্দরে অচল অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষতির সম্মুখে পড়েছেন।
গত বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে আমদানি ও রপ্তানির অপেক্ষায় ভোমরা বন্দর ও তার বিপরীতে ভারতীয় ঘোজাডাঙ্গায় মোট ৪০০ থেকে ৫০০ পণ্যবাহি ট্রাক আটকা পড়ে আছে। এতে করে ভোমরা বন্দরে প্রতিদিন প্রায় ২০ থেকে ৩০ কোটি টাকার রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
ঢাকা থেকে আমদানিকৃত পণ্য নিয়ে আসা কর্ণফুলী ফার্মের ট্রাক ড্রাইভার জয়নাল আবেদীন ও টেক্সটাইল মিলের সুতা জাতীয় পণ্য নিয়ে আসা ট্রাক ড্রাইভার আবু মুসা সাংবাদিকদের জানান, বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তারা ট্রাক ভর্তি পণ্য নিয়ে ভোমরা স্থলবন্দরে পৌঁছান।
এরপর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের এনবিআরের সংস্কার ঐক্য পরিষদের ডাকা কমপ্লিট শাটডাউনের কারণে তারা রপ্তানিকৃত পণ্য নিয়ে ভারতের ঘোজাডাঙ্গা স্থলবন্দরে পৌঁছাতে পারেনি। ফলে গত চার দিন ধরে ভোমরা স্থলবন্দরে আটকা পড়ে আছে। এতে করে মালিকের বাড়তি টাকা ডেমারেজ গুনতে হচ্ছে।
ভোমরা কাস্টমস স্টেশনের সহকারি রাজস্ব কর্মকর্তা রাসেল আহমেদ জানান, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। এতে বন্দরের সব ধরণের আমদানি রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ থেকে পরবর্তী নির্দেশনা আসা পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলমান থাকবে।
এদিকে, এই চলমান শাটডাউন কর্মসূচির কারণে দুই দেশের ব্যবসায়ীরা পড়েছেন চরম বিপাকে। পাশাপাশি আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছে সরকারও। তবে, জরুরি প্রয়োজন বিবেচনায় আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা কার্যক্রম এই কর্মসূচির আওতার বাইরে রাখা হয়েছে।