সখীপুরে সপ্তাহে অর্ধ কোটি টাকার কাঁঠাল বিক্রি 

প্রকাশ | ৩০ জুন ২০২৫, ১২:৩৩

সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার বিভিন্ন হাট থেকে প্রতি সপ্তাহে প্রায় অর্ধকোটি টাকার কাঁঠাল বিক্রি -যাযাদি

টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার বিভিন্ন হাট থেকে প্রতি সপ্তাহে প্রায় অর্ধকোটি টাকার কাঁঠাল দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হচ্ছে। 

স্বাদে মিষ্টি ও পুষ্টিগুণে ভরপুর এই ফল শুধু রসনাতৃপ্তিই নয়, স্বাস্থ্য সচেতনতায়ও গুরুত্ব রাখছে।

হজমে সহায়তা, পানিশূন্যতা প্রতিরোধ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি ও ওজন নিয়ন্ত্রণে কাঁঠালের ভূমিকা রয়েছে বলে জানান পুষ্টিবিদরা।

সখীপুরের প্রায় প্রতিটি বাড়ির আঙিনায় কাঁঠালগাছ রয়েছে। এসব গাছ থেকেই প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ কাঁঠাল উৎপাদিত হয়। 

উপজেলার কুতুবপুর, বড়চওনা, কচুয়া, মহানন্দপুর, নলুয়া, তক্তারচালা ও দেওদীঘি—এই সাতটি হাটে কাঁঠাল বেচাকেনা হয় নিয়মিত।

এর মধ্যে কুতুবপুর হাটটি জ্যৈষ্ঠ মাস থেকে মূলত কাঁঠালের বড় বাজারে রূপ নেয়, যেখানে সপ্তাহে প্রায় ৩০ লাখ টাকার কাঁঠাল কেনাবেচা হয়। হাটটি বসে শনিবার, রোববার, মঙ্গলবার ও বুধবার।

অন্যদিকে, নলুয়ার হাট বৃহস্পতিবার, দেওদীঘি সোমবার, তক্তারচালা শনিবার, কচুয়া রোববার ও বুধবার এবং মহানন্দপুর হাট বসে মঙ্গলবার। 

এসব হাটেও গড়ে সপ্তাহে ২০ থেকে ৩০ লাখ টাকার কাঁঠাল বেচাকেনা হয়। সব মিলিয়ে প্রতি সপ্তাহে সখীপুর থেকে প্রায় ৫০ লাখ টাকার কাঁঠাল দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ হচ্ছে।

কুতুবপুর হাটে স্থানীয় কৃষক ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হাটের আগের দিন বিকেল থেকে পরদিন দুপুর পর্যন্ত কৃষক ও খুচরা ব্যবসায়ীরা কাঁঠাল হাটে নিয়ে আসেন। এরপর পাইকাররা ট্রাকযোগে সেগুলো দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠিয়ে দেন।

স্থানীয় ব্যবসায়ী আবুল কালাম ও বাবলু মিয়া জানান, তাঁরা সখীপুরের বিভিন্ন গ্রাম থেকে কাঁঠাল কিনে হাটে পাইকারদের কাছে বিক্রি করেন। 

প্রতিটি কাঁঠালের দাম আকারভেদে ৩০ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত হয়। আর গাছ থেকে কাঁঠাল সংগ্রহ করে খুচরা ব্যবসায়ীরা তা ২০ থেকে ৬০ টাকায় কেনেন।

কুতুবপুর হাটের ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন জানান, প্রতিবার হাটে এখান থেকে ১৫-২০ ট্রাক কাঁঠাল দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়। প্রতি হাটে প্রায় ১৫ লাখ টাকার কাঁঠাল কেনাবেচা হয়।

নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা পাইকার আব্দুল জলিল বলেন, ‘আমি প্রতি সপ্তাহে এক ট্রাক কাঁঠাল (প্রায় ২ হাজার পিস) কিনে ঢাকায় নেই। সারা সপ্তাহ বিক্রি করি, কিছু লাভ থাকে (মুচকি হাসি)।’

তবে কৃষক ও খুচরা ব্যবসায়ীরা কাঁঠালের দাম নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের দাবি, গাছ থেকে কাঁঠাল সংগ্রহ, পরিবহন ও বাজারজাত করতে যে খরচ হয়, তার তুলনায় বিক্রিতে লাভ খুবই সামান্য, ফলে অনেকেই আগ্রহ হারাচ্ছেন।

এ বিষয়ে সখীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিয়ন্তা বর্মন বলেন, “কাঁঠাল আমাদের জাতীয় ফল। এর প্রতিটি অংশই ব্যবহারযোগ্য, এমনকি খোসাও গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। 

সখীপুরে বাণিজ্যিকভাবে কাঁঠাল চাষ করে কৃষকরা ভালো লাভবান হতে পারেন। আমরা সেভাবে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করছি।”